ভারতের প্রধানমন্ত্রী এখন জাপান সফরে, সে দেশের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতার জন্য। এই পরিপ্রেক্ষিতে দুটি দেশের সরকারকে লক্ষ্য করে এই চিঠি। এই চিঠিটি সই করেছেন কুডানকুলামের পরমাণু প্রতিরোধ আন্দোলনের নেত্ররবৃন্দ সহ পৃথিবীর অনেক সচেতন মানুষ, ২৮ মে #
আমরা নিম্নলিখিত স্বাক্ষরকারীরা এই পৃথিবীর সচেতন নাগরিক। আমরা ভারত এবং জাপানের মানুষের সমর্থনে এই চিঠি লিখছি।
আমরা ভারত-জাপান পরমাণু সমঝোতা, যা নিয়ে এখন তীব্র দরকষাকষি চলছে, তার সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে। দুটি দেশেরই সরকারের উচিত পরিবেশ এবং মানুষের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ধ্বংসকারী পরমাণু বাণিজ্য থেকে সরে আসা।
জাপানের ফুকুশিমা দুর্ঘটনা থেকে ভারত সরকারের শিক্ষা নেওয়া উচিত এবং বোঝা উচিত যে এই পরমাণু প্রযুক্তি ব্যাপক ঝুঁকির। পরমাণু বিপর্যয় মানুষ এবং পরিবেশের অপূরনীয় ক্ষতি করে। ফুকুশিমা দুর্ঘটনার দু-বছরেরও বেশি সময় পরেও সেখানকার চুল্লিগুলিকে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি এবং ভূমি, বায়ুমণ্ডল এবং জল দূষিত হয়ে চলেছে তার তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ফলে। এর ফল ভুগছে এই প্রজন্ম, আগামী প্রজন্মও এর ফল ভুগবে। নীতি নির্ধারক এবং পরমাণু ইন্ডাস্ট্রিওয়ালাদের অপরাধ-চক্র বেআব্রু হয়ে গেছে।
ভারতকে অবশ্যই দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। এবং তার পরমাণু শক্তির ব্যবহারের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে হবে। পরমাণু শক্তি এখন ৩ শতাংশেরও কম বিদ্যুৎশক্তি সরবরাহ করে। তাকে অতি সহজে প্রতিস্থাপিত করা যায় পুনর্নবীকরণযোগ্য এবং সহনযোগ্য বিকল্পগুলি দিয়ে।
আর জাপানেরও অন্যান্য দেশে পরমাণু প্রযুক্তি রপ্তানি করা বন্ধ করা উচিত। বিশেষত সেই সব দেশের কাছে, যারা এনপিটি এবং সিটিবিটি-তে সই করেনি। ভারত, ভিয়েতনাম, জর্ডন প্রভৃতি দেশে পরমাণু শক্তি রপ্তানি করার বর্তমান নীতিটি অন্যায্য, যখন জাপান নিজেই ফুকুশিমার মাধ্যমে বিশাল অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং জাপানি নাগরিকরা বিশাল বিশাল মিছিল করে চলেছে পরমাণু-মুক্ত ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য। তিনটি চুল্লির মেল্টডাউনে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজও এখনও হয়ে ওঠেনি।
বাচ্চাদের জন্য, মহিলাদের জন্য এবং ভারত ও জাপানের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য, এই পৃথিবীর জন্য, আমরা জাপানের পরমাণু রপ্তানি নীতির স্থগিতাদেশ চাইছি এবং ভারত-জাপান পরমাণু সমঝোতার অবসান চাইছি, এক্ষুনি।
Leave a Reply