অমিত রায়চৌধুরি, কলকাতা, ৩০ সেপ্টেম্বর#
প্রতিদিন পুঁজি আরও প্রবলভাবে আন্তর্জাতিক হয়ে উঠছে, এটা যেমন বিভিন্ন বাস্তব ঘটনাবলী থেকে আমরা অনুভব করি, তেমনি পুঁজিবিরোধী শক্তিও স্বল্পমাত্রায় আন্তর্জাতিকভাবে সংগঠিত হওয়ার কথা ভাবছে বা ভাবতে বাধ্য হচ্ছে। এটা কিছু কিছু ঘটনার মধ্যে সামনে আসে। এইরকম একটা ঘটনা — একজন জার্মান অধ্যাপকের কলকাতায় এসে প্রায় দু-দিন কিছু বামপন্থী কর্মী ও বুদ্ধিজীবীর সামনে মার্ক্সের ক্যাপিটাল নিয়ে আলোচনা করা। বহুল পরিচিত বামপন্থী বুদ্ধিজীবী মাইকেল হাইনবার্গ কলকাতায় রিপন স্ট্রীটের ক্রান্তি প্রেস অডিটোরিয়ামে গত ১৫-১৬ সেপ্টেম্বর সারাদিন ধরে (সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যে সাড়ে ৬টা), মার্ক্সের পুঁজি গ্রন্থের মূল বিষয়গুলি ব্যাখ্যা করলেন। তার সঙ্গে বর্তমান বিশ্বে এই বিষয়গুলির প্রাসঙ্গিকতা এবং তার পাশাপাশি কিছু সীমাবদ্ধতার কথাও উল্লেখ করেন। আলোচনার শুরুতে উনি দুটি তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় বলেন — প্রথমত, জার্মান ভাষায় লেখার অর্থ ইংরেজি অনুবাদে সবসময় সঠিক ভাবে প্রকাশিত হয়নি; দ্বিতীয়ত, মার্ক্স এঙ্গেলসের নাম একসঙ্গে উচ্চারিত হয় বটে, তবে পুঁজির বিশ্লেষণে একটি নির্দিষ্ট গভীরতার পরে তাঁদের মতের ভিন্নতা ছিল, এটা মার্ক্সের মূল খসড়াগুলি দেখলে স্পষ্ট বোঝা যায়।
প্রথম দিন উনি ক্যাপিটালের মূল তাত্ত্বিক বিষয়গুলি পর্যালোচনা করেন। দ্বিতীয় দিনে বড়ো অংশ জুড়ে বর্তমান বিশ্বের অর্থনৈতিক সঙ্কটের বিশ্লেষণে মার্ক্সের লেখার প্রাসঙ্গিকতা বিস্তৃতভাবে বর্ণনা করেন। প্রায় পঁয়ষট্টিজন শ্রোতা প্রবল আগ্রহ নিয়ে এই আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন। প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে অত্যন্ত প্রাণবন্ত পরিবেশের মধ্যে ওই আলোচনাটি সংগঠিত হয়। জার্মানির রোজা লুক্সেমবার্গ ফাউন্ডেশন নামক একটি সংস্থা এই অধ্যাপকের যাতায়াত ইত্যাদির খরচ বহন করার দায়িত্ব নেয়। সেন্টার ফর মার্ক্সিস্ট স্টাডিজ এই ব্যাপারে সাহায্য করে। এনটিইউআই নামক একটি সংগঠন এই আলোচনা সভা সংগঠনে উদ্যোগ নিয়েছিল এখানে।
দু-দিন আলোচনার শেষে উদ্যোক্তারা এবং উপস্থিত শ্রোতারা ভবিষ্যতে এরকম গঠনমূলক উদ্যোগ আরও বেশি বেশি করে হওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা ব্যক্ত করেন। এই ব্যাপারে আরও প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে ইমেল-এ যোগাযোগ করতে পারেন : bodhisatwa.ray@gmail.com
Leave a Reply