• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

যাদবপুরের সমাবর্তনে ছাত্রছাত্রীদের বহু বিচিত্র প্রতিবাদ

December 31, 2014 admin Leave a Comment

পঞ্চাদ্রী কর্মকার, কলকাতা, ২৮ ডিসেম্বর#

কালো ব্যাচ পরে কনভোকেশনে ছাত্ররা।
কালো ব্যাচ পরে কনভোকেশনে ছাত্ররা।

আমি কারিগরি শাখার সান্ধ্য বিভাগ থেকে এইবার পাশ করেছি। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগদান নিয়ে অনেকের মনেই ধন্দ ছিল। ঠিক কি করবে কেউই বুঝতে পারছিল না। অনেকদিন ধরেই নিজেদের মধ্যে আলোচনা চলেছে। কেউ বলেছে, সকলেই আমরা উপস্থিত হব, তারপর পরিস্থিতির ওপর বিবেচনা করে সকলে মিলে ঠিক করব। কেউ কেউ বলল, আর যাই হোক, ভিসির হাত থেকে নেবনা। তবে বেশ কিছু ছাত্রের সমস্যাটা অন্য জায়গায়, মার্কসিট দেখিয়ে চাকরি পেয়েছে, তাই সংশাপত্র জমা না দিলে চাকরির ক্ষেত্রে অসুবিধা হতে পারে। কারণ সমাবর্তনে না নিলে সংশাপত্র বাড়ির ঠিকানায় পৌঁছবে আরো দেড় দুই মাস পরে। তারপর যদি ‘বয়কট’ লিখে দেয়? তাই ভিসির বিরুদ্ধে বিরোধিতা থাকলেও তারা সংশাপত্রটি নিতেই চেয়েছিল। বোঝা গেল, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষ যদি সমাবর্তন অনুষ্ঠানের বদলে কার্যালয় থেকে সংশাপত্র বিলির ব্যবস্থা করত, সেখানেও লম্বা লাইন পড়ত।
২৪ ডিসেম্বর বেলা ১টা নাগাদ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ নং গেটের কাছে যখন পৌঁছলাম, বেশ কিছু ছাত্র সমাবর্তন অনুষ্ঠানের ‘রোব’ পরে আছে, আর তার সঙ্গে গায়ে লাগানো আছে কালো ব্যাচ আর স্লোগান লেখা একটা কাগজ, ‘আমরা ভিসির পদত্যাগ চাই’। বেশ মোটা অক্ষরে, চোখে পড়ার মতো। তা ব্যাপারটা কী জিজ্ঞেস করাতে তারা বলল, সকালের দিকে অনুষ্ঠানের শুরুতে ভিসি ও রাজ্যাপালের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়। বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীরাই ভিসির হাত থেকে সংশাপত্র নিতে অস্বীকার করায় ওনারা বেরিয়ে যান। তারপরই আমরা সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিই। জিজ্ঞেস করলাম, তাহলে এখন কে সংশাপত্র দিচ্ছে? বলল, বিভাগীয় প্রধান, ডিন প্রমুখ, ভিসি নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে আমিও আন্দোলনের সমর্থনে কালো ব্যাচ ও ভিসির পদত্যাগের দাবিতে স্লোগানপত্র গায়ে পরে নিলাম। আমার কয়েকজন বন্ধু বলল, সকালে টিভির দৌলতে তারা গীতশ্রী সরকারের পদক ফিরিয়ে দেওয়া দেখেছে। এবং সেই ঘটনার পর কার্যত ভিসি যে মঞ্চে আর বেশিক্ষণ থাকবে না সেটা অনেকেই বুঝতে পেরে গেছে এবং তারপরই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের ভিড় বেড়েছে। তবে বেশ ভালো সংখ্যক ছাত্রছাত্রী একেবারেই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেয়নি। তারা সারাদিন ধরে বিভিন্ন রকমভাবে প্রতিবাদ করে গেছে। কেউ বা এ চত্বরই মাড়ায়নি।
প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীই এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগদান করার জন্য অপেক্ষা করে থাকে। শুধুমাত্র সংশাপত্র নেওয়ার জন্য নয়, পাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে বেরিয়ে যাবার পর আবার সকলে শেষবারের মতো একসাথে মিলিত হবার একটা ভালো পরিবেশ তৈরি হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষ আর সরকারের মিলিত আক্রমণ ছাত্রছাত্রীদের সম্পূর্ণ মানসিকভাবে কর্তৃপক্ষের বিপরীতে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
এক্ষেত্রে একটা বিষয় বলে নেওয়া খুবই প্রয়োজন যে কর্তৃপক্ষ কিন্তু শিক্ষক নয়। তারা কিন্তু কোনো ক্লাস নেয়না। তাই ছাত্র শিক্ষক সম্পর্কের কোনো অবনতির প্রশ্ন এখানে নেই। রাতের অন্ধকারে পুলিশ বাহিনীর নির্লজ্জ আক্রমণের কথা আজ কে না জানে। অনেক মিছিল, মিটিং অবস্থান, সভা হয়েছে তার পর। কিন্তু কোনো পরিস্থিতিতেই উপাচার্য বা ভিসি পদত্যাগ করেননি। এখন কর্তৃপক্ষ ও সরকার রাষ্ট্রশক্তি এক হয়ে গেছে। উপাচার্যকে যদি প্রতিদিন ছাত্রছাত্রীদের মুখোমুখি হতে হত শিক্ষকদের মতো তবে উপাচার্যের এইভাবে টিঁকে যাওয়াটা সম্ভব হতো না। আজ সংবাদমাধ্যমের দৌলতে এই কর্তৃপক্ষকে রাজ্যবাসী দেশবাসী চিনলেও এমনিতে বেশিভাগ ছাত্রছাত্রীরাই কিন্তু এদের চেনে না। কারণ এনাদের প্রতিদিন ছাত্রছাত্রীদের মুখোমুখি হতে হয় না।
কর্তৃপক্ষের সাথে সরকারও যৎপরোনাস্তি যাদবপুরের ছাত্রছাত্রীডের গায়ে কাদা লাগানোর ক্রমাগত চেষ্টা করে গেছে। সেটা কখনও সরকারি দলটির ছাত্র সংগঠনটির মিছিলে ‘মদ গাঁজা বন্ধ … তাই প্রতিবাদের গন্ধ’, ‘কোলে শুয়ে নেশায় চুর, তার নাম যাদবপুর’ ইত্যাদি ইত্যাদি কিম্বা কখনো নকশাল, কখনো মাওবাদী বলে। শাসক দলটি বিশ্ববিদ্যালয়কে বাইরের জনগণের সামনে এমনভাবে তুলে ধরতে চাইছে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে শুধু বিশৃঙ্খলা হয়, মদ, গাঁজা খাওয়া হয় ইত্যাদি ইত্যাদি। এটা নতুন কিছু নয়। এর আগের সরকারও একই কাজ করে এসেছে বিগত দিনে। আগের জমানায় যখনই ছাত্রছাত্রীরা কোনো আন্দোলন সংগঠিত করেছে তখনই ছাত্র সংগঠন এসএফআই মাইক নিয়ে প্রচার করত, ‘বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে ছাত্রছাত্রীরা’। তাই বারেবারেই শাসকদলগুলি নিজের অজান্তেই দেশের আপামর জনগণের কাছে নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিন্দাই করে ফেলত। আর এই সাথে সাথে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকটি মানুষকেই অপমান করা হয়। আজ অবশ্য শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারীদের অনেকেই এই আন্দোলনের পাশে সমর্থন আছে। এই সমর্থন কখনো সক্রিয় প্রতিবাদের মধ্যে দিয়ে আবার কখনো অন্তরঙ্গ আলাচনায় তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। কর্তৃপক্ষের অনেকেরই হয়তো আমাদের এই আন্দোলনের পক্ষে সমর্থন আছে। কিন্তু সরকারি বা রাজনৈতিক চাপে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে না। শিক্ষক শিক্ষিকাদের সংগঠন জুটা-ও ভিসির পদত্যাগের জন্য লাগাতার সক্রিয় আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
সমাবর্তনের জন্য ‘রোব’ নিতে গিয়ে দেখলাম, ‘হোক কলরব’ টেবিল থেকে একটা বয়কটের সংশাপত্র দেওয়া হচ্ছে। আমি ব্যাচ চেয়ে নেওয়াতে ওরা আমাকে বলল, তুমি কি বয়কট করছ। আমি বললাম, না। ভিসি নেই, তাই আমি সংশাপত্র নেব। তাও ওরা আমাকে একটা ‘বয়কটের সংশাপত্র’ দিল। আরো এগোতে, সামনে দেখি বেশ কিছু শিক্ষক শিক্ষিকা অনশনে বসেছেন। দেওয়ালে দেওয়ালে ব্যানারে পোস্টারে বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরো ঢেকে গেছে। ওএটি-র প্রবেশ পথের পাশে ছাত্ররা মাইক নিয়ে আন্দোলনের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে — ‘বোল মেরে ভাই হল্লা বোল, অওর জোরসে হল্লা বোল।’ ইত্যাদি ইত্যাদি। আমরা ভেতরে চলে গেলাম। ভেতরেও তখন স্লোগান চলছে, ‘হোক কলরব’। স্লোগান দিতে দিতে তারা ওএটি ছেড়ে বেরিয়ে গেল। আন্ডার গ্র্যাজুয়েটের কিছু ছাত্রছাত্রীও মঞ্চে উঠে সংশাপত্র না নিয়ে প্রণাম জানিয়ে বেরিয়ে গেল। আমরা কেউ কেউ ভিসির পদত্যাগের দাবি জানানো ব্যাচ পরেই সহ উপাচার্যের হাত থেকে সংশাপত্র নিলাম।
প্রতিবাদ যে কোনো কেন্দ্রীভূত প্রকাশ নয়, সমাবর্তন অনুষ্ঠানের দিন তা বোঝা গেল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের বেশিরভাগই তাদের নিজেদের মতো করে প্রত্যেকেই কর্তৃপক্ষের নারকীয় আচরণের নিন্দা করেছে। কেউ সমাবর্তনে যোগদান না করে, কেউ স্লোগান দিয়ে, কেউ সংশাপত্র বা মেডেল না নিয়ে, কেউ মঞ্চে উঠে প্রণাম করে নেমে আসার মাধ্যমে, কেউ ব্যাচ পরে, আবার কেউ হয়ত তাদের নিজেদের মধ্যে অন্তরঙ্গতায় ভিসির ভূমিকার নিন্দা করে।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য কনভোকেশন, ছাত্র আন্দোলন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, যৌন হেনস্থা, সমাবর্তন, হোক কলরব

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in