খবরে প্রকাশ ইরাকের উত্তরভাগের দখল নিয়েছে ইসলামিক স্টেট নামে এক সশস্ত্র বাহিনী। আগস্ট মাস জুড়ে তাদের অগ্রগতি অব্যাহত থেকেছে। জুমার শহর ও তার লাগোয়া তেলের খনিগুলোর দখল নেওয়ার পর তারা মিশ্র সম্প্রদায়ের বসতি সিনজার শহরও দখল করে নিয়েছে। ওইসব শহর থেকে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের খ্রিস্টান ও ইয়াজিদিরা পালাতে বাধ্য হচ্ছে। প্রায় দু-লক্ষ মানুষ শরণার্থী হিসেবে ঢুকে পড়েছে ইরাকি কুর্দিস্থানে। খবরে আরও প্রকাশ, প্রায় চল্লিশ হাজার ইয়াজিদি আটকে পড়েছে সিনজার পর্বতে। সেখানে জলের সংস্থান নেই। ওদিকে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছে ইসলামিক স্টেট-এর সশস্ত্র বাহিনী। ইরাকি পার্লামেন্টে একমাত্র ইয়াজিদি সদস্য করুণ আবেদন জানিয়েছেন, এক্ষুনি ইসলামিক স্টেট-কে নিরস্ত করা হোক। জলের অভাবে ইয়াজিদিরা মারা যাচ্ছে সিনজার পর্বতে। শিশুরা মারা যাচ্ছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলির খবরেই জানা যাচ্ছে, কেবল ইসলামিক স্টেট-এর সশস্ত্র সদস্যরা নয়, সংখ্যালঘু ইয়াজিদিদের ওপর চড়াও হয়েছে প্রতিবেশি আরবরা। এক গৃহযুদ্ধ তথা জাতিদাঙ্গার পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু খ্রিস্টান আর ইয়াজিদিরা উত্তর ইরাক থেকে বিতাড়িত হচ্ছে। ইরাকের জনগণের দুর্ভোগের বুঝি আর শেষ নেই।
ওই সংখ্যালঘুদের বাঁচানোর অজুহাতে মার্কিন ও ব্রিটিশ যৌথ বাহিনী ইসলামিক স্টেটের ঘাঁটিগুলি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হানা শুরু করেছে ৮ আগস্ট থেকে। তারা দাবি করেছে, ওই ক্ষেপণাস্ত্র হানার কারণেই ইসলামিক স্টেট-এর অবরোধ মুক্ত হয়েছে সিনজাই পর্বতের ইয়াজিদি জনগোষ্ঠী। তারা চলে গেছে কুর্দিস্থানের দিকে। প্রত্যক্ষ মার্কিন মদতে ইরাকি পার্লামেন্টে ইসলামিক স্টেট বিরোধী ঐক্যবদ্ধ সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
যদিও উত্তর ইরাকে ইসলামিক স্টেটকে বাধা দিচ্ছিল ইরাকি কুর্দিস্থানের সশস্ত্র বাহিনী, ইরাকের রাষ্ট্রীয় বাহিনী এবং অন্যান্য কিছু সশস্ত্র বাহিনী। কিন্তু তাতে নাক গলানো থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখতে পারেনি আমেরিকা, ব্রিটেন আর ফ্রান্স। তাদের যৌথ হানার মাধ্যমে ফের একবার ইরাকে যৌথ আগ্রাসন শুরু হয়ে গেল। ২০১১ সালে মার্কিন ব্রিটিশ বাহিনী ইরাক পরিত্যাগ করেছিল। কিন্তু দু-বছর কাটতে না কাটতেই গৃহযুদ্ধের ইরাকে ফের শুরু হয়ে গেল বহুজাতিক হানাদারি।
Leave a Reply