সংবাদমন্থন প্রতিবেদন, কলকাতা, ২৭ ফেব্রুয়ারি#
শীত শেষ হয়ে আসার সময় থেকেই শুরু হল কলকাতা পুর এলাকার জলকষ্ট। আগের বছরগুলিতে গরম পড়তে শুরু করলে জলের অভাব শুরু হত। কিন্তু এবারই প্রথম, জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকেই জলের অভাব শুরু হতে থাকে। আমাদের ১০৫নং ওয়ার্ডের কয়েকটি পাড়া এলাকায় জলের সমস্যা থাকলেও, জলের জোগান ছিল। কিন্তু ইদানীং সমগ্র ওয়ার্ড জুড়ে নতুন ফ্ল্যাট বানানোর হিড়িকের সঙ্গে সঙ্গেই জলকষ্টও শুরু হয়েছে। প্রত্যেক ছোটাখাটো গলির ভিতরেও জি-প্লাস থ্রি ফ্ল্যাট হয়ে চলেছে। বাড়ছে পরিবার আর জনসংখ্যা। কিন্তু এর সাথে তাল মিলিয়ে বাড়েনি জলের জোগান।
================================
সম্ভাব্য কারণ
- অলিগলিতে বহুতল উঠে একটি জলের লাইনের ভোক্তা পরিবারের সংখ্যা দ্বিগুণ, তিনগুণ করে দিচ্ছে।
- বহুতল আবাসনের ফেরুলের ব্যাস চওড়া হওয়ায় আবাসনে সমস্যা হচ্ছে না, জল কম আসছে অন্য বাড়িগুলিতে।
=================================
১০৫নং ওয়ার্ডের আশুতোষ কলোনি এলাকায় বিগত বাম জমানায় বোরিং পাম্পের দৌলতে ঘরে ঘরে জলের লাইন পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু প্রথম দিকে পাঁচ বছর এবং পরের দিকে দুই বছরের মধ্যেই সেই পাম্পগুলি থেকে আর জল উঠত না। ফলে জলের সমস্যা থেকেই গেল। গত পুরভোটের পর নতুন কাউন্সিলারও প্রথম ধাক্কায় ওই একই পদ্ধতিতে জল সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছিলেন কয়েকটি পাড়ায়। কিন্তু গার্ডেনরিচের পরিশোধিত জল সরবরাহের প্রকল্পের কাজ এগোলেও তার সুফল ওয়ার্ডের প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছায়নি। তবে জল পৌঁছে যাচ্ছে নতুন নতুন ভাবে গড়ে ওঠা আবাসানগুলিতে।
এর কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা গেল, ফ্ল্যাট বা আবাসনগুলির ক্ষেত্রে জলের কানেকশনের ফেরুলের মাপ সাধারণ বাড়ির তুলনায় অনেক বেশি চওড়া। তার ফলে স্বাভাবিকভাবেই জলের ‘ফোর্স’ বেশি থাকে চওড়া ফেরুলগুলির দিকেই। আশুতোষ কলোনির গলিতেই চারটি আবাসন গড়ে উঠেছে। যার অর্থ নতুন আরও ২৫ থেকে ৩০টি পরিবার। আগে ছিল মোট ১২টি পরিবার। এভাবেই বাড়ছে কলকাতা পুর এলাকায় আবাসন আর জনঘনত্ব। স্বাভাবিকভাবেই জলের সরবরাহের আনুপাতিক হার কিন্তু কোনোভাবেই আবাসন বৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্য রেখে বাড়েনি।
ফলে যেখানে একটি লাইন থেকে কয়েকটি পরিবারকে জল নিতে হয়, তাদের জলের অসুবিধায় পড়তে হয় সবসময়ই। জলের অভাবের কথা জানালেই পাড়ার কেষ্ট-বিষ্টুরা বলতে থাকে, ফেরুল ওয়াশ (পরিষ্কার) করান। আর তার জন্য লাগবে ১০০০-১২০০ টাকা। প্রতি বছর এই ধরনের উদ্যোগ সমস্ত ওয়ার্ড জুড়েই দেখা যায়। যাতে অনেক সময় পুরসভা আর কেষ্ট-বিষ্টুদের পকেট ভরে, কিন্তু জল মেলে না।
Leave a Reply