তেমন জায়গাজমি আমার নেই, সামথিং। সামথিং মানে পাঁচ-সাত কাঠা, তাতে ধান চাষ হয়। আমন লাগিয়েছিলাম, হয়েছে মোটামুটি। আমি লাগাই, আমার স্ত্রীও লাগালাগি করে। চৈত্রের ৩ তারিখ (১৭ মার্চ) বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। দোল পূর্ণিমার পর। তারপরেই তো লকডাউন হয়েছে। সাত-আট মাস ওখানেই থেকে গেলাম। রোজগার বন্ধ। এই দশদিন হল এসেছি। মোটামুটি কিছু রোজগার হচ্ছে।
বইখাতা বাঁধাইয়ের কাজেই দক্ষতার দাম বাঁধেন পরমেশদা
স্কুলের শিক্ষকের কাছে প্রথম অনুপ্রেরণা পান বই বাঁধাইয়ের কাজে। কখনও মামা বা অন্য কারোর দেখে। আবার কখনও বাঁধানো বই দেখেই কাজ শেখা শুরু। তারপর থেকে চলছে পুরনো সখের বই, অফিসের মোটা মোটা দরকারি খাতা বাঁধাইয়ের কাজ। শুরুতে একটু অসুবিধা হত।বাঁধাইয়ের সব প্যাঁচ-পয়জার তো জানতাম না। তখন প্রয়োজন পড়লো একজন গুরুর। যার কাছে কাজটা শেখা যায়। একজন বললো ‘দেখো বাপু শেখাতে টেখাতে পারবো না। তুমি ফুলিয়া পলিটেকনিকে ভর্তি হয়ে যাও।
ভয় হয়, সাইকেলটা পারবে তো ফুলের ভার বইতে
খুব ভোর ভোর উঠে রান্না, খাওয়া সেরে বেরিয়ে পড়েন। কাজের ফাঁকে জল আর খুব খিদে পেলে বিস্কুট খেয়ে নেন। ভাত রুটি জাতীয় এঁটো খাবার খেতে দেখলে ক্রেতারা আর ফুল নাও কিনতে পারেন। ফুল তো দেবতার পুজোয় লাগে।
খদ্দেরের কাছে হাঁটু মুড়ে বসা তাঁতশিল্পীর ‘চায়ে পে চর্চা’
খানিক চুপ করে থাকার পর রথিন দা বলে, প্রথম প্রথম কেঁদে ফেলেছিলাম। বিক্রি হয়নি, বাড়িতে এসে চা ফেলে দিতে হয়েছে। সে সময় অনেকে সাহস দিয়েছে হাটের কয়েকজন বলেছেন, লেগে থাকো ঠিক হবে। কয়েক দিন আগেই আমার আর বৌ এর শরীর খারাপ করেছিলো। প্রায় এক হাজার টাকা ওষুধ কিনতে চলে গেছে। শুধু এটুকু চাই ভগবান যেন সুস্থ রাখেন। ইদানিং হাঁটুর একটা সমস্যা হচ্ছে। আসলে হাঁটু মুড়ে বসে চা দিতে হয়।চোদ্দ বার উপর নীচ করতে হয় হাটের একতলা থেকে তিন তলা। অল্প বয়সে খেলতে গিয়ে হাঁটতে চোটও পেয়েছিলাম।
লকডাউন মানে কি বাড়তি ছুটির দিন?
দেখি অনেককে ধরেছে। যারা মর্নিং ওয়াক করে, জগিং করছিল, তাদেরও ধরে নিয়ে এসেছে। কেউ গরু-মোষের ওষুধ কিনতে গেছে, ধরে নিয়ে এসেছে। এরপর বরকে ছেড়ে দিল।
আমি বলব, লকডাউনের দিনে বেরোনো ঠিক না। কিন্তু টাকাটা নিচ্ছে কেন? মারারও আইন নেই, অথচ লোককে রাস্তায় মারছে।
- « Previous Page
- 1
- 2
- 3
- 4
- …
- 16
- Next Page »
সাম্প্রতিক মন্তব্য