কুশল বসু, কলকাতা, ১৫ আগস্ট#
বাঁধভাঙা জনপ্রতিরোধের পর মিশরের নির্বাচিত মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতা মুহাম্মদ মোরসিকে হটিয়ে আর্মি ক্ষমতায় এসেছিল, গঠন করেছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কিন্তু মোরসির সমর্থকরা তা মেনে নেয়নি। হিংসাত্মক বিক্ষোভের পর আর্মি মোরসি সমর্থকদের ওপর অস্ত্র হাতে চড়াও হয়েছিল। তার প্রতিবাদে এবং মোরসিকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে চেয়ে কায়রোতে দুটি জায়গায় মোরসি সমর্থকরা ধরনায় বসে। গোটা রমজান মাস জুড়ে সেই ধরনা চলতে থাকে। মিশরীয় আর্মির সরকার একে সন্ত্রাসবাদ আখ্যা দেয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ও মিশরীয় সেনাপ্রধান সিসি ২৬ জুলাই কায়রোতে জনসমাবেশের ডাক দেয় সন্ত্রাসবাদকে নিকেশ করার পাবলিক সাপোর্ট দেখানোর জন্য। মোরসি সমর্থকদের ধরনা ভাঙতে সেনাবাহিনী যাতে বলপ্রয়োগ করে, তার জন্য ২৬ জুলাই লক্ষ লক্ষ মিশরবাসী রাস্তায় নামে। মিশরীয় মিডিয়া রাষ্ট্রীয় হিংসার এই তোড়জোড়কে সম্পূর্ণ সমর্থন দেয় এবং ২৬ জুলাইয়ের মিছিল সংগঠিত করতে বড়ো ভূমিকা নেয়। প্রায় সমস্ত ব্রাদারহুড বিরোধী সংগঠিত শক্তি মিছিলে যোগ দেয়। কেবল ‘এপ্রিল ৬ যুব আন্দোলন’ এবং আরও কয়েকটি ছোটো শক্তি, মোরসি-বিরোধী হওয়া সত্ত্বেও, রাষ্ট্র এবং মিডিয়ার ডাকা এই মিছিলে যোগ দেয়নি।
২৭ জুলাই মিশরীয় সেনাবাহিনী মোরসি সমর্থকদের একটি প্রতিরোধ ক্যাম্প, রাবিয়া আল-আদাইয়া মসজিদে আক্রমণ চালায়। ৮৬ জন মারা যায়। কিন্তু কায়রো এবং গাজার ধরনা শিবির চলতে থাকে।
১৪ আগস্ট সেনাবাহিনী এই ধরনা শিবিরগুলোর ওপর আক্রমণ চালায়। মুসলিম ব্রাদারহুড সর্বাত্মক প্রতিরোধের ডাক দেয়। ব্যাপক হিংসাতে ১৫ আগস্ট সকাল পর্যন্ত হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যায়। মিশর সরকারের হিসেব, ৫২৫ জন মারা গেছে, যার মধ্যে ৪৩ জন পুলিশ অফিসার এবং চারজন সাংবাদিক। মুসলিম ব্রাদারহুড জানায়, ২০০০ প্রতিরোধকারী মারা গেছে। সামরিক সরকার একমাসের জরুরি অবস্থা জারি করে। রাজধানী কায়রোর ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
Leave a Reply