• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

শান্তিপুরে বয়স্ক কর্মী মানুষদের শ্রদ্ধা জানিয়ে মাতৃ তর্পন

November 18, 2012 admin Leave a Comment

রবীন পাল, শান্তিপুর, ২ নভেম্বর#

ছবি প্রতিবেদকের।

বিন্দুতে সিন্ধু দর্শনও হয় — কথাটা শুনেছি। যাচাই হয়নি। আজ ২ নভেম্বর ২০১২ তারিখে সন্ধ্যেবেলায়। নদিয়ার প্রাচীন শহর শান্তিপুরের গীতা প্যালেস হল। প্রয়াত গীতা পালের পরিবারের উদ্যোগে এক ভিন্নরকম স্মরণ সন্ধ্যার আয়োজন। প্রয়াত ণ্ণগীতা’ মা বিদ্যালয়ের গণ্ডি না পেরিয়েও, সমাজের কু-শিক্ষায় আবর্তিত না হয়েও, অভাবের সংসারে, ছোট্ট এক টুকরো সুপ্ত স্বপ্ন দিয়ে নিজের বাড়ি না করে আমাদের বাড়ি ‘গীতা প্যালেস’ করে দিয়ে গেলেন। উনি সকলকে সমান স্নেহ, ভালোবাসা দিয়ে সংসার করার সাথে সাথে নীরবে সমাজের অসুস্থ মানুষের সেবা করতেন। ওঁর কর্মের রেশ ধরেই ‘পাল’ পরিবার সমাজে সেবা করেছেন এমন কিছু মানুষকে শ্রদ্ধা জানান আজকের এই ছোট্ট অনুষ্ঠানে।
প্যালেসে ঢুকতেই বাঁদিকে সুদৃশ্য ফুল বাগানে মায়ের ওপর সন্তানের স্মৃতি দর্পন। ডান দিকে গীতা মায়ের সমগ্র জীবনের টুকরো টুকরো কিছু ছবি। সামনের বারান্দায় মায়ের হাতে তৈরি নানা রকম আসন, নকশি কাঁথা, সেলাইয়ের জাদুতে রামকৃষ্ণ, বাঘ, পাখি, অমূল্য কথার নানা রকম কারুশিল্প। বোতামের ফুলদানি, ব্যাগ আরও কত কিছু। ভাবলে অবাক হয়ে যেতে হয়, একান্নবর্তী পরিবারে নিজের সন্তান ছাড়াও অন্য মায়েদের গণ্ডায় গণ্ডায় সন্তান পালন করেও কী করে এত সুন্দর কাজ করেছেন, সত্যিই উনি দশভূজা মা।
হলে প্রবেশের মুখেই দুটি ছোটো মেয়ের হাতে আদা কুচি, লবঙ্গ, মিছরি দানা। এক টুকরো মুখে নিয়েই অন্দরে প্রবেশ, শ্বেতশুভ্র চাদর বিছানো। সাদা ফুলের আলপনা চারিদিকে, ধূপের সুগন্ধ, মঞ্চের এক কোণে সাদা ফুল মালায় ঢেকে যাওয়া মায়ের ছবি। সর্বত্র পবিত্র সাদা রং, কিন্তু ছোটো মঞ্চেও গীতা মায়ের হাতে তৈরি সুদৃশ্য রঙিন মস্ত বড়ো আসন। মায়ের হাতে তৈরি পাতা আসনে বসেই ইসমাইল কারিগর আপন মনে বাঁশি বাজাচ্ছেন। করুণ সুরের বাঁশিতে চোখের পাতা দুটি কেমন যেন ভারী হয়ে গেল।
কিছুক্ষণ বাদেই নীলিমা বিশ্বাসে আবেগ তাড়িত কণ্ঠে মাতৃ বন্দনা,
জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপী গরিয়সী।
অনুষ্ঠানের চিরাচরিত রীতিনীতি না মেনে প্রথমেই বয়সের ভারে ক্লান্ত, অসুস্থ, জরাজীর্ণ কিছু মানুষকে শ্রদ্ধা জানানো। যা মাতৃ তর্পনের প্রথম এবং প্রধান উদ্দেশ্য। প্রথমেই মানিক সর্দার (৭০)। যিনি তবলদারীর কাজ ছাড়াও সারা জীবন শান্তিপুরের আগমেশ্বরী মাতাকে কাঁধে বহন করে নিয়ে গিয়ে বিসর্জন দিয়েছেন; শান্তিপুরের ঐতিহ্যমণ্ডিত রাসযাত্রায় বড়ো গোস্বামী বাড়ির রাধারমণ জিউ-কে কাঁধে নিয়ে ঘুরিয়েছেন। এরপর এলেন ঝাড়ুদার কুশ হরিজন (৬০)। যিনি সমগ্রজীবন শান্তিপুরের রাস্তা ঝাঁট দিয়ে পরিষ্কার করেছেন। একে একে এলেন রাজমিস্ত্রি মেম্বার আলি (৮০), ডাক নাম মোম-বালি মিস্ত্রি। উনি ১৫ দিন জোগানের কাজ করেই রাজমিস্ত্রি হয়েছিলেন। ওঁর হাতের যাদুতেই শান্তিপুরের অনেক বাড়ি অফিস তৈরি হয়েছে। বাগআঁচড়া থেকে এসেছিলেন হরিপদ বিশ্বাস (৮৭)। শৈশবে মাছ ধরা নেশা ছিল। নিয়তির ঘূর্ণিপাকে নেশা পরিণত হয় পেশায়।
প্রকৃতির বৈচিত্র্যে মানুষও কত বৈচিত্র্যময়। এমনকী তার কর্মে। আমরা সকলে যখন নিশিরাতে ঘুমাই, তখন শীত, বর্ষা উপেক্ষা করে গঙ্গাবক্ষে বিপদে পড়া মানুষকে নৌকা করে পারাপার করে দিতেন ব্রজবাসী বর্মন (৮৫)। এমনই আর এক অদ্ভুত মানুষ বিশ্বনাথ মোদক (৭০)। তিনি পেশায় রিক্সাচালক। ভোরের ট্রেনের যাত্রীর এলার্মঘড়ি ছিলেন তিনি। আগের রাত্রে বলে যাওয়া যাত্রীকে প্রথমে ভোরবেলায় ডেকে দিয়ে আসতেন। তারপর রিক্সা করে স্টেশনে পৌঁছে দিতেন। বাসের কন্ডাক্টর জুজুর আলি (৬২)। যিনি প্রথম জীবনে কবাডি খেলোয়াড় ছিলেন। সুনামের সঙ্গে অনেক শিল্ড কাপ জিতলেও ভাগ্যের দোষে চাকরি জোটেনি। এছাড়া ছিলেন আরতি মণ্ডল (৭০)। তিনি লোকের বাড়ি কাজ করতেন। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে হঠাৎই ওঁর পায়ের একটা শিরা শুকিয়ে যায়। উনি আর সোজা হয়ে নিজের পায়ে হাঁটতে পারেন না, পায়ের সাথে সাথে হাতেও দুটো চটি গলিয়ে বসে বসে চলাচল করেন। ইনি তাও এলেন। মঞ্জু হরিজন! এলেন দুজন মানুষের কাঁধে ভর করে। উনি ক্যানসারে আক্রান্ত, ওঁর স্বামীও মারা যান ক্যানসারে। একটা সময় শান্তিপুরের অনেক মানুষ ওঁদের কাঁধেই ভর করে জীবনধারণ করেছেন। ওঁদের কাজ ছিল খাটা পায়খানার মল টবে করে মাথায় বা ঠেলাগাড়িতে করে নির্জন জায়গায় গেলে দেওয়া। অনেকেই তখন চোখ নাক বন্ধ করে ওঁদের এড়িয়ে চলতেন। কিন্তু এরা যে মানুষ তা সকলে ভুলে ছিল। এদের প্রায় শেষ জীবনে একজনকেও ক্ষনিক শ্রদ্ধা জানাতে পেরে সকলেই খুশি। সু-মধুর বক্তা এবং অধ্যাপকদ্বয় ব্রজলাল বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুধীর চক্রবর্তীর মতো মানুষও নিজের হাতে এদের সম্বর্ধনা দিতে পেরে গর্বিত। গর্ব বোধ করেছেন মাষ্টারমশাই ইন্দুজ্যোতি কুণ্ডুও।
সম্বর্ধনার মাঝে মাঝে ছিল মায়ের স্মৃতিচারণ, সামাজিক কিছু কথা, হয়তো গল্পও।

স্মরণ মাতৃ তর্পন, শান্তিপুর, স্মরণ

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in