দিল্লিতে ১৬ ডিসেম্বর যে যৌনহিংসার ঘটনা ঘটে, সেই সূত্রে মেয়েদের ওপর যৌনহিংসার ঘটনায় অপরাধীদের শাস্তিদানের ব্যবস্থাকে তরান্বিত করার লক্ষ্যে ভারত সরকার বিচারপতি জে এস ভার্মার নেতৃত্ব একটি কমিশন নিয়োগ করে। এই কমিশন প্রধানমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট পেশ করে ২৩ জানুয়ারি ২০১৩। এই রিপোর্টের ‘অফেন্সেস এগেনস্ট উইমেন ইন বর্ডার এরিয়াজ/কনফ্লিক্ট জোনস’ অংশে ১০ ও ১১নং ধারায় যা বলা হয়েছে, তার বঙ্গানুবাদ করে এখানে প্রকাশ করা হল। ১২নং ধারায় ৮টি সুপারিশও করা হয়েছে।#
১০। মেয়েদের বিরুদ্ধে যৌনহিংসা সম্বন্ধে আমরা এখন এক অতীব গুরুত্বপূর্ণ অথচ প্রায়শই অবহেলিত এলাকায় দৃষ্টিপাত করব। সেটা হল সংঘর্ষপূর্ণ এলাকাগুলিতে মেয়েদের আইনি নিরাপত্তার বিষয়। আমরা আমাদের রিপোর্ট প্রস্তুত করার পর্যায়ে কাশ্মীর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, ছত্তিশগড়, উড়িষ্যা এবং অন্ধ্রপ্রদেশের ব্যাপক সংখ্যক মেয়েদের দুর্দশা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে শুনে এই বিষয়ে আমাদের মত গঠন করেছি। যেখানে দরিদ্র মানুষের সম্বন্ধে জানানোর জন্য নাগরিক সমাজ রয়েছে এবং তাদের কাজে লাগানো যায়, তা সত্ত্বেও রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই অঞ্চলগুলিকে ‘সংঘর্ষের এলাকা’ হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা এবং রাষ্ট্র সম্পর্কে ক্রমবর্ধমান অবিশ্বাস নিয়ে আমরা অবশ্যই গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
১১। শেষোত, আমরা লক্ষ্য করছি যে আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষার কর্তব্য পালনের প্রক্রিয়ায় নিয়মাবদ্ধ অথবা বিচ্ছিন্ন যৌনহিংসার জন্য শাস্তি না পাওয়া আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট দ্বারা আইনসম্মত ঘটনা হয়ে উঠেছে। এটা স্বীকার করতেই হবে যে, আমাদের দেশের অন্য যে কোনো অংশে মেয়েরা যেসব নিরাপত্তা ও মর্যাদা পায়, তা সংঘর্ষের এলাকাগুলিতেও মেয়েরা পাওয়া উচিত। ভারত ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর দি প্রোটেকশন অব অল পার্সনস ফ্রম এনফোর্সড ডিস্যাপিয়ারেন্স’-এ স্বাক্ষর করেছে, এটার মর্যাদা আমাদের রক্ষা করা দরকার। আমরা তাই বিশ্বাস করি যে এই ধরনের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণ করলে তার ফলাফল হবে সুদূরপ্রসারী। তাতে কেবল সংঘর্ষের এলাকাগুলিতে মেয়েদের প্রাপ্য অধিকার কায়েম হবে না, বরং ওইসব এলাকায় প্রশাসনের প্রতি বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে পারা যাবে যার ফলে তাদের মূলস্রোতে নিয়ে আসা যাবে।
Leave a Reply