৯ জুলাই, মিলের শ্রমিকদের বক্তব্য#
গতকাল মিটিং হয়েছে শ্রমদপ্তরে। সেখানে বি জি বিড়লা জানিয়েছেন, ১০ তারিখ পাট ঢুকবে মিলে। অনেক অনুরোধ করার পর, মানে পায়ে ধরার পর তিনি এটা বলেছেন। উনি কারোর কথা শুনছেন না। ১১ তারিখ মিল রানিং হবে। লাস্ট পেমেন্টটা ১৫ তারিখ হবে। এদিকে আমরা যে হাজিরি দিচ্ছি, ওগুলোর জন্য বলছেন, ভাবব। কী আর করা যাবে? আমাদের পঞ্চাশ টাকা নেই যে আমরা গাড়িভাড়া করে যাব। সকালে একটা মিটিং হয়েছে, কী একটা ‘সুরক্ষা মঞ্চ’ না কী বলে, আমরা যখন হাজিরি দিয়ে আসছি, সকালবেলায় ওরা মাইকে করে বলে গেছে, মানে বি জি বিড়লার পায়ে অনেক তেল মাখবার পরে উনি বলেছেন, ঠিক আছে, আমি ১০ তারিখ পাট পাঠাচ্ছি। ১১ তারিখ মিল চলবে। আমরা শোনা খবর বলছি। সব ইউনিয়নের লোক মিটিংয়ে গেছে। আমাদের স্পিনিং ডিপার্টমেন্ট থেকে জব্বার নেই বলে আরশেদ গিয়েছিল মিটিংয়ে।
আমাদের পেটে ভাত নেই। আর কী হবে? তার চেয়ে বাবা বন্ধই করে দে! আমাদের পুঁজি চলে গেছে। এ শালাদের কী বিশ্বাস আছে, যে কেউ আসবে লুটে খাবে। আঠারো-কুড়িটা ছেলের নামে কেস করেছে। সামনের মাসের ৭ তারিখ কোর্টে হাজিরা দিতে হবে।
৯ জুলাই, জিতেন নন্দীর প্রতিবেদন, নিউ সেন্ট্রাল জুটমিল#
আজ দুপুরবেলা মিলে গিয়ে জানতে পারলাম, ১১ তারিখ থেকে মিলের প্রোডাকশন চালু হতে পারে। ম্যানেজিং ডিরেক্টর বি জি বিড়লা শ্রমদপ্তরে ত্রিপাক্ষিক আলোচনায় জানিয়েছেন, ১০ তারিখ পাট আসবে মিলে। তবে এসব কথায় শ্রমিকদের ভরসা নেই। না ইউনিয়ন, না কর্তৃপক্ষ, কাউকেই আর শ্রমিকেরা বিশ্বাস করতে পারছে না।
মিলের প্রধান ফটকের গায়ে লটকে দেওয়া রয়েছে কর্তৃপক্ষের ৭ জুলাইয়ের একটা নোটিশ। তাতে জানা যাচ্ছে, ৪ জুলাই জেলাশাসকের দপ্তরে একটা ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন শ্রমিকনেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং স্থানীয় বিধায়ক তথা শ্রমিকদের মনোনীত কোম্পানির অন্যতম ডিরেক্টর অশোক দেব। কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর বি জি বিড়লাও ছিলেন। আর ছিলেন সমস্ত ইউনিয়নের নেতারা। সেই সভায় স্থির হয়েছে : ১। মিলের উৎপাদন দোইনিক ৮০ মেট্রিক টনের কম হলে শ্রমিকদের বিধিবদ্ধ পাওনাগুলো বকেয়া থেকে যাবে; ২। প্রতি টন উৎপাদনের জন্য ৪২ থেকে ৪৫ জনের বেশি হ্যান্ড দেওয়া যাবে না; ৩। আগে মিলে নতুন মেশিন আসবে, তারপর পুরোনো মেশিন সরিয়ে নিয়ে বিক্রি করা হবে; ৪। শ্রমিকদের পাওনা নিয়ে কথা হবে ৮ জুলাই শ্রমদপ্তরের ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে এবং ৫। প্রথমে অ্যালবিয়ন ইউনিটে কাজ চালু হবে, তারপর লোথিয়ান ইউনিটে কাজ হবে।
জেলাশাসকের দপ্তরের সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৮ জুলাই অর্থাৎ গতকাল শ্রমদপ্তরে বৈঠক হয়েছে। সেখানে বি জি বিড়লা জানিয়েছেন, ১০ তারিখ মিলে পাট ঢুকবে, ১১ তারিখ মিলের কাজ চালু হবে এবং ১৫ তারিখ গতমাসের বকেয়া হপ্তা পেমেন্ট হবে।
সর্বনিম্ন উৎপাদন দৈনিক ৮০-৮৫ টন স্থির হয়েছে। এটা কর্তৃপক্ষের শর্ত। কিন্তু এই উৎপাদনমাত্রা রাখতে গেলে কাঁচাপাট, মেশিন এবং প্রোডাকশন হ্যান্ড কতটা কী থাকা দরকার, তার উল্লেখ ৭ জুলাইয়ের নোটিশে নেই। অতএব মিলের স্বাভাবিক কাজকর্মের ব্যাপারে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে।
Leave a Reply