কাজ হারানো মানুষের পেশা বদলের স্কেচ আঁকছেন সুমিত
সুমিত দাস। শান্তিপুর। ২২ জুলাই, ২০২০। #
শিবু এখন ডিম বিক্রি করে। ভারতমাতা মোড়ের সামনের চাতালে কিছু দিন বসেছিল ডিম নিয়ে। এখন বড় বাজারে বসে। তবে ওর নির্দিষ্ট কোন জায়গা নেই, কোন সবজিওয়ালা না এলে সেই জায়গায় বসে পরে শিবু। বাড়িতে বাবা মা দাদা বৌদি আর ভাইঝি নিয়ে সংসার। আগে শিবু তাঁতের কাজ করত। লকডাউনের সময় মহাজন জানিয়ে দিয়েছে এখন কাপড় দেওয়ার দরকার নেই, সুতো এখন দেওয়া যাবে না। আগে সোসাইটি থেকে পটি নিয়ে কাপড় বুনত। বনিবনা না হওয়ায় সোসাইটির কাজ ছেড়েছে, তবে এখনও সে মেম্বার। ২০১১ সালে সোসাইটির পরিচালক পদে নির্বাচিত হয় শিবু। বাকি সদস্যদের সাথে আদর্শগত মতবিরোধ তৈরী হওয়ার স্বেচ্ছায় ইস্তফা দেয় সে। মূলধন কম থাকায় ডিমের ব্যবসাটাও ঠিকঠাক করতে পারছেনা।
কথা বলার সময় লক্ষ্য করছিলাম ওর হাতে একটা লোকাল পত্রিকার বেশ কয়েকটা কপি রয়েছে। শিবু বলল, সন্ধ্যা বেলায় যারা অর্ডার দেয় তাদের বাড়িতে ডিম পৌঁছে দিই, সাথে পত্রিকা গুলোও বিক্রি হয়। লকডাউনের বাজারে যা আসে।
ফুচকাবিক্রেতা লাল্টু কাকু’র কাছে সবজি কিনতে গিয়ে দু’কথা
শুনলেন নুঙ্গী’র স্নিগ্ধা দাস
দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার ৩৩ নম্বর ব্লক, নুঙ্গী স্যাকড়াপাড়ার মোড়ে ফুচকাবিক্রেতা লাল্টু মজুমদার এখন বিপাকে। আজ সকালে সব্জির ভ্যান নিয়ে পাড়ার গলিপথে ঢুকেছিলেন। কুমড়ো কিনতে গিয়ে জিগ্যেস করলাম, কাকু তুমি? উত্তরে বিষন্ন মুখে বললেন, লকডাউনের পর কেউ ফুচকা খেতে আসছেনা। বাড়িতে অসুস্থ ছেলে; পড়ে গিয়ে হাত ভেঙেছে; রোজগার না করলে খাব কী তার ঠিক নেই। পাড়াতে গৌতম (পুরনো সব্জি বিক্রেতা) আছে বলে তেমন সব্জিও কিনছেনা কেউ। মাছের ভ্যান যে আনব, যত টাকায় কিনব – সেটাও উঠবেনা।
গৌতম মন্ডলের বাবা সবে মারা গিয়েছেন, ওনার স্ত্রী’র কাছে শুনলাম। তিনি রিক্সা চালক। ছেলে সবজি বিক্রির পাশাপাশি অনুষ্ঠান বাড়িতে জলের বোতল পৌঁছে দিতেন। লকডাউনে অনুষ্ঠান খুবই কম হচ্ছে। তাই সেপথও বন্ধ হয়েছে। কোনোরকমে সংসার চলছে।
Leave a Reply