• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

বুড়ি-মা’র কথা

May 30, 2013 admin Leave a Comment

রঞ্জন, কলকাতা, ২৮ মে#

১)
মেনকা দালাল।
তাঁর বয়স কত কেউ জানে না। কবে যে কলকাতায় পৌঁছলেন, সঠিক সমাচার তারও নেই। কেন না তিনি নিজেই — ভাষাহারা, মূক। হয়ত অনেকটাই বধিরও। গত শতকের আশির দশকেই তাকে আমি দেখেছি। দেখেছি সংস্কৃতি রাজনীতি চর্চার বহবৎখানা — কফি হাউসের চিভেয়ে ঢোকার মুখের গেটটির পাশে বসে থাকতে। আশপাশের ছোটো ছোটো বই-দোকানে কখনও জল এনে দিতে, কাউন্টার মুছে সাফ করে রাখতেও। সবসময় হাসিমুখ এই বুড়ি-মাকে, বহু মানুষ, ছাত্রছাত্রীই, খাবার টাকাপয়সাও না দিয়ে পারতেন না। যদিও হাত পেতে চাওয়াও ছিল না তাঁর। রাত্রিবাস ছিল কখনও কফিঘরের বারান্দায়, কখনও বন্ধ দোকানের চৌকিতে।
অনেক পরে জেনেছি — আবার পরিচয়ও হয়েছে — তার এক এলেও আছে — মহেন্দ্র, দিনমজুর। বিপত্নিক। ঘরখানা হাসনাবাদের রেজিপুরে। কিন্তু দেশজুড়ে ছড়ানো আরো অনেক দিনমজুরের মতোই তার জীবনও অনিশ্চিত, নৈরাজ্যময়, ভবঘুরে। বেঁচে থাকাটুকু অবশ্য বুড়িমার থমকায়নি সেভাবে। সে সমস্যা শুরু হয় ২০০৭ থেকে, যখন থেকে একের পর এক শারীরিক সংকটে পড়তে লাগলেন। চিকিৎসাও চলল, কখনও কলকাতার মেডিক্যাল কলেজে, কখনও কামারহাটির স্টেট জেনারেল হাসপাতালে, কখনও হাওড়ার মৌরিগ্রামের ইরিমে, ফের কলকাতার মানিকতলায় বাগমারীতে প্রতাপনারায়ণ রায় মেমোরিয়াল হোমিওপ্যাথ হাসপাতালেও। ২০০৭ থেকে ২০১১-র মাঝপর্বে প্রায় সাত বছরে ওইসব হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন বুড়ি-মার দু-মাস থেকে এমনকি কাছাকাছি বছরখানেকও ছাদের নিচে বাস আর দু-বেলা সুনিশ্চিত আহারের সুযোগও মিলে যায়।
ভাঙা শরীরে আহার আর বসবাসের একটু সুনিশ্চিতি দেবার জন্য বুড়িমাকে প্রথমে বেলঘরিয়ার ভগবতী চ্যাটার্জি স্ট্রীটের নিয়মিত অর্থসাহায্য আর চিকিৎসা সহায়তার বিনিময়ে এক পশুপালক পরিবারে আবার চেতলাতে ‘ঈশ্বর সংকল্প’ নামে একটি মহিলা আশ্রয়কেন্দ্রেও থাকার বন্দোবস্ত করি। ২০১২ -র জুলাই মাসের পর তাঁর নতুন ঠিকানা হয় — ‘লোকনাথ সেবাশ্রম’ — কল্যানী।
এই ৫-৬ বছর সময়পর্বে বুড়িমা ভুগেছেন অর্শ, কিডনির অসুখ, কফিহাউসের সিঁড়ি থেকে পড়ে ছোট্ট একটা স্ট্রোকও হয় তাঁর। এইসব অসুখেরই চিকিৎসা করা ও উপশম করা অনেকদূর পর্যন্ত সম্ভব হয়েছে।
বয়সজনিত কারণে আর কথা বলতে না পারার কারণেও তাঁর নিত্যকর্মগুলির জন্য একজন আয়াও রাখতে হয়েছে — গত প্রায় একবছরের কাছাকাছি সময়। এসবের জন্য মাসিক প্রায় সাড়ে ন-হাজার টাকা অর্থ সংকুলান করতেই হয়। তা করে যেতেও হবে যতদিনই তিনি বেঁচে আছেন।
বেশ কিছু মানুষ এ ব্যাপারে সাহায্য করেছেন, করছেন। কিন্তু আরও সহায়তা এবং একটা নিয়মিত সহায়তা ব্যতিরেকে এই কাজ চালিয়ে যাওয়া দুরূহও হয়েছে বরাবরই।
২)
বৃদ্ধাশ্রম — লোকনাথ সেবাসদন। কমবেশি জনা দশ বৃদ্ধ বৃদ্ধার খাওয়া থাকার বন্দোবস্ত। একটা বাড়ির এক তলায় আশপাশের অন্যান্য বৃদ্ধাশ্রমের তুলনায় অনেক স্বল্পব্যায়ের। এখানে আলাদা করে কোনও ডিপোজিট মানি জমাও দিতে হয় না।  মাসের আগাম খাওয়া-থাকার খরচা ছাড়া। কিন্তু আর্থিক সঙ্গতির অভাবে পরিষেবার কোনও পরিকাঠামোই নেই। আবাসটির স্বত্তাধিকারীনীই পরিচালনা থেকে দেখভাল বাজার, খাবার তৈরি করা, পরিবেশন — একলাই করেন। সংস্থাটি রেজিস্টার্ড এবং বার্ষিক হিসাবপত্রও যথাযথ থাকার পর নানারকম আবেদনেও — সরকার বা কোনও এনজিও বা ব্যক্তির অনুদান মেলেনি। একটা ঘজরে থাকেন তিনজন মহিলা। অন্যঘরে বাকিরা পুরুষ। এখন দু-জনই আবাসিকা। বয়স্ক, অশক্ত এবং বয়সজনিত নানা রোগেও ভুগছেন। থাকা-খাওয়াটুকু ছাড়া — নেই কোনও বিনোদনও।
এখানেই বুড়িমার ঠিক উল্টোদিকেই শয্যা শ্রীমতি রানী সেন-এর। পাঁচ-ছ’ বছরের বাসিন্দা। ৭৫ পেরিয়েছেন। খাওয়া কমছে, মলমূত্র ত্যাগেও নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছেন। ছেলে-মেয়ে সকলে প্রতিষ্ঠিত চাকুরে — কেউই মা-য়ের খোঁজ নেয়না। চাকরি জীবনের পেনশনটুকুই তোলেন আবাসের অধিকারীনী — তাঁর খাওয়া আর থাকাটুকু চলছে। চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। ক্রমাগতই শয্যাঠাঁই হয়ে পড়ে থাকেন — দিনরাত। স্মৃতি লোপ পেতেও শুরু করেছে। ছেলেমেয়েদের নম্বরে ফোন করলে তাঁরা ফোনও ধরেন না। রীনা সেন এখনও পড়তে ভালোবাসেন। আগে তাঁর বেশ কিছু নিয়মিত ওষুধ চলত শারীরিক কারণে। বাড়ির মানুষজন সবরকম যোগাযোগ ছিন্ন করার পর সেসবও বন্ধ হয়েছে। কলকাতার টবিন রোডে (বরানগর) বাড়ি ছিল এঁর। আশ্রমের স্বত্ত্বাধিকারীনী বনলতাদি চান — সহৃদয় কোনও চিকিৎসক যদি রীনাদি এবং আবাসের অন্যান্য আবাসিকদেরও প্রতিমাসেই কিছুটা নিয়মিত চিকিৎসা-সহায়তা করেন।
৩)
শ্যামবাজার মেট্রো পথের সুড়ঙ্গে ঢোকার মুখেই, তাকে প্রায় নুইয়ে পড়া অতিশীর্ণ দেহে বসে ভিক্ষে করতে হয়ত দেখেছেন অনেকেই। বয়স যত বাড়ছে শরীর আরও কমজোরী। ক’দিন আগেই ভর্তি হতে হয়েছিল আরজিকর হাসপাতালে। একা একাই বাস — ক্যানাল ইস্ট রোডের খালপাড়ের ঝুপড়িতে। খাল-সংস্কার শুরু হওয়ায় — এখন সে ঝুপড়িও গেল। এখন এ মন্দির ও মন্দিরের দালান-ঠাঁই এই বুড়ি-মা। ঘর ছিল কাটোয়ার গোপালপুরে, সেখানে ছোটো মেয়ে থাকে — একটু টাকাপয়সা জমলেই পাড়ি দেবেন সেখানে — মনের এই ইচ্ছে, নৈলে এখানে ঘর কই? ৪০০ টাকাতেও ঝুপড়ি বস্তির ঘর মেলে না। এত বয়সে এখনও ঠিকানা খোলা আকাশের নিচের ফুটপাথ আর সইতেও পারেন না। ফুটপাথের জীবনের অন্ধকার কত মুখ বুঁজে সঅয়া যায়?
এইরকম মানুষ — এক নয় অসংখ্য। তবু যে রাষ্ট্র এদের দায় নেয়নি, সমাজও তারই সঙ্গে তাল ঠুকবে এমন অভিপ্রায়ে ভাবতে হবেই আমরাও কি তাল মেলাবো? সেটা কতদূরই বা মনুষ্যোচিত হবে?
কেবলই ব্যক্তিগত হতে হতেও কী পারা যাবে শেষ পর্যন্ত পরিত্যক্ত জীবনের পরিণতি এতটুকুও এড়াতে?

মানবাধিকার ঠাঁই, বুড়ি-মা, বৃদ্ধাশ্রম

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in