রানাঘাট-শিয়ালদা মেন লাইনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন হল কল্যাণী। নদিয়া জেলার সাবডিভিশনাল শহর হিসেবে কল্যাণী গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। জেলার দু-দুটো বড়ো হাসপাতাল গান্ধী ও নেহেরু কল্যাণী শহরে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী বিধান চন্দ্র রায় কল্যাণীকে পরিকল্পিত শহর হিসেবে হড়ে তোলেন। সেকারণে প্রশাসনিক কর্তাদের কল্যাণী শহরের ওপর একটা বিশেষ মনোযোগ রয়েছেই। সম্প্রতি আবার পূর্ব রেলওয়ে দপ্তর কলুয়ানী স্টেশনকে ‘মডেল স্টেশন’-এর মর্যাদা দেওয়াতে কল্যাণী স্টেশনের জনপরিষেবা (!) অত্যধিক বেড়ে গেছে। সেটাই চোখে পড়ল দিন কয়েক আগে কল্যাণী স্টেশনে বেশ কিছুক্ষণ থাকার সুযোগে। স্টেশনের ১নং প্ল্যাটফর্মে ৩৭টি সিলিং ফ্যান লাগানো হয়েছে। ফ্যানগুলি চব্বিশ ঘন্টা নাগাড়ে ঘুরে চলেছে। যদিও ফ্যানের হাওয়া খুব একটা যাত্রীদের গায়ে এসে পৌঁছচ্ছে না। তবুও তো চলছে! এমনিতেই কল্যাণী স্টেশনটি মেন লাইনের সমস্ত স্টেশনের মধ্যে সবচেয়ে খোলামেলা, প্রশস্ত পরিসর বিশিষ্ট স্টেশন। সেকারণে অহেতুক এতগুলো ফ্যান লাগানোর যৌক্তিকতা খোঁজার একটা অবকাশ থেকেই যায়। প্রাত্যহিক কাজে দৈনিক শিয়ালদা স্টেশনে যাওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ওই স্টেশনে এক থেকে চার নং প্ল্যাটফর্মগুলিতে এই অত্যন্ত দাবদাহের সময়ে মাত্র দু-টি ফ্যান ঘুরতে দেখা গেছে। যদিও তার হাওয়া যাত্রীদের গায়ে এসে পৌঁছায় না। শোনা যাচ্ছে কল্যাণীর সমস্ত প্ল্যাটফর্মগুলিতে অনুরূপ সিলিং ফ্যান লাগানো হবে! বছরখানেক আগে জাপানে পরমাণু বিপর্যয় ঘটে যাওয়ার পর জাপান সরকার শেষ পর্যন্ত সমস্ত পরমাণু বিদ্যুৎ চুল্লি বন্ধ করে দেওয়ার পরও জাপানে বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত হচ্ছে বর্তমানে। অনুমান করা যায়, নাগরিক সচেতনতা বিদ্যুৎ উদ্বৃত্তের অন্যতম কারণ। ভারতবর্ষে বা পশ্চিমবঙ্গে কি নাগরিক অসচেতনতার জন্যই পরমাণু বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে এত চিৎকার?
শমিত আচার্য, শান্তিপুর, ২৮ জ
Leave a Reply