আজব কাণ্ড! বদরতলার গঙ্গা থেকে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ মানুষ ভিড় করে কাঁচা কয়লা তুলছে। বাচ্চারা অল্পসল্প, কিন্তু বড়ো মেয়ে-বউ-ছেলেরা এক-একজন এক-দুই বস্তা কয়লা তুলছে। গড়ে ১ মণ হলে হিসেব মতো দিনে দু-আড়াইশো মণ কয়লা উঠছে।
ছেলেবেলায় আমি নিজেও কয়লা তুলেছি গঙ্গা থেকে। আমরা বলি বোদকাঠ, মানে গাছের পচা অংশ কালো হয়ে যায়, সেটা দিয়ে জ্বালানি ভালোই হত। এছাড়া কয়লাও পাওয়া যেত অল্পসল্প। সেই কয়লা কুড়িয়ে আমরা চার আনা সের দরে বিক্রি করতাম। তখন ভাবতাম স্টিমার-লঞ্চ থেকে ফেলে দেওয়া কয়লা ভেসে এসেছে।
কিন্তু এখন কয়লার পরিমাণ দেখে আশ্চর্য লাগছে। গতবছর উঠেছিল ট্যাঁকের মাথা বাগমারি ঘাটের ওদিকে। এবছর উঠছে বদরতলার জমিদার কৈলাস মিস্ত্রির বাড়ি থেকে বদরপীরের ঘাট পর্যন্ত। পূর্ণিমার আগের একাদশীর দিন (৩ এপ্রিল) থেকে গঙ্গায় চড়া পড়লে লোকের ভিড় জমে যাচ্ছে। বান হলে জলটা আলগা হয়, তখন কাঁচা কয়লা উঠে আসে। ভরাকোটালে বেশি কয়লা পড়ে।
এই ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে মাটির নিচের ভূ-স্তর থেকে কয়লাটা আসছে।
মুদিয়ালি স্কুলে ক্লাস ফাইভে পড়ে হিমাদ্রী মণ্ডল। সে বড়ো বড়ো কয়লার টুকরো হাতে তুলে দেখালো। আর এক কিশোর অর্ণব পাল বলল, সে আগের বছর ৪২ কেজি ওজনের একটা চাঙড় পেয়েছিল ঘাট থেকে এক কিমি ভিতরে। মাটি কাটার লোকের মাথায় তুলে দিয়ে পারে নিয়ে এসেছিল সেই চাঙড়টা। এই কয়লায় রান্না হচ্ছে বটে, তবে ধোঁয়া বেশি হয়।
অঞ্জন পাল, বদরতলা, মেটিয়াব্রুজ, ১৪ এপ্রিল। ছবি জিতেন নন্দী
Leave a Reply