সংবাদমন্থন প্রতিবেদন, তথ্যসূত্র সংঘর্ষ সংবাদ, ৩১ মার্চ#
মধ্যপ্রদেশের মাহান জঙ্গলের মধ্যে যে কয়লা ব্লকটির নিলাম হওয়ার কথা ছিল — তা বাতিল করল কেন্দ্রীয় সরকার। আগের সরকারের আমলে এই ব্লকটির জঙ্গল ছাড়পত্র আটকে ছিল। পরে জয়রাম রমেশের বদলে জয়ন্তী নটরাজন পরিবেশমন্ত্রী হবার পর পরিবেশমন্ত্রক ব্লকটির ‘জঙ্গল ছাড়পত্র’ দিয়ে দেয়। এরপর ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালে যায় আবেদনটি। সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে ২০৪টি কয়লা ব্লক বন্টন বাতিল হয়ে যায় ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। কিন্তু সাম্প্রতিক কয়লা অর্ডিনান্স (এখন বিল) এর মধ্যে দিয়ে এই ব্লকটি ফের নিলামে উঠবে ঠিক হয়। পরিবেশমন্ত্রক ৭৪টি বিতর্কিত কয়লা ব্লকের মধ্যে মাত্র তিনটি — মাহান, মার্কি মাঙ্গলি ২, এবং নামচিক-নামফুক — এগুলির পরিবেশ ছাড়পত্র বাতিল করেছে।
আগের জমানায় মাহান কয়লা ব্লকটি পেয়েছিল কর্পোরেট এসার। ব্রিটেনে রেজিস্ট্রিকৃত এই কর্পোরেটের বিরুদ্ধে পরিবেশ ধ্বংস করে খনি স্থাপনের অভিযোগ নিয়ে ব্রিটিশ সাংসদদের দ্বারস্থ হওয়ার চেষ্টা চালিয়েছিলেন প্রিয়া পিল্লাই — যিনি গ্রিনপিস নামক এনজিও-টির উঁচুতলার কর্মী এবং মাহান সংঘর্ষ সমিতির নেত্রীস্থানীয়। ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে তার বিরুদ্ধে ‘দেশদ্রোহিতা’-র অভিযোগ আনে সরকার, যদিও আদালত তা বাতিল করে দেয়।
এসার গোষ্ঠী এবং বিড়লাদের মালিকানার হিন্দালকো ২০০৬ সালে এই কয়লা ব্লকটি পেয়েছিল — কাছেই হিন্দালকোর ৬৫০ মেগাওয়াটের অ্যালুমিনিয়াম প্রকল্প এবং এসারের ১০০০ মেগাওয়াটের তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ১৪ বছর ধরে প্রতিবছর ৫০ লক্ষ টন করে কয়লা সরবরাহ করার কথা ছিল।
মধ্যপ্রদেশের মাহান জঙ্গলটি প্রায় ১৬০০ হেক্টর জায়গা জুড়ে। ৫৪টি বন্য গ্রামে প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষের বাস।
সরকারের এই ঘোষণার পর মধ্যপ্রদেশের সিঙ্গরৌলিতে মাহান সংঘর্ষ সমিতি একটি লোকতন্ত্র মহোৎসবের আয়োজন করে ৩০ মার্চ। সেই সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সংঘর্ষ সমিতির সদস্য কৃপানাথ যাদব বলেন, ‘হুমকি, বেআইনি গ্রেফতারি প্রভৃতির মুখে দাঁড়িয়েও আমাদের লাগাতার আন্দোলনের কারণেই সরকার বাধ্য হয়েছে মাহান কয়লা ব্লককে নিলামের আওতার বাইরে রাখতে।’
গ্রীনপিসের প্রিয়া পিল্লাই বলেন, ‘নিয়ামগিরি আন্দোলনের পর মাহান আন্দোলনের জয় দ্বিতীয়বার প্রমাণ করল, মানুষের লড়াই কত কিছু করতে পারে তা আন্দাজ করা যায় না। এই লড়াই দেশব্যাপী জন-আন্দোলনগুলিকে শক্তিশালী করবে।’
Leave a Reply