রাজস্থানের রাওয়াতভাটা পরমাণু প্রকল্পে ২৩ জুন ট্রিটিয়াম নিঃসরণ হয়েছে এবং এর ফলে ভারী জল ও ট্রিটিয়াম সরবরাহ ব্যবস্থায় কর্মরত ৩৮ জন শ্রমিক বিকীরণের শিকার হয়েছে। প্রকল্পের পাঁচ এবং ছয় নম্বর ইউনিটের স্টেশন ডিরেক্টর বিনোদ কুমার বলেছেন, ৩ জন শ্রমিক ণ্ণস্বাভাবিকের থেকে অতিরিক্ত’ ট্রিটিয়াম বিকিরণের মধ্যে পড়েছে। যদিও পরমাণু বিজ্ঞানী তথা পরমাণু বিরোধী কর্মী সুরেন্দ্র গাডেকর জানিয়েছেন, ট্রিটিয়াম বিকিরণে কোনো ণ্ণনিরাপদ সীমা’ হয় না। হাইড্রোজেনের এই ভয়ঙ্কর রেডিওনিউক্লাইডটি জলে গুলে যায়, এবং দেহের কোণায় কোণায় ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও জানা গেছে, ১৫০ জন শ্রমিককে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মুম্বই থেকে রাজস্থানে এসেছে এক বিশেষজ্ঞ টিম।
এসমস্ত কথাই পাঁচদিন চেপে যাওয়া হয়েছিল। পাঁচদিন পরে রাজস্থানের হিন্দি দৈনিক ণ্ণরাজস্থান পত্রিকা’-তে খবরটি বেরোয়, কিন্তু কোনও জাতীয় দৈনিকে খবরটি বেরোয়নি। ইন্টারনেটে খবরটি প্রচারিত হতে শুরু করতেই রাওয়াতভাটা পরমাণু দুর্ঘটনার খবর চেপে যাওয়া বা কমিয়ে দেখানোর প্রয়াস শুরু হয়ে গিয়েছে সরকারি মহলে। বড়ো জাতীয় মিডিয়ায় পরমাণু কর্তৃপক্ষের মিডিয়া ম্যানেজাররা জানিয়েছেন, মাত্র ২ জন শ্রমিক বিকিরণের শিকার হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছর আগস্ট মাসে কাকরাপাড় পরমাণু চুল্লিতে একটি তেজস্ক্রিয় নিঃসরণে তিনজন চুক্তি-শ্রমিক বিকিরণের শিকার হয়। এই অস্থায়ী শ্রমিকদের কোনো স্বাস্থ্যবীমা বা সুযোগসুবিধা ছিল না। এবারের রাওয়াতভাটা বিকিরণে আটত্রিশ জনের মধ্যে ২২ জনই অস্থায়ী শ্রমিক। সুরেন্দ্র গাডেকর জানিয়েছেন, ণ্ণচুক্তি শ্রমিকদের জন্য বার্ষিক বিকিরণ সীমা দেড় মিলিরেম নির্দিষ্ট করেছে পরমাণু কর্তৃপক্ষ। কোনো অস্থায়ী শ্রমিক যদি এক দিনেই ওই পরিমাণ বিকিরণের শিকার হয়, তাহলে তাকে পরবর্তী এক বছরের জন্য কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রেই এই চুক্তি-শ্রমিকরা তারপর অন্য নাম নিয়ে ফেরত আসে কাজে। তারা একবার আমাদের দেশের বিপুল কর্মহীন জনতার ভিড়ে মিলিয়ে গেলে তারপর তাদের যখন বিকিরণের ফলে রোগ হয়, তখন তাকে পরমাণু বিকিরণজনিত রোগ বলে কিছুতেই ধরা যায় না।’
ডায়ানিউক ডট অর্গ ওয়েবসাইটে কুমার সুন্দরমের রিপোর্ট, ২৯ জুন
Leave a Reply