শান্তনু চক্রবর্তী প্রেরিত এনএফএফ-এর প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে, ১৩ জানুয়ারি#
ঊড়িষ্যার কেন্দ্রাপারা জেলার রাজনগর ব্লকের দাঙমঙ্গলা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত শৈলেন্দ্রনগর গ্রামের তিনজন মৎস্যজীবী রবিবার ১২ জানুয়ারি বুলেটবিদ্ধ হয়। তার মধ্যে শেখ আকবর নামে একজন মারা যান। ঘটনাটি ঘটে গহিরামাথা মেরিন স্যাঙচুয়ারির তালাচুয়া উপকূলের থেকে পাঁচ নটিক্যাল মাইল দূরে গভীর সমুদ্রে।
ওই জেলেনৌকার অন্যতম মাঝি নাসির আলি খান বলেছেন, ‘আমরা মেরিন স্যাঙচুয়ারি এলাকার বাইরে থেকে মাছ ধরে ফিরছিলাম, কিন্তু বনরক্ষীরা আমাদের ধরে এবং গুলি চালাতে শুরু করে। এতে একজন ধীবর মারা যায়।’
সোমবার ১৩ জানুয়ারি রাজনগরের ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসের (ডিএফও) সামনে প্রচুর সংখ্যক মৎস্যজীবী বিক্ষোভ দেখায় এবং নিরীহ ধীবরদের ওপর গুলি চালানো বনরক্ষীদের কড়া সাজা দেওয়ার দাবি তোলে।
নাসির আলি খান জাম্বো মেরিন পুলিশ স্টেশনে সোমবার সশস্ত্র নিরাপত্তা রক্ষীদের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করে।
বনরক্ষীরা অভিযোগ করেছে, ১২টা জেলেনৌকাতে ৫০ জন মাঝি সমুদ্রের মধ্যে তাদের আক্রমণ করেছিল। তাদের একটি প্যাট্রোল বোট ডুবেও যায়। তারা জানায়, তারা বাধ্য হয়ে প্রাণ বাঁচাতে গুলি চালিয়েছে।
যদিও এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়, সশস্ত্র বনরক্ষীরা তাদের শক্তিশালী প্যাট্রোল বোট নিয়ে আক্রান্ত হয়েছে এবং নিরস্ত্র ধীরগতির জেলেনৌকাগুলি তাদের কব্জা করে নিয়েছে। উল্লেখ্য, আগে দুটি ঘটনায় বনরক্ষীরা আরও দুইজন মৎস্যজীবীকে হত্যা করেছিল।
মৎস্যজীবীদের সম্মতি নেওয়া তো দূরস্থান, তাদের সঙ্গে কোনোরকম আলোচনা ছাড়াই ভিতরকণিকা কুমীর স্যাঙচুয়ারি এবং গহিরমাথা কচ্ছপ স্যাঙচুয়ারি তৈরি করে কেন্দ্রাপারা উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকা স্থানীয় ছোটো এবং ঐতিহ্যবাহী ধীরবদের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে বনদপ্তর। জীবিকা চলে যাওয়ায় বেড়ে গেছে দারিদ্র্য, অনাহার। আটজন মৎস্যজীবী এরই মধ্যে আত্মহত্যা করেছে। চার হাজারের বেশি ধীবর গ্রেপ্তার হয়েছে, ৫০০-র বেশি জেলেনৌকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
তবু ভিতরকণিকা-গহিরমাথা এলাকায় উপকূলের জেলে সম্প্রদায়ের জীবিকার লড়াই থেমে থাকেনি।
জাতীয় মৎস্যকর্মী মঞ্চ (ন্যাশনাল ফিশ ওয়ার্কার্স ফোরাম) গহিরমাথায় নিরীহ মৎস্যজীবীদের হত্যায় গভীর বেদনা প্রকাশ করছে এবং দোষী বনরক্ষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং মৃত ও আহতদের পরিবারগুলির পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করছে।
Leave a Reply