শ্রীমান চক্রবর্তী, কলকাতা, ৩০ জানুয়ারি#
দীর্ঘদিন আগে থাকতে কলকাতা পুলিশকে জানানো সত্ত্বেও দু-দুবার সভার দিন পরিবর্তন করে অবশেষে কলকাতায় শিশুভাই, প্রহ্লাদ আগরওয়াল ও সুনীলমের মুক্তির দাবিতে সভা হতে পারল ২৯ জানুয়ারি। ‘কমিটি ফর রিলিজ অব ডঃ সুনীলম অ্যান্ড আদার্স’-এর পক্ষে মুরাদ হোসেন এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সভার মঞ্চ বাঁধার স্থান নিয়েও কলকাতা পুলিশ নানা ভাবে উদ্যোক্তাদের হেনস্থা করে। চোদ্দ বছর আগে মধ্যপ্রদেশের বাইতুল জেলার মুলতাই জনপদে কৃষকদের বিক্ষোভের ওপর পুলিশের গুলি চালানোকে কেন্দ্র করে যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল তাকে পুনরায় সম্পূর্ণ মিথ্যা গল্পের আদলে ফিরিয়ে এনেছে মধ্যপ্রদেশের বিজেপি শাসিত সরকার। সেই ঘটনায় পুলিশের গুলিতে ২৪ জন কৃষকসহ প্রায় ২৫০ জন আহত এবং একজন দমকল কর্মী কনস্টেবলের গুলিতে নিহত হয়েছিল। এই ঘটনাকে পুনরায় মিথ্যা মামলায় ফিরিয়ে এনে বাইতুলের নিম্ন আদালতে শিশুভাই, প্রহ্লাদ আগরওয়াল ও সুনীলম-কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
শিশুভাই (এখন তাঁর বয়স প্রায় ষাটের কাছাকাছি, ছোটোবেলা থেকেই আলা বা লোকগান বাঁধেন এবং নিজেই সুর করে গান করেন) মুলতাই-এ কৃষকদের দুর্দশা ও ১২ জানুয়ারি দিনটির গুলিচালনার ঘটনার প্রকৃত তথ্যসহ বিবরণ দিয়ে আলা বাঁধেন এবং সেটা জনসমক্ষে গেয়ে শোনানোর অপরাধে তাঁকে সুনীলমের সাথে প্রায় একই ধারাগুলি ব্যবহার করে অভিযুক্ত করে সাজা ঘোষণা করে নিম্ন আদালত। আরেক ব্যক্তি প্রহ্লাদ আগরওয়াল, যাঁর এখন বয়স প্রায় সত্তর, চোদ্দ বছর আগে সেই ঘটনার সময় তিনি সুনীলমকে তাঁর বাড়িতে থাকতে দিয়েছিলেন বলে তাঁকেও একই অভিযোগে সাজা দেওয়া হয়।
মেট্রো চ্যানেলের সভায় বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ওই তিনজনের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয়। কৃষ্ণা চক্রবর্তী সব শেষে বলতে উঠে তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা জানান। তিনি এবছরের ১২ জানুয়ারি দিনটিতে ‘মুলতাই শহীদ স্মরণ’ অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য গিয়েছিলেন। ৯ জানুয়ারি তিনি মুলতান পৌঁছে সুনীলম ও তাঁর সাথীদের সম্পর্কে জানতে পারেন, যাঁরা একই ভাবে মিথ্যা ও বেআইনিভাবে অভিযুক্ত হয়ে সাজা খাটছেন এবং যাঁদের কথা কেউ আমরা জানি না। তিনি বলেন, শিশুভাই যে আলাগানটি বেঁধেছেন, তা নিশ্চয়ই শাসকের প্রকৃত চেহারাকে উন্মুক্ত করেছে, তাই তিনি বিনা অপরাধে রাজরোষের বলি হয়েছেন।
Leave a Reply