২৬ ফেব্রুয়ারি প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান মার্কণ্ডেয় কাটজুর কাছে প্রেরিত সিভিল লিবার্টিজ মনিটরিং কমিটি, ইন্ডিয়ার চিঠির অংশ, অনুবাদ জিতেন নন্দী#
হায়দ্রাবাদ বিস্ফোরণের পরেই আঞ্চলিক (তেলেগু) ও জাতীয় (হিন্দি ও ইংরেজি) ইলেকট্রনিক মিডিয়া ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিশেষজ্ঞ মতামত সহ লাইভ কভারেজ শুরু করে দেয়। তেলেগু চ্যানেলগুলিতে তেলেগু ও উর্দু সংবাদ বুলেটিন টেলিকাস্ট করা হচ্ছিল, কিন্তু দুটো সম্পূর্ণ আলাদা। তেলেগু বুলেটিনে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছিল, অথচ উর্দু বুলেটিনের রিপোর্টিংয়ে তারা ওই ধরনের ঘৃণা প্রকাশে খুব সতর্ক ছিল। যখন গোটা শহরটা আতঙ্কিত ও বিষাদগ্রস্ত, জাত-ধর্ম নির্বিশেষে মানুষ পরস্পরের নিরাপত্তা খুঁজে নিচ্ছিল। সাধারণ মানুষ সঙ্গে সঙ্গে মাঠে নেমে পড়ল। তারা আহতদের সাহায্য করার চেষ্টা করছিল এবং আহত ও মৃতদের কাছাকাছি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছিল। কারা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে তা নিয়ে তখন তাদের ভাবার অবকাশ ছিল না। বিস্ফোরণে আক্রান্ত মানুষকে বাঁচানোই ছিল তাদের চিন্তা। কিন্তু মিডিয়া সেই চিন্তার শরিক না হয়ে নিজেদের কায়দায় রিপোর্টিং চালিয়ে যাতে থাকে.
একই সময়ে মিডিয়া লাইভ রিপোর্টিংয়ের সঙ্গে কিছু অনুমান প্রচার করতে থাকে যা বরাবরের মতোই একটা সমাজগোষ্ঠী অর্থাৎ মুসলমানদের দিকেই ধাবিত হয়। তারা তদন্ত শুরু করে দেয়, সিদ্ধান্তে পৌঁছে যায় এবং মিডিয়া-কক্ষের বিচার শুরু হয়ে যায়। তাদের নিজস্ব সূত্র অনুযায়ী তারা বিস্ফোরণের পিছনে সংগঠনগুলির নাম প্রকাশ করতে থাকে এবং কিছু মুসলিম যুবকের নাম বলে। তারা এটাও বলে এই বিস্ফোরণের পরিকল্পনা নাকি অক্টোবর মাসেই হয়েছিল। মিডিয়া ঘটনাটাকে ঠেলে নিয়ে এই বিস্ফোরণকে আফজল গুরু ও আজমল কাসবের ফাঁসির প্রতিশোধের সঙ্গে যুক্ত করে দেয়।
রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ওখানে পৌঁছানোর আগেই মিডিয়া ও হিন্দুত্ববাদীরা জড়ো হয়ে যায়। তার ফলে বোমা বিস্ফোরণের প্রমাণাদি নষ্ট হয়ে যায়। পুলিশ ওখানে পৌঁছালেও তারা হিন্দুত্ববাদী ও মিডিয়ার লোকেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি।
প্রথমত, মিডিয়া ঘোষণা করে বোমা বিস্ফোরণের আসল টার্গেট ছিল সাইবাবা মন্দির (কী করে মিডিয়া এই রিপোর্ট পেল তা কেউ জানে না)। তারপর মিডিয়া বিস্ফোরণের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে শুরু করে। এমনকী তারা এটাও বলে যে ঘটনার দুদিন আগে থেকেই বোমা প্ল্যান্টাররা ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিল। মিডিয়া বিস্ফোরণে যুক্ত ব্যক্তিদের নামও ঘোষণা করে দেয়। সমস্ত চ্যানেলই একই উপসংহারে পৌঁছায়। কিন্তু রিপোর্টিংয়ের ধরন দেখে মনে হচ্ছিল যে তারা সবই আগে থেকে জানত। মিডিয়া এই বিস্ফোরণে মূল সন্দেহজনক হিসেবে এক আহত মুসলিম যুবককে দেখাচ্ছিল। তাঁর নাম মির্জা আবদুল ওয়াসি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তিনি এই দ্বিতীয়বার বোমা বিস্ফোরণের শিকার হলেন। মক্কা মসজিদ বিস্ফোরণেও তিনি আহত হয়েছিলেন। …
Leave a Reply