কৃষ্ণা মজুমদার, ২১ নভেম্বর#
২০ নভেম্বর বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গেল সন্তোষপুর স্টেশনের কাছে ষোলোবিঘার নয়াবস্তির প্রায় একশোটি ঘর; নিঃস্ব হয়ে গেল বহু পরিবার। আগুন থেকে উদ্ধার হয়েছে সাবিনা গায়েন ও আবুল গায়েনের চার বছরের শিশুপুত্র ইমরাজের মৃতদেহ। আরও চারজন শিশুর মৃত্যুর কথা শোনা গেলেও তাদের কোনো পরিচয় খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাওয়া যায়নি তাদের পরিবারের কাউকে। প্লাস্টিকের ছাউনি দেওয়া ঘরগুলির কোনো চিহ্ন নেই। আকলিসা বিবি, চাঁদবানু বিবি, সাবিনা গায়েন, রাখিয়া বিবি, নসীব আলি সর্দার, পূর্ণিমা শাসমল, সুজিত হালদার, সুব্রত ভূঁইঞা — এঁরা সবাই কেউ দশ বছর, কেউ বা পনেরো-কুড়ি বছর ধরে এখানে আছেন। এঁদের কথা অনুযায়ী, এখানে প্রায় এক হাজার ঘরে বারো হাজারের মতো মানুষ বাস করে। তিনশো বিঘা জমির কিছুটা কেএমডিএ-র, বাকিটা ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। সেদিন আগুন লাগে দুপুর একটা নাগাদ। তার আগেই বস্তিতে টহল দিয়ে গেছে একদল পুলিশ। বস্তির বাসিন্দা রফিক মোল্লার পাকা বাড়ির দোতলার খড়ের ছাউনি দেওয়া ঘরে সর্বপ্রথম আগুন লাগে। এখান থেকেই মদ-গাঁজা ইত্যাদির ব্যবসা চালাতো রফিক। কদিন আগেই নাকি এই বস্তিকে নন্দীগ্রাম করে দেবে বলে হুমকি দিয়েছিল সে। অনেকেই বলে, রফিকই বস্তিতে আগুন লাগিয়ে পালিয়েছে। কেএমডিএ-র জমিতে নয়াবস্তির লোকেদের জন্য সরকারি ফ্ল্যাট হবে বলে শোনা গিয়েছিল। ৮৮৪টি ফ্ল্যাট হওয়ার কথা। ফ্ল্যাটের জন্য বস্তির লোককে ৫৪০০০ টাকা করে দিতে হবে। অত টাকা দেওয়া সম্ভব নয় বলে বস্তিবাসীরা ঘর ছাড়তে চায়নি। আগুন লাগার কথা শুনে গতকালই মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে এলে তাঁকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। তিনি লাঞ্ছিত হয়ে ফিরে যান। বস্তিবাসীদের দাবি, পুরসভা থেকে দীর্ঘদিন কোনো পরিষেবা না পেয়ে বাধ্য হয়ে তারা সিদ্দিকুল্লা চৌধুরির সংগঠন এআইডিইউএফ-এ যোগ দেয়। এদিন ঘটনাস্তলে যান গণতান্ত্রিক অধিকার সমিতির মেটিয়াব্রুজ-মহেশতলা শাখার কর্মীরা।
Leave a Reply