কলকাতা পুরসভা এলাকার পথ শিশু ও স্কুলছুট ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে চলা শিক্ষালয়গুলি ১৫ ডিসেম্বর ২০১০ এবং ১৩ অক্টোবর ২০১১ তারিখের তিনটি সার্কুলারের মাধ্যমে ‘সর্ব্বশিক্ষা মিশন’ কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দিয়েছে ৩ মার্চ ২০১২ তারিখ থেকে। এর ফলে বেকার হয়ে পড়েছে কয়েকশো শিক্ষক অশিক্ষক কর্মী।
২০০১ সাল থেকে প্রায় বারো বছর ধরে কলকাতা পুর এলাকায় একেবারে অবহেলিত উপেক্ষিত ফুটপাতবাসী ও ঝুপড়িবাসীদের ছেলেমেয়েদের নিয়ে শিক্ষালয় প্রকল্প শুরু হয় বিভিন্ন এনজিও-দের মাধ্যমে। একেবারে হাতে খড়ি থেকে ক্লাস ফাইভে বড়ো স্কুলে ভর্তির আগে পর্যন্ত এই স্কুলগুলিতে ছেলেমেয়েদের পড়ানো হতে থাকে। এই স্কুলগুলিতে মিড ডে মিলের ব্যবস্থাও থাকে। ফলে এর সাথে যুক্ত ছিল অনেক অশিক্ষক কর্মীও। এই স্কুলগুলিতে যে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা শিক্ষাদানে যুক্ত হয় তাদেরকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খরচেই নিয়মিত ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। সর্বশিক্ষা অভিযানের চেয়ারম্যান কার্তিক মান্না এবং রাজ্য সর্বশিক্ষা মিশনের আধিকারিক ছোটেন লামাকে এসম্পর্কে বিশদ জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি।
১৮ জুন কলেজ স্কোয়ারে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে ছ-দফা দাবি নিয়ে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শামিল হয় ওই স্কুলগুলির সাথে যুক্ত শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীগণ। দাবিগুলি হল :
১। সরকারি স্কুলগুলিতে স্থায়ী চাকুরি
২। পথশিশুদের জন্ম সার্টিফিকেট প্রদান
৩। মিড ডে মিলের কর্মীদের গ্রপ ডি পদে চাকুরি
৪। এনজিওতে কর্মরত কর্মীদের আইনি সুরক্ষা
৫। স্কুলছুট শিশুদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময়ে আমাদের মতামত নেওয়া
৬। কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত ১৪১টি ওয়ার্ডে কমপক্ষে একটি করে আদর্শ শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন।
সমাবেশে উপস্থিত বেশ কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে কথা হল। অসীমা সরকার এবং মানিক সরকার গঙ্গার ধারে বাবুঘাটের ঝুপড়িবাসীদের স্কুলে না যাওয়া বাচ্চাদেরকে ডেকে ডেকে নিয়ে স্কুল শুরু করেছিলেন। একাজে তাঁদের সাহায্য করতেন ‘হকার সংগ্রাম কমিটি’র সদস্যরা। এখন তাঁদের স্কুলগুলি থেকে বাচ্চাদের কর্পোরেশন স্কুলগুলিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জোর করে। ওখানে ছেলেমেয়েদের প্রতি গরজ নেই, আন্তরিকতা নেই, তাই অনেকেই স্কুলে যাচ্ছে না। এরকমই কথা শোনালেন বেকবাগানের জুলেভা পারভিন। তিনি বেকবাগান সিটিজেন ক্লাবের ঘরে স্কুল চালাতেন, প্রায় ৪৫ জন ছাত্র-ছাত্রী ছিল এই স্কুলে। সেটা বন্ধ করে দেওয়ার পর অনেকেই স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। চিড়িয়ামোড় থেকে গঙ্গার দিকে যেতে কাশীপুরে এরকমই স্কুলে পড়াতেন রহমৎ আলী। তাঁদের স্কুলটিতে অনেক ছাত্র-ছাত্রী এবং উপযুক্ত পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও স্কুলের প্রাথমিক শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত শিক্ষকদের নেওয়া হচ্ছে না।
সিনি, আশা, বিকাশ ভারতী, গণউন্নয়ন পরিষদ প্রভৃতি বিভিন্ন নামী এনজিওগুলি এই প্রোজেক্টের সাথে যুক্ত হয়েছিল। এদের তত্ত্বাবধানেই এই স্কুলগুলির শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীরা নিযুক্ত হত। এরা কর্মীদের সাথে কোনোসময়ই সঠিক বেতন দেননি। এখন এই এনজিওগুলি তাদেরকে কোনো প্রকার সহযোগিতা করছে না। কারণ আরেকটা নতুন প্রোজেক্ট সরকারের কাছ থেকে পাবার আশায় এ বিষয়ে তারা মুখ খুলতে নারাজ।
ওদিকে স্কুলগুলি পুনরায় চালু করার কথাও শিক্ষাকর্মীরা বলতে পারছে না। কারণ, তা নাকি সরকারের নতুন চালু করা শিক্ষার অধিকার আইনের পরিপন্থী!
২০০১ সাল থেকে প্রায় বারো বছর ধরে কলকাতা পুর এলাকায় একেবারে অবহেলিত উপেক্ষিত ফুটপাতবাসী ও ঝুপড়িবাসীদের ছেলেমেয়েদের নিয়ে শিক্ষালয় প্রকল্প শুরু হয় বিভিন্ন এনজিও-দের মাধ্যমে। একেবারে হাতে খড়ি থেকে ক্লাস ফাইভে বড়ো স্কুলে ভর্তির আগে পর্যন্ত এই স্কুলগুলিতে ছেলেমেয়েদের পড়ানো হতে থাকে। এই স্কুলগুলিতে মিড ডে মিলের ব্যবস্থাও থাকে। ফলে এর সাথে যুক্ত ছিল অনেক অশিক্ষক কর্মীও। এই স্কুলগুলিতে যে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা শিক্ষাদানে যুক্ত হয় তাদেরকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খরচেই নিয়মিত ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। সর্বশিক্ষা অভিযানের চেয়ারম্যান কার্তিক মান্না এবং রাজ্য সর্বশিক্ষা মিশনের আধিকারিক ছোটেন লামাকে এসম্পর্কে বিশদ জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি।
১৮ জুন কলেজ স্কোয়ারে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে ছ-দফা দাবি নিয়ে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শামিল হয় ওই স্কুলগুলির সাথে যুক্ত শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীগণ। দাবিগুলি হল :
১। সরকারি স্কুলগুলিতে স্থায়ী চাকুরি
২। পথশিশুদের জন্ম সার্টিফিকেট প্রদান
৩। মিড ডে মিলের কর্মীদের গ্রপ ডি পদে চাকুরি
৪। এনজিওতে কর্মরত কর্মীদের আইনি সুরক্ষা
৫। স্কুলছুট শিশুদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময়ে আমাদের মতামত নেওয়া
৬। কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত ১৪১টি ওয়ার্ডে কমপক্ষে একটি করে আদর্শ শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন।
সমাবেশে উপস্থিত বেশ কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে কথা হল। অসীমা সরকার এবং মানিক সরকার গঙ্গার ধারে বাবুঘাটের ঝুপড়িবাসীদের স্কুলে না যাওয়া বাচ্চাদেরকে ডেকে ডেকে নিয়ে স্কুল শুরু করেছিলেন। একাজে তাঁদের সাহায্য করতেন ‘হকার সংগ্রাম কমিটি’র সদস্যরা। এখন তাঁদের স্কুলগুলি থেকে বাচ্চাদের কর্পোরেশন স্কুলগুলিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জোর করে। ওখানে ছেলেমেয়েদের প্রতি গরজ নেই, আন্তরিকতা নেই, তাই অনেকেই স্কুলে যাচ্ছে না। এরকমই কথা শোনালেন বেকবাগানের জুলেভা পারভিন। তিনি বেকবাগান সিটিজেন ক্লাবের ঘরে স্কুল চালাতেন, প্রায় ৪৫ জন ছাত্র-ছাত্রী ছিল এই স্কুলে। সেটা বন্ধ করে দেওয়ার পর অনেকেই স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। চিড়িয়ামোড় থেকে গঙ্গার দিকে যেতে কাশীপুরে এরকমই স্কুলে পড়াতেন রহমৎ আলী। তাঁদের স্কুলটিতে অনেক ছাত্র-ছাত্রী এবং উপযুক্ত পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও স্কুলের প্রাথমিক শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত শিক্ষকদের নেওয়া হচ্ছে না।
সিনি, আশা, বিকাশ ভারতী, গণউন্নয়ন পরিষদ প্রভৃতি বিভিন্ন নামী এনজিওগুলি এই প্রোজেক্টের সাথে যুক্ত হয়েছিল। এদের তত্ত্বাবধানেই এই স্কুলগুলির শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীরা নিযুক্ত হত। এরা কর্মীদের সাথে কোনোসময়ই সঠিক বেতন দেননি। এখন এই এনজিওগুলি তাদেরকে কোনো প্রকার সহযোগিতা করছে না। কারণ আরেকটা নতুন প্রোজেক্ট সরকারের কাছ থেকে পাবার আশায় এ বিষয়ে তারা মুখ খুলতে নারাজ।
ওদিকে স্কুলগুলি পুনরায় চালু করার কথাও শিক্ষাকর্মীরা বলতে পারছে না। কারণ, তা নাকি সরকারের নতুন চালু করা শিক্ষার অধিকার আইনের পরিপন্থী!
শ্রীমান চক্রবর্তী, কলকাতা, ২৯ জুন। প্রতিবেদকের ছবিতে কলেজ স্ট্রীটের সভায় বক্তব্য রাখছেন সমাজকর্মী নব দত্ত
Leave a Reply