১৫ মে, অমিতা নন্দী#
হঠাৎ করেই খবরটা পেয়েছিলাম আর্থকেয়ার বুক্স-এর ভরত মানসাটার কাছে — বীজ-উৎসব হচ্ছে ২ এবং ৩ মে এন্টালিতে বেঙ্গল পটারির কাছে সেবাকেন্দ্রে। আমি আর জিতেন গেলাম ২ তারিখ সকাল সাড়ে দশটায়। গিয়ে দেখি ওই চত্বরে বেশ কিছু লোকজন জড়ো হয়েছে, উঠোনে বাঁদিকের একটা টেবিলে সবার নাম নথিভুক্ত করা হচ্ছে, তারপরেই সবাইকে একটা করে বীজের প্যাকেট গিফ্ট করা হচ্ছে। আমরা পেলাম নটে এবং কুমড়োর বীজ। পেছনের সাজানো গোছানো অংশে একটা লম্বা গাছের আদলে তৈরি হয়েছে ‘বীজ বৃক্ষ’, একদিকে কিছু টেবিলে বইপত্রের প্রদর্শনী, আর একটা টেবিলে ‘অনগ্যানিক’ সংস্থার পক্ষ থেকে রাখা আছে নানারকম চাল ও চিঁড়ের নমুনা (ঢেঁকিছাঁটা চাল সহ), ডানদিকের বিল্ডিঙের একতলার বড়ো ঘরে ও বারান্দায় নানান টেবিলে আছে অর্গানিক চাষের কিছু ফসলের নমুনা, বিভিন্ন দেশীয় ধানের বীজ, চাল, মুড়ি, খই, মুড়কি, কিছু সবজি, মধু ইত্যাদি ইত্যাদি। অনেকেই সেগুলি দেখছে, কেউ কেউ কিছু কিনছে। আমরা প্রথমে একটু ঘুরেফিরে দেখা শুরু করতেই মাইকে ঘোষণা হল — উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হচ্ছে, সবাই মেলা প্রাঙ্গণে চলে আসুন। তখন বেলা এগারোটা বাজে।
উদ্যোক্তারা জানালেন, ভারতবর্ষের বেশ কিছু রাজ্য থেকে জৈবচাষিদের প্রতিনিধিরা এসেছেন এই উৎসবে। প্রত্যেক রাজ্যের, প্রত্যেক অঞ্চলের এক একজন বয়োজ্যেষ্ঠ চাষিকে ওখানে ডাকা হল, তাঁরা এক এক করে বিভিন্ন রকম বীজের ছোটো কলসি ওই বীজ-বৃক্ষের ডালে বেঁধে দিলেন — সবার হাততালির মধ্যে। এরপর সবাইকে আহ্বান করা হল দোতলার সভাঘরে আলোচনায় হাজির হতে।
ঝকঝকে মার্বেলে মোড়া দোতলার এয়ারকন্ডিশনড হলঘরে কিছুটা দূরে দূরে চেয়ারগুলিকে সাজানো হয়েছে গোলাকারে। জানানো হল, এখানে তিনটে গ্রুপে আলোচনা হবে। একদিকে হবে হিন্দিতে আর বাকি দুটি গ্রুপে বাংলায়। সব গ্রুপেই একটা করে হ্যান্ড মাউথপিসের ব্যবস্থা, তাতে নিজেদের গ্রুপের কথা শুনতে একটু অসুবিধা হচ্ছিল। তিনটি গ্রুপের আলোচনার বিষয়বস্তুও আলাদা — ১। মার্কেটিং; ২। উপকরণ এবং ৩। অধিকার। আমরা বসলাম দ্বিতীয় গ্রুপে, অবশ্যই নিজেদের পছন্দমতো।
Leave a Reply