• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কলরব চলছেই

May 20, 2015 admin Leave a Comment

চূর্ণী ভৌমিক, কলকাতা, ১৪ মে#
৩০ শে এপ্রিল ছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কলাবিভাগের ছাত্রছাত্রী আয়োজিত সংস্কৃতি নামক বার্ষিক অনুষ্ঠান (যার চলতি নাম ‘ফেস্ট’ )। উপাসনা চক্রবর্তী ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী, আমার বন্ধু,  আমাদের সকলের সঙ্গেই অনুষ্ঠানে ছিল সারা সন্ধ্যে। গান বাজনা চলছে উত্তেজনা বাড়ছে এর মধ্যে খেয়ালই করিনি কখন উপাসনা বেড়িয়ে গেছে। সঙ্গে ছিল ওর প্রেমিক ফ্রান্সিস।
উপাসনার সঙ্গে আমার আলাপ হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে হোককলরব আন্দোলন চলাকালীন। স্কটিশ চার্চ কলেজের ছেলে ফ্রান্সিস সেই সময় একা একা কলেজে প্রচার করার  চেষ্টা করায় তৃণমূলের গুণ্ডাদের হাতে মার খায়। এ হেন ফ্রান্সিস আমাদের সকলের বন্ধু, সহানুভূতিশীল ও সাহসী ছেলে হিসেবে পরিচিত। কেউ তাই ভাবতেই পারেনি যে সেদিন রাত্রে উপাসনাকে সন্দেহের বসে শারীরিক নিগ্রহ করবে ফ্রান্সিস।
ফোনে  কাঁপা গলায় উপাসনা বলল যে ফ্রান্সিস ওকে মেরেছে। ফেস্ট থেকে বেরোনোর পর ওদের কথা কাটাকাটি আরম্ভ হয়। ফ্রান্সিস ওকে সন্দেহ করতে থাকে ওর অন্য কোন সম্পর্ক আছে কিনা। ওরা দুজন মিলে ট্যাক্সি ধরে উপাসনার পিজিতে যায়। সেখান থেকে ফ্রান্সিস কিছুতেই প্রাথমিক ভাবে বাড়ি যেতে চায় না। শেষমেশ কোনমতে ওকে রাজী করায় উপাসনা, কারণ চিৎকার চেঁচামেচি ঝগড়া তখন ভয়ানক ভাবে চলছে। ঠিক বেরোনোর আগে আচমকাই ওকে মারতে শুরু করে ফ্রান্সিস। মুখে এতো জোরে এতবার ঘুষি মেরেছে যে ওর জ্বর চলে এসেছে মুখের ভেতর ঘা হয়ে গেছে। এতদিনের চেনা কাছের মানুষের কাছ থেকে এরকম ব্যবহার পেয়ে মানসিক ভাবেও চূড়ান্তভাবে আহত হয়েছিল ও।  নারী-নিগ্রহের ঘটনা যেন খুব দূরের বিষয় বলে মনে হয় আমাদের যা ‘অচেনা খারাপ ও অসচেতন’ মানুষেরা করে। কিন্তু তা যে নয়, আমাদের চেনা পরিসরেও যে এরকম মানসিকতা চোরাগোপ্তা লুকিয়ে থাকে সে কথা জানানোর জন্যই উপাসনা ফেসবুকে একটি পেজ খুলবে ভাবে, যেখানে ও ফ্রান্সিসকে সরাসরি সকলের সামনে ওর কাছে ক্ষমা চাইতে বলবে। এফ আই আর করার জন্য যে মানসিক ও আর্থিক জোরের প্রয়োজন হয় ২১ বছর বয়সী এই ছাত্রীটির তা নেই। শুধু তাই নয়, গল্প করতে করতে একসময় উপাসনা বলে – আমি শুধুই চাই ও বুঝুক যেটা ও করেছে সেটা অন্যায়। কোন মানুষ অন্য কারুর গায়ে হাত তুলতে পারে না। এইটুকুই। আমি এটাকে একটা ব্যক্তিগত বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখছি না। ওকে শাস্তি দিয়ে কোনরকম ভাবে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে আমি চাই না, যদিও রাগ হচ্ছে খুব।
এই ঘটনার কয়েকদিনের মধ্যেই মে মাসের ৪ তারিখ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে বসে বসে গল্প করছিলাম আমি আর আমার বন্ধু জয়ী ব্যানার্জী। ও উপাসনারও বন্ধু। উপাসনাকে নিয়েও কথা-বার্তা হচ্ছে আমাদের মধ্যে।  ও হঠাত জিজ্ঞেস করে উঠল আমি কাব্য নামের কাউকে চিনি কিনা। আমি চিনতাম না যদিও নামটা চেনা চেনা ঠেকছিল। ও বলল কাব্য বলে কোন একটি ছেলের সঙ্গে ওর ফেসবুকে আলাপ হয়েছে আজ সে ওর সঙ্গে ক্যাম্পাসে দেখা করতে যাবে। আমি ইয়ার্কি মারলাম – দেখিস বাবা সাবধানে, ভার্চুয়াল ব্যাপারস্যাপার, বিশ্বাস নেই।  তারপর আমিও বাড়ি ফিরে এসেছি। পরের দিন সকালে ফেসবুক খুলে মাথায় হাত। দেখি জয়ী ফেসবুকে জানিয়েছে যে গত রাতে ওর শ্লীলতাহানি করে ওর সদ্য পরিচিত কাব্য ঘোষ । কাব্য ঘোষের সঙ্গে এই ঘটনার পড়ে জয়ীর যা যা কথাবার্তা হয়েছিল সেগুলোর ছবি তুলেও দিয়েছে জয়ী ওর অভিযোগের প্রমাণ স্বরূপ।

পরের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে গিয়ে শুনি কাব্য ঘোষকে ডেকে পাঠিয়েছে জয়ীর বন্ধুবান্ধবেরা একটা ফয়সালা করবার উদ্দেশ্যে। কথা দেওয়া হয়েছে কোন মারধোর করা হবে না। আমিও রয়ে গেলাম। সন্ধ্যেবেলা ৮টা নাগাদ কাব্য ঘোষ ঢুকল। তার সাথে ছিল প্রাণাধিকা দেভবর্মণ নামক একজন জেন্ডার আক্টিভিস্ট ও দেভ চক্ররবর্তী নামক এক ভদ্রলোক, তাঁরা এসেছিলেন মূলত পরিস্থিতি সামলানোর জন্য (যাতে কেউ হিংসাত্মক না হয়ে পড়ে তা লক্ষ্য রাখার জন্য)।
প্রায় গোটা পঞ্চাশেক ছেলে মেয়ে ও সর্বোপরি জয়ীর জেরায় ছেলেটি প্রথমে কয়েকবার মিথ্যে বললেও  স্বীকার করে যে সে জয়ীর শ্লীলতাহানি করেছে। তারপর জয়ী ও তার সহপাঠীরা এর বিহিতস্বরূপ ঠিক করে যে, পুলিশে তারা জানাবে না কিন্তু তার পরিবর্তে কাব্যকে স্বীকার করতে হবে যে সে অপরাধী। ফেসবুকে সে নিমরাজী হয়ে সর্বসমক্ষে স্বীকার করে তার অপরাধের কথা।
সামনে উপাসনা ও জয়ীর পরীক্ষা। ওরা এখানে একা একা পিজিতে থাকে। ফ্রান্সিসের বাড়িতে জয়ী গেছিল আরও অনেকের সঙ্গে কথা বলতে। কাব্য ঘোষ না বেরোনো অবধি উপাসনা একমুহুর্তের জন্যও ঘটনাস্থল থেকে নড়েনি যদিও  সেদিনও রাতে কোথায় ফিরবে তার ঠিক ছিল না। একই সপ্তাহে দুই বন্ধুর এরকম দুর্বিষহ অভিজ্ঞতায় ওরা দুজন দুজনের পাশে যেভাবে দাঁড়িয়ে সাহায্য করল, সেরকম সাহস এবং সহমর্মিতা আমি আগে কখনো দেখিনি। হোকলরব আন্দোলনের পর  একটা আশ্চর্য বদল লক্ষ করা যাচ্ছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা বেশ বড় অংশের ছেলেমেয়েরা অনেক সামাজিক বিষয়, বিশেষত লিঙ্গ-রাজনীতির বিষয়ে সরব হয়ে উঠেছে।  অন্যান্য কলেজের ছাত্রও আন্দোলন, বা পরিবেশ সংক্রান্ত সমস্যা সব কিছু নিয়েই বেশ ভালো পরিমাণ কথাবার্তা ও সক্রিয় ভূমিকা পালনের উৎসা হহঠাত করেই বেশ বেড়ে গেছে। উপাসনা ও জয়ীর ঘটনায়  যে সাহসিকতার সঙ্গে ওরা লড়ল এবং সহপাঠীরা যে ভাবে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে মোকাবিলায় সাহায্য করার চেষ্টা করল, হোককলরব আন্দোলনের পরোক্ষ ভূমিকা যে তাতে একেবারে নেই তা বলা যায় না।  ছবি আঁকা গান কবিতা দেওয়াল লিখন সবকিছুতেই এর স্পষ্ট ছাপ রয়েছে। যে কথা হয়নি আগে সেই কথা হতে শুরু করেছে, হচ্ছে, হোক।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য কলরব, কলরব আন্দোলন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, যৌন-হিংসা, লিঙ্গ বৈষম্য, লিঙ্গ হিংসা, হোক কলরব

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in