রামজীবন ভৌমিক ও শঙ্খজিৎ দাস, ২৮ ডিসেম্বর#
রাণী কিসকুর ৫০ বছর বয়স হবে। ছেলে নাতি মেয়ে সহ সবাইকে নিয়ে কোচবিহারের চেংমারি শরণার্থী শিবিরে আছে। বুধবার থেকে শিবিরে আছে, বৃহস্পতিবার গ্রামে গিয়ে কিছু কাপড় কাঁথা এনেছেন। শিবিরে কিছু কম্বল পেয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছেন। তাঁর কথা,
— ‘বোড়ো জাতির উৎপাতে আমরা এখানে চলে আসছি। সকালে মোর বাড়ি বাইক দিয়া বোড়ো জাতি ছেলে আইসছি। বলছে ও মামি তুমি সরো সরো। ওই যে জুই (আগুন) জ্বলতাছে। কোন কাপড় কাঁথা ধরি পাই নাই। তাতে পালাইছি। একটা বাসুন একটা থাল নাই। পালাইছি। ১নং শিমলাবারি জুই লাগতাছে। আমি ২নং শিমলাবাড়ি থাকি। মাঝেতে সংকোশ নদী। যে কাপড় পিন্দাইছি তাতেই আইছি। ১নং শিমলাবাড়ি আমার আত্মীয় মারা গেছে। খবর পাইছি। এখানে কারোর আত্মীয় মারা যায় নাই। বড়ো ছেলে বন্দুক দিয়া গুলি করছে। কিন্তু লাব নাই। এখান থেকে বাড়ি যাব ঠিক নাই। বাড়ির ডাবড়িতে (গোয়ালে) ১২টা ছাগল বান্ধা আছে। কোন খোঁজ খবর নাই। একটা ডুলিতে পন্দেরো মণ ধান আছে। সাফা (ঝাড়া) হয় নাই। বাড়ির ভিতর সাফা ধান আছে। দুই গারই তিল জমা আছে। সাফা করতে হবে। জংলি পাট আছে ৮-৯ মণ। আমার ছেলেগুলা খোঁজ খবর নিতে ফরেস্ট পর্যন্ত যায়। তো গুলি মারছে। লাগে নাই। আমি বলই যাইস না। এলা পর্যন্ত ওখানে কেউ যাইতে পারছে না। পুলিশ দেয়নি। পুলিশ ক্যাম্প না দেওয়া পর্যন্ত আমি যাইতে পারবে না। ৯৬ গরমে (দাঙ্গায়) আমার পারায় জানারাম টুডুর দাদু মারা গেছে।’
Leave a Reply