২৩ আগস্ট, বিশাল সাও, আলমপুর, মেটিয়াবুরুজ#
বাবা কাজে গিয়েছিলেন সকালবেলা আটটা নাগাদ ফোর্ট উইলিয়ামে। সওয়া চারটে নাগাদ ছুটি হয়েছিল। সাড়ে চারটে নাগাদ সিগারেট কল আর বিএনআর-নিমকমহলের ক্রসিংয়ের ওখানে দাঁড়িয়েছিলেন। রাস্তা জ্যাম ছিল, সিগনাল ছিল। তাই বাঁ সাইডে বাবা দাঁড়িয়েছিলেন। সিগনালটা খুলেছে, গাড়িটা স্টার্ট হয়েছে। ট্রেলারওয়ালা বুঝতে পারেনি যে বাবা দাঁড়িয়ে আছেন, ও বাঁদিকে টার্ন নিয়েছে আর পিছনের ডালা থেকে বাবার মাথায় লেগেছে। বাবা ওখানে পড়ে গেছেন, মুখ থেকে আওয়াজ বেরোচ্ছিল না। সামনেই ট্রাফিক গার্ড, ওরা ফোন করেছে ওয়েস্ট পোর্ট থানাতে। ওখান থেকে পুলিশ এসে বাবাকে নিয়ে গেছে এসএসকেএম-এ। বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলজি এসএসকেএম-এর কাজ করে। ওখানে ডায়েরি নিয়েছে, ডাক্তার এসেছেন আর ওর মধ্যেই বাবা শেষ হয়ে গেছেন।
রবীন্দ্রনগর থানার অফিসার আমাদের বাড়িতে এসেছিল সাতটার সময়। এসে আমাকে বললেন যে ওয়েস্ট পোর্ট থানার বড়োবাবু তোমাকে ডাকছেন। ওখানে গেছি, বাবার আই কার্ড প্যান কার্ড ঘড়ি টাকাপয়সা ছিল, সেগুলো দিলেন আর বললেন যে এরকম অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে, তোমার বাবা এক্সপায়ার করে গেছে …। ওয়েস্ট পোর্ট থানায় এফআইআর (FIR No. 184 of 18.8.2015) করলাম। লালবাজার থেকে এফএসটি ডিপার্টমেন্ট এসেছিল। ওরাই সব এফআইআর লিখেছে। গাড়ির নাম্বার জানা গেছে (NL02L4761)। ড্রাইভার পালিয়েছে। গাড়ির কাগজপত্র গাড়িতে কিছু ছিল না। মালিক কাল লালবাজারে এফএসটি ডিপার্টমেন্টে দেখা করবে। যদি ওর কাগজপত্র ওকে থাকে, তাহলে ইনসিওরেন্স থেকে যা কিছু হবে। যদি ওর কাগজপত্র ওকে না থাকে, তাহলে অফিসার আমার সঙ্গে ওর ফেস-টু-ফেস কথা বলিয়ে দেবে। এখনও মালিকের নাম জানা যায়নি।
বাবা কুড়ি বছর ধরে সাইকেলে ফোর্ট উইলিয়ামে যাতায়াত করছেন। আর ছ-বছর ডিউটি ছিল। ওখানে ডিফেন্সে কারপেন্টারের কাজ করতেন। গতকাল সকালে আর একটা অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে ওই একই জায়গায়। আর্য্য পরিষদের টিচার অরবিন্দ কুমার মাহাতো বাইক নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন সকাল সাতটার সময়। ট্রেলার এসে পিষে দিয়েছে। উনিও মারা গেছেন। ওখানে হাইড রোড থেকে সিক লাইনের মধ্যে এক মাসে সাতটা অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে গেছে। এই ট্রেলারগুলোতে খালাসি থাকে না। ওদের কাগজপত্রও ঠিক থাকে না।
Leave a Reply