এখন তার জায়গা নিয়ে অমিতাভ বচ্চনের ভারী গলায় হিন্দিতে করোনার সতর্কবাণী। “যবতক দাবাই নেহি, তবতক ঢিলাই নেহি” পাল্টে এখন যেটা বোঝাতে চাওয়া হচ্ছে — ভ্যাকসিন এসে গেছে, তবু মুখোশ পরে থাকতে হবে। দেখলাম, নিত্যযাত্রীরা বিরক্ত এই ঘোষণায়। অনেক নিত্যযাত্রীই সকালের ট্রেনে উঠে একটু ঘুমিয়ে নেয়। মিঠে গান হলে তাদের ঘুম তোফা হয়। কিন্তু মাঝে মাঝে অমিতাভ বচ্চনের গলার আওয়াজ তাদের পক্ষে বেশ বিরক্তিকর। কেউ কেউ বলছে — বচ্চনের পরিবারের সবাই তো করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তাহলে ও এত বড় বড় কথা বলছে কেন?
জাতীয় পতাকা নামিয়ে দিয়েছে লালকেল্লা থেকে, আপনি দেখেছেন?
জাতীয় পতাকা নামিয়ে একটা গেরুয়া না কী রঙের পতাকা তুলে দিল লালকেল্লায়। কী চলছে এসব? দিল্লি পুলিশ কি লালকেল্লাকে প্রটেক্ট করতে পারছে না। এরপর তো এখানে পাকিস্তানের পতাকা লাগিয়ে দেবে!’
বুঝলাম, আমার বা আমাদের উদ্দেশ্যেই এই কথাগুলো। কাছে এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘জাতীয় পতাকা নামিয়ে দিয়েছে লালকেল্লা থেকে, আপনি দেখেছেন?’
— ‘হ্যাঁ স্টার আনন্দ-এ দেখেছি। সব চ্যানেলেই দেখাচ্ছে।’
— ‘তাই নাকি? আমি তো সবে এনডি টিভি লাইভ দেখে এলাম। লালকেল্লার মাথায় তো জাতীয় পতাকা উড়ছে দেখলাম। হ্যাঁ সামনের দিকে একটা পোস্টে কৃষক আন্দোলনের একটা পতাকা উঠিয়েছে বটে। কিন্তু জাতীয় পতাকা নামিয়ে দিয়েছে, এমন তো দেখলাম না।’
কথা আর বেশি এগোলো না। তবে দুজনে মোবাইল নাম্বার দেওয়া-নেওয়া করলাম। ঠিক হল, আবার দুজনেই ভালো করে টিভিতে দেখে মোবাইলে কথা বলব।
পথচলতি জটলা থেকে প্ল্যাটফর্মের সভা – সব পথ মিলে যাচ্ছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে- দিল্লির কৃষক জমায়েতে
হঠাৎই কানে গেল, জমায়েতের বাইরে দাঁড়িয়ে কেউ কিছু বলছেন। আমি বললাম, বাইরে না, জমায়েতেই আপনি আপনার কথা বলুন। অনুরোধ জানালাম। নিজের কথা শুরু করলেন শেখ ওসমান : আমার দর্জিভাইদের বলি। আমরা যে কাপড় সেলাই করি, বলো তো সেই কাপড় কী দিয়ে তৈরি হয়? জমায়েত থেকে উত্তর এল — ‘সুতো’। — সুতো কোত্থেকে আসে? — ‘তুলো থেকে’। — আর এই তুলো আসে আমাদের চাষিভাইদের কাছ থেকে। তাদের পেটে লাথি পড়েছে। আমরা কি চুপ করে থাকব?
কর্পোরেট চাকরি ছেড়ে এক অন্য জীবনের খোঁজে সংকেথ
ওরা একটা বিড়ালের বাচ্চার প্রাণ বাঁচিয়েছিল। তিন মাস ওরা বাচ্চাটাকে সঙ্গে রেখেছিল। তারপর আমার এক বন্ধুর বাড়িতে ওকে রাখতে আসে। সেখানে আমি ছিলাম। আমি সেই বিড়াল বাচ্চাটাকে ওদের কাছ থেকে নিই। ওখানেই ওদের সঙ্গে সহনশীল উন্নয়ন আর সহনশীল জীবনধারা নিয়ে আমার আগ্রহ সম্বন্ধে কথা হল। ওরাই বলল, কালিম্পঙের আশপাশে এরকম বেশ কিছু কাজ হচ্ছে, তুমি দেখতে পারো। আমি চলে এলাম।
বাংলার সাধারণ গ্রামীণ মানুষ এখনও জানেন না নয়া কৃষি বিল-এর ক্ষতিকর দিকগুলি কী কী
নেপালগঞ্জের সাপ্তাহিক হাটে এক ভ্যানচালক আমাদের কাছ থেকে একটি প্ল্যাকার্ড সংগ্রহ করে তার ভ্যানে টাঙিয়ে নিলেন। একজন সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করা এবং কয়েক বিঘে ধানজমির মালিক-চাষি উত্তম বৈরাগী সাইকেলে আমাদের কাছে এগিয়ে এসে একটি পোস্টার নিয়ে নিলেন, গলায় ঝুলিয়ে নিলেন। তিনি বললেন, এই আইন সম্পর্কে গ্রামের চাষিরা ওয়াকিবহাল নয়, কিন্তু উনি শুনেছেন, এবং বিপদটা বুঝেছেন। উনি এমনও বললেন, কলকাতায় যখন মিছিল হবে, উনি দলবল নিয়ে আসতে পারেন। নেপালগঞ্জ হাট-এ থিকথিকে ভিড়, তার মধ্যে দিয়ে যাবার সময় একজন আমার সাইকেলের সামনে ছোট্ট প্ল্যাকার্ডে “চাষি বনাম …” লেখা দেখে বলল, “চাষি বনাম কর্পোরেট”, বোড়াল ছাড়িয়ে একজন দেখে বলল, “চাষি বনাম ডট কম?”।
- 1
- 2
- 3
- …
- 16
- Next Page »
সাম্প্রতিক মন্তব্য