বাজের হাত থেকে বাঁচতে কী করবেন
- ঘরের পাশে, স্কুল-কলেজ-হাসপাতাল-বাজার-হাট প্রভৃতি যেখানে মানুষ জড়ো হয়, সেখানে উঁচু করে বজ্রনিরোধক দণ্ড অর্থাৎ লোহার ত্রিশূল-পঞ্চশূল-বহুমুখী শূল লাগান। খরচ নামমাত্র, যে কোনো নির্ভরযোগ্য ইলেকট্রিক মিস্ত্রি কাজটা করে দিতে পারবে। দণ্ড ঠিক আছে কিনা তা মাঝেমাঝে মিস্ত্রিকে দিয়ে চেক করান।
- ফাঁকা মাঠে বিদ্যুৎ ঝলকানি দেখলে শুয়ে পড়ুন বা বসে পড়ুন। মাথা নিচু করুন। মাথা উঁচু যা কিছু, মানুষ, বাড়ি বা গাছ — বাজের পছন্দ। কাছাকাছি নিরাপদ আশ্রয় না দেখলে লাফিয়ে লাফিয়ে ছুটুন। পা মাটিতে বেশিক্ষণ রাখবেন না। এতে বজ্রাহত হওয়ার সম্ভাবনা পঞ্চাশ ভাগ কমে যায়।
- রাস্তায় থাকলে আকাশে বজ্রগর্ভ মেঘ দেখলে কাছাকাছি কোনো পাকা বাড়ি দেখে ঢুকে পড়ুন। দেওয়াল বা দরজা জানলা ঘেঁষে না দাঁড়ানোই ভালো।
- বাড়ির ইলেকট্রিক হিটার, ইস্ত্রি, গিজার, ফ্রিজ, টিভি, টেলিফোন বন্ধ রাখাই ভালো। এরা বাজ টানে।
- কেউ বজ্রাহত হলে, মুখে মুখ লাগিয়ে ফুঁ দিন। বুকে ম্যাসাজ করুন। কিছুটা গরম দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করুন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাছের কোনো চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যান। আহতকে সাহস দিন।
- গ্রামে গ্রামে সরকারের মুখের দিকে না তাকিয়ে পাড়াগত উদ্যোগে বা নিজ উদ্যোগে চাষ-জমি, খোলা মাঠে বজ্র নিরোধক লাগান।
বাজের হাত থেকে বাঁচতে কী কী করবেন না
- ফাঁকা মাঠ, নদী, পুকুর, সমুদ্র, বাড়ির ছাদ, জমি, বা পাহাড়ের ওপরে থাকবেন না।
- ধুধু মাঠের মাঝখানে একটা মাথা উঁচু গাছ, আম কি জাম — তার তলায় দাঁড়ানোই সবচেয়ে বিপজ্জনক। ওই অঞ্চলে যদি কোথাও বাজ পড়ে তো ওই গাছেই পড়বে। তাই ওই গাছের নিচে আশ্রয় নিলে বজ্রাহত হওয়ার সম্ভবনা বেশি। ফাঁকা মাঠে কখনও গাছতলায় আশ্রয় নেবেন না।
- ফাঁকা মাঠে থাকাকালীন বাজ পড়তে দেখলে ছাতা মাথায় দেবেন না। মাথা খোলা গাড়িতে থাকবেন না।
- আকাশে বজ্রগর্ভ মেঘ থাকলে টিভির অ্যান্টেনা, ইলেক্ট্রিক পোস্ট, টেলিফোনের খুঁটি, কাঁটাতারের বেড়া, কাপড় শুকোতে দেওয়া লোহার তার, হাই টেনশন বিদ্যুতের খুঁটি, জলের পাইপ ছুঁয়ে থাকবেন না। ওগুলো বাজ টেনে নিয়ে আপনাকে তড়িতাহত করতে পারে। বজ্র নিরোধক দণ্ড তো কখনোই ছোঁবেন না।
- কাঠের আড়াল বাজকে ঠেকাতে পারে না। তাই কাঠের নৌকা, কাঠের বাস নিরাপদ আশ্রয় নয়।
- বাজ পড়ার সময় রেললাইন ধরে হাঁটবেন না। ধাতব কিছু উঁচিয়ে ধরবেন না।
- একান্ত দরকার না থাকলে বাজ পড়ার সময় টেলিফোন ছোঁবেন না।
পরামর্শগুলি এবং ছবিটি বিষ্ণুপদ চক্রবর্তীর লেখা পুস্তিকা ‘বাজের হাত থেকে কীভাবে নিজেকে বাঁচাবেন’ থেকে নেওয়া। প্রকাশক বাউলমন প্রকাশন, কলকাতা ১৯।
Leave a Reply