নিবেদিতা সরকার, কোচবিহার, ৩০ এপ্রিল#
কেন্দ্রীয় সরকারের ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’-এর অনুকরণে আমাদের রাজ্যে ঘোষিত হয়েছে ‘মিশন নির্মল বাংলা’। তারই অন্তর্গত পদক্ষেপ হিসেবে ২৯ এপ্রিল কোচবিহার জেলা প্রশাসন আয়োজন করেছিল স্কুলের বাচ্চাদের নিয়ে একটি বাইসাইকেল র্যালির। সেই র্যালি তো হলো, কিন্তু শাসক দলের বড়ো, মেজো, ছোটো মাতব্বরদের নিয়ে এক মোচ্ছব-ও হলো বটে। তবে স্কুলের বাচ্চাদের নিয়ে এহেন মোচ্ছব কেন সে প্রশ্ন করাই যায়, কোথাও কোমলমতি শিশুদের ‘রাজনৈতিক’ সুবিধালাভের জন্য ব্যবহার করা হয়ে গেল না তো?
শহরের এম জে এন ক্লাব থেকে প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীর এই র্যালি পুলিশ লাইন, মদন মোহন বাড়ি, শহীদবাগ, ডিএম অফিস, কাছারি মোড় হয়ে রাজবাড়ি স্টেডিয়ামে গিয়ে শেষ হয়েছে। সাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে সামান্য চোট আঘাত পেলেও মেডিক্যাল টিম ও পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতায় সমস্ত বাধাবিপত্তি পেরিয়ে শিক্ষার্থীরা শেষ পর্যন্ত নিজ নিজ বিদ্যালয়ে ফিরে যেতে সক্ষম হয়েছে। যদিও তারা এবং তাদের সঙ্গে আসা শিক্ষক শিক্ষিকাগণ সাইকেল র্যালিতে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্য ও সার্থকতা অনুধাবন করল কি না সে প্রশ্ন রয়েই গেল।
দেখেশুনে মনে হলো, এই সরকারের আমলে যে সকল শিক্ষক-শিক্ষিকার বিদ্যালয়ে আগমনের একটা বড়ো উদ্দেশ্য ছিল দলীয় কাজ করা, তারাই প্রশাসনের কাছ থেকে এক বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে হাজির করানোর বরাত পেয়েছিল। কোথাও কোথাও সচেতনভাবে শিক্ষার্থীদের টিফিনের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থকে সংখ্যাতত্ত্বের নিরিখে পাঁচ-ছয়গুণ করে নিজেদের বিদ্যালয়ে নিয়ে এসে তারা সগর্বে বিজয়ীর হাসি হেসেছে এবং বিদ্যালয়ের ‘মিড ডে মিল’ প্রকল্পকে অন্ততপক্ষে একদিনের জন্য হলেও বিদ্যালয়ে সকলের জন্য একটি নির্মল ভোজের আসরে পরিণত করতে পেরেছে।
জানি না, এই প্রকল্পের কতটা মানুষের করের টাকায় আর কতটা বিশ্বব্যাঙ্ক প্রভৃতির দানে বা অনুদানে, তবে অর্থের এই নয়ছয় কি কোনো সৎ উদ্দেশ্যকে সার্থক করতে পারে?
Leave a Reply