গত সংখ্যায় প্রকাশিত, ছাত্রদের মোবাইল নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন অধ্যাপক শুভাশিস মুখোপাধ্যায়#
ব্লু টুথ বেশি ব্যবহার করলে হাত কাঁপে কেন?
বেশি বা কম ব্যবহার কথাটা খানিকটা আপেক্ষিক। সাধারণভাবে একবারে ৬ মিনিটের বেশি (একঘন্টার মধ্যে) কেউ যদি মোবাইল ব্যবহার করে, তাহলে বিপদ বাড়ে। ব্যবহার করার সময় যত বাড়বে, বিপদের পরিমাণ তত বাড়বে। কতক্ষণ ব্যবহার করলে কার কতটা ক্ষতি হবে তা ব্যবহারকারীর ওপর নির্ভর করে। হাত কাঁপার জন্য অনেকগুলো কারণ একসাথে কাজ করে। ব্লু-টুথের সঙ্গে জড়িত মাইক্রোওয়েভের গরম করার ক্ষমতা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে। তাই যত সময় যায়, মোবাইল ফোনটা হাতে ধরা থাকলে হাতের স্নায়ুগুলি ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং হাত তখন মোবাইল ফোনটির সামান্য ওজনটুকুও বহন করতে পারে না। আর একটি কারণ সম্প্রতি জানা গেছে। আমাদের স্নায়ুর মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎ তরঙ্গ প্রবাহিত হওয়ার ফলে আমরা নানা রকম বিষয় অনুভব করতে পারি। ব্লু-টুথ দীর্ঘক্ষণ ব্যবহারের ফলে আমাদের স্নায়ুর বৈদ্যুতিক ধর্ম অনেকক্ষণের জন্য বদল হয়ে যায় এবং আগের অবস্থায় ফিরতে অনেক সময় নেয়। খুব অল্প কিছু ক্ষেত্রে সেই ধর্ম আর আগের অবস্থায় ফেরে না। তখন এর ফলে স্নায়বিক রোগ হয়।
মোবাইলের অপপ্রয়োগ আটকানোর জন্য কোনো আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে কি?
আমাদের দেশে মোবাইল ফোন যে অপব্যবহার হয় এবং তার থেকে মোবাইল ব্যবহারকারীর যে ক্ষতি হতে পারে, একথা সরকার বা মোবাইল পরিষেবা সংস্থাগুলির কেউই স্বীকার করে না বললেই চলে। এই নিয়ে মোবাইল সংস্থাগুলির মধ্যে রেষারেষি এবং সাধারণ মানুষের চাপে কিছু শিথিল আইন হয়েছে। কিন্তু সেই শিথিল আইনেরও প্রয়োগ কম। কে এবং কীভাবে সেই আইন প্রয়োগ করবে, তার স্পষ্ট কোনো নির্দেশ আইনে না থাকায় এই আইন প্রয়োগ প্রায় হয় না। সামান্য যা কিছু আইন রয়েছে, তা রয়েছে মোবাইলের থেকে বেরিয়ে আসা মাইক্রোওয়েভ যে তাপ সৃষ্টি করে তার জন্য। সেটাও যথেষ্ট নয়।
মোবাইলের বিকিরণ যে দেহের ডিএনএ-র ওপর খারাপ প্রতিক্রিয়া করে, তার ফলে ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত হলে কি বিকলাঙ্গ বা মানসিক বিকৃতির কোনো সম্ভাবনা আছে?
ডিএনএ-এর ওপর মাইক্রোওয়েভ যে ক্ষতি করে তার একটা অংশ কিছুক্ষণের মধ্যেই দৃশ্যমান হয় আর আরেকটা অংশ সামনে আসতে ৫০ থেকে ১০০ বছর পর্যন্ত নিতে পারে। যদি ডিএনএ-এর ক্ষতি হয়, তা থেকে জিনের ক্ষতি হবে এবং সেই ক্ষতি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে দৃশ্যমান হতে পারে। কয়েক জাতের মানসিক বৈকল্যের জন্য দায়ী জিন বা জিন সমষ্টি সম্পর্কে এখন যে তথ্য জানা যাচ্ছে, তা থেকে বলা যায়, অতিরিক্ত পরিমাণ মাইক্রোওয়েভের প্রভাবে দীর্ঘকালীন প্রেক্ষিতে মানসিক রোগ হওয়া অসম্ভব নয়।
Leave a Reply