• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

ভয় আর লোভের সাঁড়াশির মাঝে দাঁড়িয়ে নিয়ামগিরির ডোঙরিয়ারা

April 4, 2016 Amrita Mukherjee Leave a Comment

http://freemediaperson.com এর ১৯ মার্চের রিপোর্ট। ভাষান্তর ও তথ্য সংযোজন অমৃতা মুখার্জি ও শমীক সরকার।#

বহিরাগতদের সন্দেহের চোখে দেখে ডোঙরিয়া যুবকরা। ছবি ফ্রিমিডিয়াপারসন ওয়েবসাইট থেকে।
বহিরাগতদের সন্দেহের চোখে দেখে ডোঙরিয়া যুবকরা। ছবি ফ্রিমিডিয়াপারসন ওয়েবসাইট থেকে।

আজ আমি দেখেছি নিয়ামগিরি
তাই ধন্য এ মোর নয়নদুটি
কী সুন্দর সে পর্বতমালা
তার সুরেলা পাখির ডাক
তার হরিণ, সারং, ভালুক
তাদের কত যুগের বাস।
— ডোঙরিয়া জনজাতির গান

নিয়মগিরি পাহাড় উড়িষ্যার দক্ষিণ পশ্চিম অংশে রায়গড়া আর কালাহান্ডি জেলায় অবস্থিত। প্রাকৃতিক বৈচিত্র সম্পন্ন এই অঞ্চলটিতে ‘ডোঙরিয়া কন্ডা’ নামক আদিবাসীদের বাস। জঙ্গলই তাদের নিবাসস্থল। এবং প্রকৃতির সাথে একাত্ম হয়ে তারা জঙ্গলের সমস্ত নিয়ম মেনে সেখানেই পশুপাখিদের সঙ্গে সহাবস্থান করছে। ২০০১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, তাদের সংখ্যা ৮০০০ এর মতো।

এই নিয়ামগিরিতে প্রায় শ’ খানেক জলধারা আছে, যার মধ্যে পঁচিশটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো বৃষ্টির জলে পুষ্ট। পনেরো রকমের প্রায় বিলুপ্তপ্রায় ওষধি গাছ রয়েছে এখানে। জীববৈচিত্র্য ও প্রাণীবৈচিত্র্যর জন্য এই অঞ্চলটিকে ইকো-সেনসিটিভ রিজিয়ন বলা হয়েছে (এনভায়রনমেন্ট প্রটেকশন অ্যাক্ট, ১৯৮৬ এবং এনভায়রনমেন্ট প্রটেকশন রুলস, ফরেস্ট প্রটেকশন অ্যাক্ট, ১৯৮০, ওয়াল্ড লাইফ প্রোটেকশন অ্যাক্ট, ১৯৭২ অনুযায়ী)।

ওড়িশার নবীন পটনায়ক সরকার এবং লন্ডনের শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত মাইনিং কোম্পানি বেদান্ত-র বিরুদ্ধে, বুলেট আর ব্যাটন সামলে দাঁড়িয়ে আছে ৮০০০ ডোঙরিয়া পুরুষ নারী আর শিশু।

২০০৬ সালে কর্পোরেট বেদান্ত গ্রুপ উড়িষ্যায় একটি অ্যালুমিনা সংশোধনাগার তৈরি করে, যার মূল উদ্দেশ্য নিয়ামগিরি পাহাড়ের বক্সাইটকে কেটে বার করা। উড়িষ্যা সরকার বেদান্ত গ্রুপের আর্জি মেনে নিয়ে ডোঙরিয়াদের পাহাড় খালি করার নির্দেশ দিয়েছিল। প্রকৃতির সন্তান ডোঙরিয়া-রা প্রতিবাদ করেছিল। ‘নিয়মগিরি’ দেবতার বিনাশ তারা সহ্য করতে পারবে না। আর তারা নিজেদের জমিও হস্তান্তরের বিরুদ্ধে। চলল তাদের সত্যাগ্রহ আন্দোলন। একদিকে বেদান্ত গ্রুপ তাদের টাকার লোভ দেখাল, অন্যদিকে উড়িষ্যা সরকার তাদের মাওবাদী তকমা দিয়ে বিনাশ করতে উদ্যত হলো।

কিন্তু ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে ‘ডোঙরিয়া’রা এই যুদ্ধ জয়লাভ করে। ডোঙরিয়াদের ১২টি গ্রামের গ্রামসভায় বিপুলভাবে জয়লাভ করে বক্সাইট খননের বিরুদ্ধে জনমত। ২০১৪ সালে কেন্দ্রীয় সরকার বেদান্তর লিজ বাতিল করে। শান্তিপূর্ণ ডোঙরিয়ারা খুশি হয়। তাদের জীবন চলতে থাকে জঙ্গলে, খান ছত্রিশেক সারাবছর-জল-থাকা ঝর্ণার পাশে। ঐ ঝর্ণাগুলো থেকেই তো পশ্চিম উড়িষ্যার দুটি মুখ্য নদী পুষ্ট হচ্ছে — বংশধারা এবং নাগাবলী।

এক ডোঙরিয়া বসতি। ছবি ফ্রিমিডিয়াপারসন ওয়েবসাইট থেকে।
এক ডোঙরিয়া বসতি। ছবি ফ্রিমিডিয়াপারসন ওয়েবসাইট থেকে।

পটনায়ক সরকার পশ্চিম উড়িষ্যার প্রচুর আদিবাসীকে মেরে দিয়েছে, আরো বেশ কিছুকে জেলে ঢুকিয়েছে গত কয়েক মাসে, বাম জঙ্গী দমনের নামে। অন্যদিকে বেদান্ত গ্রুপ এগিয়ে এসেছে টাকার থলি নিয়ে, ডোঙরিয়াদের তরুণতর প্রজন্মকে জিতে নিতে। ফেব্রুয়ারি মাসে উড়িষ্যা সরকার সুপ্রিম কোর্টে একটি আর্জি জানিয়ে বলে, ফের একবার গণভোট হোক ঐসব গ্রামে, কারণ পুরনো জমানার অনেকে মারা গেছে, গ্রামসভায় ঢুকেছে অনেক কমবয়সীরা। এই দাবি যাচাই করতে ফ্রিমিডিয়াপারসন ডট কম এর একটি প্রতিনিধিদল নিয়ামগিরির তিনটি গ্রাম, পালবেরি, কুনা কাধু এবং কেন্দুবার্দি যায় মার্চ মাসের মাঝামাঝি।

নিয়মগিরি সুরক্ষা সমিতি-র আহ্বায়ক কুন্তি মাঝি জানালেন, ‘নিয়ামগিরির ১২০ টা গ্রামের মধ্যে এই ১২টা গ্রামকে তো নির্বাচন করেছিল নবীন পট্টনায়ক সরকার-ই। কালাহান্ডি আর রায়গর-এর জেলা বিচারকদের উপস্থিতিতে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছিল বেদান্তকে প্রত্যাখ্যান করার। … এরই মধ্যে সরকার এবং বেদান্ত ভয় দেখাচ্ছে, ক্রিমিনাল কেস দিচ্ছে, ঘুষ দিচ্ছে, লোভ দেখাচ্ছে, এমনকি মাওবাদী বলে ভুয়ো সংঘর্ষে মেরেও দিচ্ছে।’

উড়িষ্যা এবং ছত্তিশগড় সরকারের না-বলা বার্তাটি হলো — ‘আত্মসমর্পন করো, অথবা মরো’। আধিকারিকরা দাবি করছে, শয়ে শয়ে মাওবাদীদের কাছের লোক আত্মসমর্পন করছে। এরা কেউ মাওবাদীদের কাছের লোক নয়, বরং এরা মাইনিং প্রকল্পের বিরোধী, কারণ মাইনিং হলে তাদের ভিটে মাটি চাটি হবে। এরাই সারাক্ষণ পুলিশের ভয়ে থাকছে।

প্রশাসন সেই পুরনো বচনটা একেবারে অক্ষরে অক্ষরে পালন করছে, ‘কুকুরটাকে মারার আগে একটু বদনাম দিয়ে নাও, তারপর মারো।’ পুলিশের চোখে জল-জঙ্গল-জমির অধিকারের লড়াইয়ে থাকা আদিবাসী মানেই মাওবাদী।

দীর্ঘদিনের গান্ধীবাদী সমাজকর্মীদের মাওবাদী বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ভুবনেশ্বরের এক উঁচুতলার পুলিশ অফিসার, গোয়েন্দা, সে বলেছে, কালাহান্ডির নিয়ামগিরি সুরক্ষা সমিতি মাওবাদী। কোরাপুট-রায়গড়া জেলা ভিত্তিক চাষী মুলিয়া আদিবাসী সঙ্ঘ, সেটাও মাওবাদী। এ দুটোই নাকি মাওবাদীদের গণসংগঠন।

পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীন কালাহান্ডির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ নায়ক বলেন, উড়িষ্যার মানুষ বোলাঙ্গিরের গন্ধমার্দন জেলার বক্সাইট মাইনিং বন্ধ করে দিয়েছে। বালেশ্বরের বালিয়াপালের ন্যাশনাল মিশাইল টেস্টিং রেঞ্জ বাতিল করে দিয়েছে। পস্কোর স্টিল প্ল্যান্ট আটকে দিয়েছে। কারণ এই আন্দোলনগুলো ছিল শান্তিপূর্ণ। যদি এগুলো হিংসাত্মক হতো, তাহলে সরকার যে কোনো সময় আরো বেশি হিংসা ঘটিয়ে এগুলোকে ধ্বংস করে দিত।’

২৭ ফেব্রুয়ারি নিয়ামগিরিতে বার্ষিক তিনদিনের উৎসব চলাকালীন বিশ বাইশ বছর বয়সী মান্ডা কাদ্রাকা-কে হত্যা করে পুলিশ। পুলিশের দাবি ছিল, সেটা মাওবাদী বিরোধী অপারেশন ছিল, যার জেরে মারা গেছে কাদ্রাকা। পুলিশের এই দাবি স্থানীয় মানুষকে আরো রাগিয়ে দিয়েছে।

ডোঙরিয়াদের যুব সম্প্রদায় বাইরে থেকে এই এলাকায় কেউ এলেয় সন্দেহের চোখে তাকায়, — ‘তামা ক্যামেরা কু হানি পাকেইবু’ (এই কুড়ুল দিয়ে তোমার ক্যামেরা গুঁড়িয়ে দেবো), এই মিডিয়া টিমটাকে দেখেই এক ডোঙরিয়া যুবক চিৎকার করে উঠেছিল। কুমতি মাঝি দ্রুত হস্তক্ষেপ করে বাঁচায়।

পুলিশ যখন মিথ্যে অপরাধে অভিযুক্ত করার ভয় দেখাচ্ছে, তখন কর্পোরেট বেদান্ত টাকা পয়সা ছড়িয়ে কিছু ডোঙরিয়া যুবককে কাজে লাগিয়েছে। এদের ডোঙরিয়া সমাজ ঘৃণার চোখে দেখে।

‘কিছু দালাল আছে যারা আমাদের ডোঙরিয়া ছেলে/মেয়েদের কাউকে কাউকে লোভ দেখাচ্ছে বেদান্তর পক্ষে সাফাই গাইবার জন্য। কিছু ডোঙরিয়া মেয়েকে দেহব্যবসার লোভও দেখানো হচ্ছে।’ — রাগতস্বরে জানালো পালবাড়ি গ্রামের জিলু মাঝি।

ভয় দেখানো আর লোভ দেখানো — ডোঙরিয়াদের ঐক্য ভাঙার দুই তরিকা। কিন্তু এর থেকেও ভয়ঙ্কর প্রশাসনের তরফে তাদের নাগরিকত্বকেই না স্বীকার করা। নিয়ামগিরির আদিবাসীদের এক বড়ো অংশ জানালো, তাদের প্রশাসন থেকে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, বিপিএল কার্ড দিচ্ছে না। অফিসিয়াল রেকর্ডে তাদের অস্তিত্বই নেই।

ডোঙরিয়াদের নবীন প্রজন্মের জিলু আর বারি মাঝি অবশ্য জোর গলায় বললেন, ‘রক্ত ঝরাবো, তবু আমাদের বন ছাড়বো না। যদি সুপ্রিম কোর্টও সরকারের পক্ষে সায় দেয়, তবুও আমরা জঙ্গল ছেড়ে যাব না।’

আপডেট : সুপ্রিম কোর্ট আপাতত উড়িষ্যা সরকারের নতুন করে গ্রামসভার মতামত নেওয়ার প্রস্তাবটিতে সায় দেয়নি, তবে বেদান্তর মাইনিং বন্ধ করার গ্রামসভার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত (২০১৩) বিষয়ে যে নতুন করে আপিল করা যেতে পারে, সে পথও বন্ধ করেনি।

পরিবেশ উড়িষ্যা, খনি, গ্রামসভা, ছত্তিশগড়, ডোঙরিয়া, নিয়ামগিরি, বক্সাইট, বেদান্ত, মাইনিং

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in