২৮ জুন হরিয়ানার ফতেহাবাদ জেলার গোরখপুর গ্রামে প্রস্তাবিত পরমাণু চুল্লির জন্য জমি পরিদর্শনে এসে চাষিদের বাধায় ফিরে গেল পরমাণু কর্তা এবং জনা দশেক ঠিকাদার। মোট ১৩১৩ একর জমি এই পরমাণু কেন্দ্রের জন্য অধিগৃহীত হওয়ার কথা। পরিদর্শক দল কাজ শুরু করার সময়ই শয়ে শয়ে চাষি এবং তাদের পরিবারের মহিলারা এসে জমি পরিদর্শনে বাধা দেয়। এই বাধা দেওয়ার সময় তারা দুর্ব্যবহার করেছে বলেও অভিযোগ।
পরে ওই পরমাণু কর্তারা পঞ্চাশ জন চাষির বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের অক্টোবর মাসে প্রকল্পটি ভারতের পরমাণু কর্পোরেশনের মৌখিক ছাড়পত্র পায়। এই প্রকল্পে প্রতিটি ৭০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন চারটি ‘দেশি’ পরমাণু চুল্লি বসার কথা। ২০১০ সালের ২৯ জুলাই জমি অধিগ্রহণের নোটিশ (এল এ ৪) জারি হয়। গোরখপুর গ্রাম থেকে ১৩১৩ একর, বাদোপাল গ্রাম থেকে ১৮৫ একর, এবং কাজল হেরি গ্রাম থেকে ৩-৫ একর জমি অধিগৃহীত হবার কথা। এর বাইরে ১.৬ কিমি ব্যাসার্ধের জমি পরিত্যাজ্য এলাকা বা এক্সক্লুসন জোন হিসেবে চিহ্নিত। অধিগৃহীত না হওয়া সত্ত্বেও সেখানে স্থানীয় মানুষের কোনো অধিকার থাকবে না। এর পাশাপাশি আরও বেশ কিছু অঞ্চলে মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর এই চুল্লির কুপ্রভাব পড়বে।
প্রাথমিকভাবে এই চুল্লি সম্পর্কে স্থানীয় চাষিদের আপত্তি ছিল না। কিন্তু আস্তে আস্তে পরমাণু চুল্লির কুফল সম্পর্কে সচেতন হয়ে চাষিরা পরমাণু চুল্লির বিরোধিতা শুরু করে। ১৭ আগস্ট থেকে ফতেহাবাদ শহরে কিষান সংঘর্ষ সমিতি এই পরমাণু চুল্লির বিরোধিতা করে অবস্থান শুরু করে। আশেপাশের গ্রামের চাষিরা, যাদের জমি অধিগৃহীত হয়নি, তারাও পরমাণু চুল্লি বিরোধিতায় যোগ দেয়। হরিয়ানার সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দলও প্রকল্পের বিরোধীতা শুরু করে। হরিয়ানা সরকার জমির ক্ষতিপূরণের মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়া সত্ত্বেও চাষিরা জমি দিতে রাজি হয়নি।
দিল্লি শহর থেকে মাত্র ১৫০ কিমি সরলরৈখিক দূরত্বে প্রস্তাবিত এই প্রকল্পের বিরোধিতায় দিল্লিতেও একটি মিছিল হয়েছিল গত বছর।
শমীক সরকার, ২৯ জুন, তথ্যসূত্র ডায়ানিউক ডট অর্গ
Leave a Reply