সংবাদমন্থন প্রতিবেদন। ১৪ অগাস্ট, ২০২০। #
বাংলায় রামায়ণ রচয়িতাদের মধ্যে অন্যতম যে কৃত্তিবাস ওঝা, তার জন্মভিটার অনতিদূরে ফুলিয়া বয়ড়া ঘাট থেকে দিন দশ আগে ভাগীরথীর লোকমান্য পবিত্র জল পৌঁছে গেছিল অযোধ্যার রামমন্দিরের ভিতপূজনের জন্য, স্থানীয় বিজেপি সমর্থক ও সঙ্ঘী পরিবারের সদস্যদের উৎসাহে। আজ সেই বয়ড়া ঘাটেই সকাল আটটায় ‘পরিবেশ ভাবনা মঞ্চ’এর ফুলিয়া শাখার সদস্যদের উদ্যোগে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। অবিরল ও নির্মল গঙ্গার দাবীতে, গঙ্গাবক্ষে অবৈধ খনন বন্ধ করা এবং সমস্ত শাখা ও উপনদী সহ গঙ্গার সমস্ত বাঁধ মুক্তির দাবীতে হরিদ্বারের মাতৃসদন আশ্রমের বিগত বাইশ বছরের সত্যাগ্রহ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বর্তমান আশ্রম প্রধান শিবানন্দ সরস্বতীজী অনশনে বসেছেন আজ এগার দিন হল। তারই সমর্থনে এবং লকডাউনের মধ্যে আনা কেন্দ্রীয় সরকারের এনভাইরোমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট বা সংক্ষেপে ই.আই.এ. ২০২০ এর খসড়া প্রস্তাব প্রত্যাহারের দাবীতে সরব হন সভায় উপস্থিত উদ্যোক্তারা। পাশাপাশি গঙ্গার ভাঙন রোধ ও নদীতে প্লাস্টিক ও বর্জ্য খালাস করার বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য মানুষ ও প্রশাসনকে সচেতন হওয়ার বার্তা দেওয়া হয় ওই মঞ্চ থেকে।
উল্লেখ্য, ই.আই.এ. ২০০৬ কে বাতিল করে ২০২০ এর ২৩ মার্চ নতুন খসড়া প্রকাশের মধ্যে দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার দেশের জল জঙ্গল মাটির উপর ভূমিজ মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে আরও এক কদম এগিয়ে থাকে। মূলত এই খসড়া আইন হিসেবে স্বীকৃতি পেলে শিল্প প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে শিল্পপতিদের পরিবেশ মন্ত্রকের কাছ থেকে আগাম ছাড়পত্র পাওয়ার কোনো বালাই থাকবেনা। এছাড়া জনমত নেওয়ারও ক্ষেত্রেও তাদের পরোয়া করতে হবেনা। লকডাউনের মধ্যে মানুষের সভা সমিতি করার অনুমতি না থাকায় বৃহত্তর জনসমাজে সরকারের এমন পরিবেশবিরোধী অবস্থান ও ভূমিকা নিয়ে কথাবার্তা বলার সুযোগ কম। তারই মধ্যে দেশজুড়ে বিচ্ছিন্ন ভাবে হলেও নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। মাতৃসদন আশ্রমের অনশন সত্যাগ্রহের সমর্থনে যেমন গত ৯ অগাস্ট একদিনের অনশনে বসেন বিভিন্ন রাজ্যের মানুষরা, তেমনি করোনা জনিত সতর্কতা ও দূরত্ববিধি পালন করেই পরিবেশ ভাবনা মঞ্চের এই সভা গণসমাজকে সচেতন করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলে অনেকেরই অভিমত।
Leave a Reply