২০১৪ সালে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট একটি রায়ে সে দেশের সংবিধানের ধর্মাচরণের স্বাধীনতার ধারাটির নয়া ব্যাখ্যা দিয়েছিল। ওই বিখ্যাত রায়ের সূত্র ধরেই পাকিস্তানে আলোচনা শুরু হয়েছে — স্কুল পাঠ্যে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা এবং ঘৃণা সৃষ্টিকারী বিষয়গুলি অবিলম্বে বাদ দেওয়া হোক। আলোচনায় উঠে এসেছে, দ্বিজাতি তত্ত্বের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে এই ঘৃণার শেকড়। যা বিস্তার লাভ করেছে প্রাক্তন রাষ্ট্রপ্রধান জিয়া-র আমলের শিক্ষা নীতির মাধ্যমে। বর্তমানে মিডিয়া কীভাবে এই ঘৃণার প্রসার ঘটাচ্ছে, সে আলোচনাও হচ্ছে। আলোচকরা বলছেন, অমুসলিম যা কিছু, তা-ই নিচু মানের এবং ঘৃণ্য — এই ধরণের বিভেদকামী মত নির্মাণের কারখানা হয়ে দাঁড়িয়েছে পাকিস্তানের অনেক স্কুল। পাকিস্তানে ক্রমবর্ধমান ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের একটি অন্যতম কারণ এটি, মনে করছেন তারা।
আমাদের দেশও পিছিয়ে নেই। বহুদিন ধরেই আরএসএস পরিচালিত স্কুলগুলিতে অহিন্দু সমস্ত কিছুকে খারাপ, নিচু হিসেবে দেখানো, এক ধরনের ধর্মীয় ঘৃণা নির্মাণের চেষ্টা চলছিল। পরে বিজেপি পরিচালিত রাজ্যগুলির কয়েকটিতে সরকারি শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যেই এসব ঢোকানো হয়েছে। এখন কেন্দ্রীয় ভাবেই এই প্রয়াস শুরু হয়েছে।
ধর্মীয় ঘৃণা ও অসহিষ্ণুতা নির্মাণে ব্রতী হওয়া এই দুই দেশের শিক্ষাব্যবস্থার সমালোচনা হচ্ছে যথার্থভাবেই। কিন্তু শুরু থেকেই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় পশ্চিমী প্রথা পদ্ধতি অনুসরণ, পশ্চিমী জ্ঞান অনুসরণ — এবং তার কল্যাণে দেশীয় ধান থেকে দেশের নুন, দেশের মানুষ থেকে দেশি মন — সব কিছুর প্রতি ঘৃণা সঞ্চার চলেছে। চলছে দশকের পর দশক ধরে। তার সমালোচনা হবে না?
Leave a Reply