মতিলাল দেবনাথ, আদি সপ্তগ্রাম, ২৬ ফেব্রুয়ারি#
হুগলি জেলা ইতিহাস অনুশীলন কেন্দ্রের বিংশতিতম সাধারণ সভা উপলক্ষ্যে আয়োজিত দুদিন ব্যাপী আলোচনাসভা ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ২৪ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি, হুগলি জেলার আদি সপ্তগ্রামে একাডেমি অব টেকনোলজি ভবনে। ২৪ ফেব্রুয়ারি বেলা বারোটায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে আলোচনা সভা শুরু হয়। এদিনের আলোচনার বিষয় ছিল আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চা প্রসঙ্গ। এ বিষয়ে প্রধান বক্তা বিশিষ্ট অধ্যাপক ড. রামকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় অত্যন্ত সুললিত ভাষায় আলোচ্য বিষয়ের ওপর বিস্তারিতভাবে তাঁর মূল্যবান বক্তব্য পেশ করেন। পরে বিকেল পাঁচটায় শুরু হয় উপস্থিত দর্শক শ্রোতা ও অনুষ্ঠান আয়োজকদের মধ্যে মতবিনিময়।
২৫ ফেব্রুয়ারি বেলা বারোটা থেকে আড়াইটে পর্যন্ত চলে সাধারণ আলোচনা। এদিনের আলোচনায় সংগঠনের বর্তমান সম্পাদিকা সুলেখা মুখার্জি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত বামপন্থী ব্যক্তিত্ব বিজয়কৃষ্ণ মোদক এবং প্রয়াত সমাজসেবী শিক্ষক সুধীর মুখার্জির ঐকান্তিক চেষ্টায় ও অধ্যবসায়ের ফলে এই প্রতিষ্ঠানটির সূচনা হয়ে ধীরে ধীরে কীভাবে বড়ো হয়ে ওঠে তার স্মৃতিচারণ করেন। তাঁর বক্তব্যে ইতিহাস অনুশীলনের বিষয়ে বর্তমান তরুণ প্রজন্মের প্রত্যাশিত সংখ্যায় এগিয়ে না আসার কারণে কিছুটা হতাশার সুর শোনা যায়।
তারপর এদিনের অনুষ্ঠানের সভাপতি শ্রী গোপাল সাধুখাঁ তাঁর ভাষণে তাঁর নিজ গ্রামে একটি পুষ্করিনী খোঁড়ার সময় প্রাপ্ত একটি প্রত্নসামগ্রী আবিষ্কারের সূত্রে ইতিহাস বিষয়ে কীভাবে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পরেন, তার বিবরণ দেন। সম্পাদিকার হতাশার বিপরীতে অল্পসংখ্যক চেতনাসম্পন্ন মানুষ দিয়েও যে কোনো মহৎ কাজে সাফল্য সম্ভব, সে বিষয়ে ইতিবাচক বক্তব্য রাখেন। সভার শেষ বক্তা সুভাশিস দাস এদিনের আলোচ্য বিষয়ে সার্ধশতবর্ষে বিবেকানন্দ বিষয়ে রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দের ভাবধারায় ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতায় ভারতীয় বৈশিষ্ট্যের নানা দৃষ্টিকোণ থেকে মনোজ্ঞ বক্তব্য রাখেন।
দু-দিনের প্রদর্শনীতে হুগলি জেলার নানা পুরাতাত্ত্বিক বস্তু, স্থান ও ভবনের সুদৃশ্য ছবি এবং জেলার বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষ করে লুপ্তপ্রায় সরস্বতী নদীর অববাহিকায় মাটির নিচ থেকে প্রাপ্ত বহু প্রত্নতাত্ত্বিক ও চিত্তাকর্ষক বিস্ময়কর নিদর্শন প্রদর্শিত হয়। প্রদর্শনীতে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত ইতিহাস বিষয়ের প্রতিবেদনের বেশ কিছু সংখ্যা উপস্থিত পড়ে দেখার উদ্দেশ্যে রক্ষিত ছিল।
Leave a Reply