২৬ সেপ্টেম্বর, জিতেন নন্দী#
সন্তোষপুর স্টেশনের ২নং প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে আছি। মাঝে রেললাইন। দূরে রেল ক্রসিংয়ের দিক থেকে বজবজের ট্রেন আসছে। ওপাশের ১নং প্ল্যাটফর্মের ওপর ছুটে এলেন এক মহিলা। রেললাইন টপকাচ্ছিলেন একজন। তাঁকে উদ্দেশ্য করে ওই মহিলা চেঁচিয়ে উঠলেন, ‘লাইনের ওপর একটা বেড়াল বাচ্চা, ওটাকে শিগ্গির প্ল্যাটফর্মের ওপর তুলে দিন।’ লোকটা আবার পিছন ফিরে এসে বেড়াল বাচ্চাটার ঘেঁটি ধরে ২নং প্ল্যাটফর্মে তুলে দিলেন। তারপর নিজে ১নং প্ল্যাটফর্মে উঠে গেলেন। ট্রেনটা এসে স্টেশনে থামল।
এতটুকু একটা সদ্যোজাত বেড়াল, একটা হাতের তালুতে এঁটে যায়। সবে কদমগাছের সামনে ডালা বিছিয়ে বসেছেন নিমকিওয়ালা। শুধু নিমকিই নয়, ডালায় রয়েছে বাদামের পাটালি, চালকুমড়োর মোরব্বা আর বেসনের গাঠিভাজা। হাতে কতকগুলো নিমকি ভেঙে নিয়ে তিনি বেড়ালটার মুখের সামনে ছড়িয়ে দিলেন। বেড়ালটা মুখ বাড়িয়ে খেতে গেল বটে, তবে এখনও নিমকি খাওয়ার মতো জোর তার হয়নি।
ইতিমধ্যে একজন মহিলা কানে মোবাইল ঠাসতে ঠাসতে উর্ধমুখী হয়ে বেড়ালটার ওপর চটিশুদ্ধু পা-টা প্রায় চাপিয়ে দিয়েছেন আর কি। চারদিক থেকে সমস্বরে আওয়াজ উঠল, ইস্-স-স। মহিলা পা-টা সরিয়ে নিয়ে গটমট করে বেরিয়ে গেলেন। এক নিত্যযাত্রী নিমকিওয়ালাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলেন, ‘কীরকম বুদ্ধি তোমার, রাস্তার মাঝে খাওয়াচ্ছ ওকে?’ নিমকিওয়ালা বেড়ালটার ঘেঁটি ধরে পিছনের পান-সিগারেটের গুমটির নিচে ওকে ঢুকিয়ে দিলেন। আরও কিছুটা নিমকি গুঁড়ো করে ওর সামনে ছড়িয়ে দিলেন। এতক্ষণে সবার নিশ্চিন্তি। বেড়াল বাচ্চাটা এযাত্রায় বোধহয় বেঁচে গেল।
Leave a Reply