দীপংকর সরকার, হালতু, ২৯ আগস্ট#
বর্ধমান জেলার মানকর স্টেশনের কাছে অবস্থিত ণ্ণযমুনা দিঘি’ পশ্চিমবঙ্গের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের এক অনবদ্য জায়গা। হাওড়া স্টেশন থেকে ৬-১৫ মিনিটের ব্ল্যাক ডায়মন্ড ধরে মানকর স্টেশনে নামতে হবে। সেখান থেকে গুসকরাগামী বাসে চেপে ৭ কিমি দূরে এই ণ্ণযমুনা দিঘি’। মিনিট ২০ এই বাসের রাস্তা দিয়ে আসার সময়ই আপনার চোখে পড়বে দুপাশের ধানের খেত, শিরিষ, আম, কাঁঠাল ও শিশু গাছের সারি। মনে হবে প্রকৃতি যেন এখানে নিজেকে সাজিয়ে রেখেছে আমাদের অভ্যর্থনা করতে।
যমুনা দিঘি প্রায় ২৫ হেক্টর জায়গা জুড়ে গড়ে উঠেছে। এখানে রয়েছে প্রায় ৩৯টি জলাশয়, যার এক-একটির আয়তন আনুমানিক ২২ বিঘা। প্রত্যেকটি জলাশয়েই রুই, কাতলা, মৃগেল মাছের চাষ হয়। পশ্চিমবঙ্গের মৎস্য দপ্তরের উদ্যোগে এখানে মাছের চারা ছাড়া হয় এবং তা বড়ো হলে বিক্রি করা হয়। জলাশয়গুলির ধারে ধারে আছে রয়েছে আম, গুলমোহর, কাজুর গাছ। সারিবদ্ধভাবে লাগানো হয়েছে। এর পাশেই রয়েছে একটি লম্বা ক্যানেল, যার দুধারে সারিবদ্ধ গাছ লাগানো রয়েছে। ক্যানেলের ধার দিয়ে রয়েছে হাঁটা পথ। ক্যানেলের মধ্যে বোটিং-এর ব্যবস্থাও রয়েছে।
সকালের দিকে যমুনা দিঘির পরিবেশ অতি মনোরম। সারি সারি পরিযায়ী পাখির এখানে আনাগোনা থাকে। শামুক খোল, হেরণসহ বহু প্রজাতির পাখিদের বিচরণ ক্ষেত্র এই দিঘি। পক্ষীপ্রেমিকদের এটি একটি আদর্শ জায়গা। সকালের দিকে জেলেদের মাছ ধরতেও দেখা যায়।
যমুনা দিঘির পাশেই একটি কালী মন্দির রয়েছে। জলাশয়গুলির ধারে গাছের তলায় রয়েছে সিমেন্টের বাঁধানো বসার জায়গা। চারিদিকে শুধু জলাশয় আর অরণ্য। পাখিদের এখানে মুক্ত আকাশে সারিবদ্ধভাবে উড়তে দেখা যায়। এ দৃশ্য এখন কলকাতার মানুষ আর দেখতে পায় না। শহরের কোলাহল থেকে দূরে নিরিবিলি নির্জনে প্রকৃতির বুকে বসে কীভাবে সময় কেটে যায় তার হদিশ মেলে না।
যমুনা দিঘিতে রাত কাটানোর জন্য একটি লজ, তার নাম ণ্ণআম্রপালি ট্যুরিস্ট লজ’। সল্টলেকের বিকাশ ভবনের তৃতীয় তল থেকে এর বুকিং করা যায় (০৩৩-২৩৩৭৬৪৭০, ২৩৫৮৬৮৩২)।
Leave a Reply