রামজীবন ভৌমিক, কোচবিহার, ৮ মার্চ#
৮ মার্চ শনিবার বিকেল চারটেয় কোচবিহার আচার্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীল কলেজ সেমিনার হলে ‘উত্তর প্রসঙ্গ’ পত্রিকার আয়োজনে সার্ধশতবর্ষের আলোকে ‘আচার্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীল’ আলোচনা চক্র অনুষ্ঠিত হল। স্বাগত ভাষণ দেন উত্তর প্রসঙ্গ পত্রিকার সম্পাদক দেবব্রত চাকী। তিনি আক্ষেপ করেন — আচার্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীল জন্ম সার্ধশতবর্ষ উদযাপনে বাংলার বিদ্বজনদের আগ্রহ চোখে পড়ল না। এদিক ওদিক এক-দুটো প্রবন্ধ বের হলেও সেখানে শ্রী শীলের ১৭ বছরের ভিক্টোরিয়া কলেজ-এর জীবনের উল্লেখ নেই। সেটা কি ভিক্টোরিয়া কলেজ কোচবিহারের মফস্বল কলেজ বলে?
বিভিন্ন বক্তাদের মধ্যে অধ্যাপক ড. অনল সরকার জানান, আচার্য্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীল ভিক্টোরিয়া কলেজের প্রথম ভারতীয় অধ্যক্ষ ছিলেন। তিনি ৩৩-৫০ বছর বয়স অবধি, অর্থাৎ জীবনের সব থেকে কর্মোদ্যম সময় কোচবিহারে কাটান। ভিক্টোরিয়া কলেজকে কেন্দ্র করে কোচবিহার রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার গণতান্ত্রিক কাঠামোর জন্ম দেন। কিছু দিনের মধ্যেই ভিক্টোরিয়া কলেজ উত্তর-পূর্ব ভারতের ছাত্র সমাজের তীর্থস্থান হিসেবে পরিগণিত হয়। অধ্যাপক গৌরাঙ্গ বিশ্বাস বলেন, ভারতীয় দর্শনকে শ্রী শীল বিশ্বের দরবারে শ্রদ্ধেয় করে তোলেন।
অধ্যাপক উষাকান্ত দত্ত দুঃখ করে বলেন, আচার্য ব্রজেন্দ্র নাথ শীল যত আলোচনা করে গেছেন, তত লিখে যাননি। আজকের প্রজন্ম শ্রী শীলের মেধা, জ্ঞানের ফসল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যতটা লেখা আছে, ইংরেজিতে আছে, সে সব বাংলায় অনুবাদের প্রস্তাব দেন ‘উত্তর প্রসঙ্গ’ গোষ্ঠীকে। বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ আনন্দ গোপাল ঘোষের মতে, স্বামী বিবেকানন্দ বেলুড় মঠের জন্য, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনের জন্য নিজেদের অমর করতে পেরেছেন। সাথে তাঁদের রচনাবলীও আছে। কিন্তু আচার্য ব্রজেন্দ্র নাথ শীল এসব ব্যাপারে মনোযোগী ছিলেন না। তাই আধুনিক প্রজন্ম আচার্যকে ভুলতে বসেছে।
Leave a Reply