আরশেদ আলম, স্পিনিং ডিপার্টমেন্ট, অ্যালবিয়ন ইউনিট, নিউ সেন্ট্রাল জুট মিল, ২৭ জুন#
অ্যালবিয়ন আর লোথিয়ান, এই দুটো মিল নিয়ে ৮০০০ লোক আছে। এর মধ্যে ২৫\% আমরা ভিতরে থাকি। দুটো মিলেই লোকে হাজিরা দিচ্ছে হাজিরাবাবুর কাছে। কাঁচামাল নেই, কিছু নেই। সুপারভাইজার কিছু কিছু লোক আছে।
২৯ মে মেশিন বিক্রি করার জন্য একটা নোটিশ ঝোলায় ম্যানেজমেন্ট। ১ জুন একটা ঝামেলা হয়েছিল। নোটিশ তোলার জন্য অ্যালবিয়ন ইউনিটে লেবার অফিসারের কাছে ডেপুটেশন দেওয়া হল। তখন কিছুটা মাল ছিল। পাঁচ ঘণ্টা মিলটা চলেছে।
এখন আমাদের কাঁচামাল আসছে না, আমরা কী করব? কাঁচামাল এলে তো আমরা প্রোডাকশনটা দেব? কাঁচামালের ওপর নির্ভর করে। পার্টসও কম আছে। অনেক পার্টস তো বিক্রি করে দিয়েছে। ওপরমহল কাঁচামাল কেন আনছে না, আমরা কী করে বলব? অনেকবার এখান থেকে মেশিন বিক্রি হয়েছে। ওরা বলল আধুনিক মেশিনটা এখানে দেব। তারপর এখানকার মেশিন চলে গেল, নতুন মেশিন আনেনি। সাত-আট বছর আগেকার কথা। তখন অন্য পার্টি মিলটা চালাচ্ছিল। এরা যখন এল, ইউনিয়ন লোকের সঙ্গে কথা বলে বলল, আমরা চাইছি ভালো প্রোডাকশনটা হোক, নতুন মেশিন লাগবে। সেইজন্য শ্রমিকেরা রাজি হল। ইউনিয়ন কীভাবে কথাটা মেনে নিল জানি না। অনেক ভাঁওতাবাজি ইউনিয়নরা দিয়েছিল। মিলে চারশো অ্যাডভান্সড মোটর আমাদের থাকত, সব কাটিয়ে নিয়ে চলে গেল। আগেও এরকম হয়েছে, তবে রাই সাহেব আর বিড়লাজি যখন থেকে এল, তখন বেশি হয়েছে। অনিল রাই আমাদের প্রেসিডেন্ট আর বিজি বিড়লা আমাদের এমডি। অনিল রাই অনেকদিন ধরে আছে। কিন্তু পার্টি চেঞ্জ হওয়ার পরে, প্রকাশ চৌরারিয়া যখন থেকে এল, এখানে ইউনিয়ন আমাদের শেষ করে দিয়েছে। সিটু, ফরওয়ার্ড ব্লক, বিএমএস, কংগ্রেস দুটো গ্রুপ আছে — রাষ্ট্রীয় চটকল মজদুর সৌগত রায় গ্রুপ, তৃণমূল দুটো গ্রুপ — একটা শোভনদেব আর একটা দোলা সেন। আমাদের মিলের ডাইরেক্টর বোর্ডে আছে অশোক দেব, আমাদের এমএলএ। আর ইউনিয়নরা নিজেদের মধ্যে কথা বলে সাত-আট মাস আগে আরও দুটো ডাইরেক্টর পাঠিয়েছে শ্রমিক-তরফ থেকে — দোলা সেনের আইএনটিটিইউসির মহেশ সিং আর ফরোয়ার্ড ব্লকের সিপাহি রাম। ইউনিয়নরা নিজেদের মধ্যে রায় করে নেবে, মজদুররা জানবেও না।
এখানকার শ্রমিক প্রত্যেকে কোনো-না-কোনো ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত আছে, এবার সব ইউনিয়নকে বাদ দিয়ে ডাইরেক্ট যাওয়া হয়েছে। এখন একটা শ্রমিক সুরক্ষা মঞ্চ হয়েছে। মঞ্চ থেকে আগেরবারে পথ অবরোধ করা হয়েছিল। তখন অনেক ঝামেলা হল। ১৮-১৯ জুন ১০ তারিখের হপ্তাটা দিয়েছে। ওটা ১৭ তারিখ দেওয়ার কথা ছিল। প্রশাসনকেও এরা বোকাচোদা বানিয়ে রেখেছে। এরপর ২৫ তারিখ যে পেমেন্ট ছিল, সেই হপ্তাটা বাকি। আমরা হাজিরা দিচ্ছি। কাঁচামাল এলে তো প্রোডাকশনটা হবে। আমরা শুনেছি যে ৩০ তারিখ পর্যন্ত সময় নিয়েছে। নাহলে আমরা আন্দোলনে নামব। ১৯ তারিখ আমরা একটা র্যালি করেছিলাম বজবজ সুভাষ উদ্যান পর্যন্ত। এসডিও-কে বলা হয়েছিল যে আপনাকে আমরা ৪৮ ঘণ্টা সময় দিচ্ছি, আপনি এটা ঠিক করুন, মিলে পাট ঢোকান। ২৪ তারিখ সেই টাইম শেষ হয়ে গেছে। এসডিও ওনার অফিসে কিছু শ্রমিককে ডেকেছিলেন। উনি বললেন, আপনারা শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখুন। আমরা মিল চালু রাখার চেষ্টা করছি। পার্টিকে আমরা ডেকেছি, সে কেন এল না আমরা শুনব, সে কী বলতে চায়। তারপর এমএলএ সাহেবকে জিজ্ঞেস করলেন তিনি, আপনি তো মিলের একজন ডাইরেক্টর। তিনি বললেন, মিল চলবে, আপনারা ঘাবড়াবেন না। কিছু নতুন পার্টিকে আমরা নিয়ে আসব। শ্রমিকরা বলল, এই পার্টি চোর আছে, একে আমরা নেব না। এই প্রকাশ চৌরারিয়াকে বাদ দিয়ে ভালো পার্টিকে নিয়ে আসুন। সরকারের ৪২\% শেয়ার আছে, শ্রমিকের ৫২\%। নতুন যে পার্টিকে দেবে, তার গ্যারান্টার হবে সরকার। হপ্তা পেমেন্টের আমি চেষ্টা করছি।
Leave a Reply