ফলতা ব্লকের দক্ষিণপূর্ব কোনায় ফলতা স্পেশাল ইকনমিক জোনের সেক্টর ওয়ান গেট আর সেক্টর ওয়ানে ফেলে দেওয়া অব্যবহৃত প্লাস্টিক থেকে রিসাইকেলড প্লাস্টিক মেটিরিয়াল তৈরির জন্য পাউডার এবং দানা তৈরির কারখানা। যার লোকমুখে চালু নাম হলো ণ্ণক্যাচরা কারখানা’।
এমনিতে কারখানা চেনা যায় তার নাম দিয়ে, এক্ষেত্রেও এই নামটাই যেন সকলের মনে একটা বিশেষ মানে তৈরি করে দেয়। কিন্তু এই এক নামেই সবাই চেনে ৯টি কারখানাকে, যেখানে প্লাস্টিক পাউডার আর দানা তৈরি হয়। একটা সময় ছিল যখন ওখানে গেলেই কাজ মিলত, আস্তে আস্তে মাগগি গণ্ডার বাজারে এমন দাঁড়িয়েছে যে গেলেও রোজ কাজ মেলে না। তবুও স্থানীয় ভাদুড়া মোড়, নৈনান মোড়, সহরারহাট মোড়ে সকালে ৫টা, দুপুরে ১টা, আর রাতে ৯টা নাগাদ দাঁড়ালে দেখা যাবে শ’য়ে শ’য়ে মেয়ে পুরুষ অটো আর সাইকেলে করে চলেছে। এদের বেশিরভাগ মেয়ে এবং এরা অটোয় গাদাগাদি করে একজনের কোলে কাঁখে আঁচলে আর দশ জন বসে, ঝুলে, দাঁড়িয়ে যে ভাবে কাজে যায়, তাতে তাদের খারাপ অবস্থাটা সবদিক থেকেই দেখা যায়। যদিও তাদের সারা সপ্তাহ সব পরিস্থিতিতে কাজ মেলে না, আর মিললেও এই গরমে সুপারভাইজার, ম্যানেজার আর কন্ট্রাক্টরের গালমন্দ খেয়ে সে কাজ করা মুখের কথা নয়।
লোকে বলে শীতে প্রচণ্ড ঠান্ডায় প্লাস্টিক কারখানার ভেতরে বসন্ত আসে। প্রচুর সহ্যশক্তি আর পেটের টানের সাথে মানসম্মান অল্পবিস্তর বা সম্পূর্ণ বিসর্জন দিয়ে, কখনো আরো কিছু বিসর্জন দিয়ে কাজ করতে হয়। আর বিভিন্ন সময়ে তা থেকে ছুটকারা পাবার রাস্তাও এরা নিজেরা নিজেদের মতো করেই তৈরি করে নেয়। যেমন, কখনো কাজ, গালমন্দ আর রোদের হাত থেকে বাঁচতে কারখানার কোনো কোণে জমা করা ক্যাচরা মালের আড়ালে বসে বিড়িতে সুখটান মারা আর সেই গাঁটরি চাপা পড়ে মারা যাওয়া, এও ঘটে। তাতে অন্যরা বুঝে উঠতে পারে না ঠিক কী করবে! আবার এই বুঝতে বুঝতেই কী করে মৃতদের পরিবারের সাথে টাকা পয়সা নিয়ে রফা হয় তাও জানা যায় না, কেউ খোঁজও রাখে না। পরিবারের ভাঙাচোরা অবস্থাটা একেবারে ভেঙে পড়ে। বাচ্চারা অনাথের মতো এদিক সেদিকে হয়ে যায়। কখনো কারখানায় এক সহকর্মীর জিনিস চুরি গেলে সেই চুরির অপবাদে অন্য বর্ণের সহকর্মীকে জুতো মুখে করে কারখানায় ঘুরতে হয়। আবার এই কারখানার ভেতরেই মন্দির থাকে, তাতে নিত্য পুজো হয় আর সেই পুজোয় রোজ গাওয়া ঘিয়ের ভোগ হয়। আর বিশ্বকর্মা পুজোয় দেদার মাল খেয়ে উদ্দাম নাচানাচি হয়, আর কাজ করতে করতে সামাজিক বিধিনিষেধ ভেঙে আলাপ খাতিরদারি হয়, কখনও সখনও ভাব ভালোবাসা হয়, বিয়ে সংসারে তা গড়ায়।
এমনিতে কারখানা চেনা যায় তার নাম দিয়ে, এক্ষেত্রেও এই নামটাই যেন সকলের মনে একটা বিশেষ মানে তৈরি করে দেয়। কিন্তু এই এক নামেই সবাই চেনে ৯টি কারখানাকে, যেখানে প্লাস্টিক পাউডার আর দানা তৈরি হয়। একটা সময় ছিল যখন ওখানে গেলেই কাজ মিলত, আস্তে আস্তে মাগগি গণ্ডার বাজারে এমন দাঁড়িয়েছে যে গেলেও রোজ কাজ মেলে না। তবুও স্থানীয় ভাদুড়া মোড়, নৈনান মোড়, সহরারহাট মোড়ে সকালে ৫টা, দুপুরে ১টা, আর রাতে ৯টা নাগাদ দাঁড়ালে দেখা যাবে শ’য়ে শ’য়ে মেয়ে পুরুষ অটো আর সাইকেলে করে চলেছে। এদের বেশিরভাগ মেয়ে এবং এরা অটোয় গাদাগাদি করে একজনের কোলে কাঁখে আঁচলে আর দশ জন বসে, ঝুলে, দাঁড়িয়ে যে ভাবে কাজে যায়, তাতে তাদের খারাপ অবস্থাটা সবদিক থেকেই দেখা যায়। যদিও তাদের সারা সপ্তাহ সব পরিস্থিতিতে কাজ মেলে না, আর মিললেও এই গরমে সুপারভাইজার, ম্যানেজার আর কন্ট্রাক্টরের গালমন্দ খেয়ে সে কাজ করা মুখের কথা নয়।
লোকে বলে শীতে প্রচণ্ড ঠান্ডায় প্লাস্টিক কারখানার ভেতরে বসন্ত আসে। প্রচুর সহ্যশক্তি আর পেটের টানের সাথে মানসম্মান অল্পবিস্তর বা সম্পূর্ণ বিসর্জন দিয়ে, কখনো আরো কিছু বিসর্জন দিয়ে কাজ করতে হয়। আর বিভিন্ন সময়ে তা থেকে ছুটকারা পাবার রাস্তাও এরা নিজেরা নিজেদের মতো করেই তৈরি করে নেয়। যেমন, কখনো কাজ, গালমন্দ আর রোদের হাত থেকে বাঁচতে কারখানার কোনো কোণে জমা করা ক্যাচরা মালের আড়ালে বসে বিড়িতে সুখটান মারা আর সেই গাঁটরি চাপা পড়ে মারা যাওয়া, এও ঘটে। তাতে অন্যরা বুঝে উঠতে পারে না ঠিক কী করবে! আবার এই বুঝতে বুঝতেই কী করে মৃতদের পরিবারের সাথে টাকা পয়সা নিয়ে রফা হয় তাও জানা যায় না, কেউ খোঁজও রাখে না। পরিবারের ভাঙাচোরা অবস্থাটা একেবারে ভেঙে পড়ে। বাচ্চারা অনাথের মতো এদিক সেদিকে হয়ে যায়। কখনো কারখানায় এক সহকর্মীর জিনিস চুরি গেলে সেই চুরির অপবাদে অন্য বর্ণের সহকর্মীকে জুতো মুখে করে কারখানায় ঘুরতে হয়। আবার এই কারখানার ভেতরেই মন্দির থাকে, তাতে নিত্য পুজো হয় আর সেই পুজোয় রোজ গাওয়া ঘিয়ের ভোগ হয়। আর বিশ্বকর্মা পুজোয় দেদার মাল খেয়ে উদ্দাম নাচানাচি হয়, আর কাজ করতে করতে সামাজিক বিধিনিষেধ ভেঙে আলাপ খাতিরদারি হয়, কখনও সখনও ভাব ভালোবাসা হয়, বিয়ে সংসারে তা গড়ায়।
গত মে মাসের ১১ তারিখে প্লাসটিকের কোম্পানী প্রোমোজোমের লেবার পেমেন্টের ডেট ছিল। তার আগে থেকেই লেবারদের রোজ বাড়ানো নিয়ে একটা কথাবার্তা চলছিল। গত বছর এপ্রিল মাসে রোজ বেড়ে যে ১৩০ টাকা হয়, তারপর থেকে আর রোজ বাড়েনি। মাস খানেক আগে একটা মিটিং হয়েছিল কন্ট্রাক্টর, স্পেশাল ইকনমিক জোনের কিছু কর্তার উপস্থিতিতে (যাদের জন্য মিটিং সেই লেবারদের বেশিরভাগ অংশ জানে না / জানতে পারে না / জানতে চায় না কারা কারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তাদের রুটি রুজির ব্যাপারে!) যেখানে রোজ বাড়ানো হবে এমন একটা সিদ্ধান্ত হয়। যদিও জোনে ইউনিয়ন আইনত নিষিদ্ধ, কিন্তু তাও বিভিন্ন সংগঠন প্রতিনিধির মাধ্যমে তাদের কথাটা বলে। মালিকপক্ষও সরাসরি শ্রমিকের সাথে কথা বলার চেয়ে এদের সাথে দরকষাকষি করা পছন্দ করে। এই মিটিঙে রোজ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হলেও তা এতদিন কার্যকর হয়নি। ১১ তারিখে সকালে লেবার পেমেন্ট শুরু হলে প্রথমে কিছু মেয়ে টাকা নেয় (যে টাকা বেড়েছে তা দিচ্ছি দেব একথা কন্ট্রাক্টররা বেশ কয়েকদিন ধরে বলে আসছিল)। কিন্তু তারপর যখন দেখা যায় ওই পুরোনো ১৩০ টাকা রেটেই টাকাটা দিচ্ছে, তখন লেবারদের মধ্যেই কেউ কেউ গিয়ে আপত্তি জানায় এবং লেবারে লেবারে মারপিট লেগে যায়। ১২ তারিখ সকালে জানা যায়, জানুয়ারি মাসে রোজ বাড়ানোর ব্যাপারে যে মিটিং হয়েছিল তাতে ১৯৪ টাকা দেবার সিদ্ধান্ত হলেও মালিকপক্ষ তা মানতে রাজি ছিল না (অদক্ষ লেবারদের ন্যূনতম মজুরি সরকার স্বীকৃত ২০৫ টাকা)। তাই স্থানীয় নেতারা বসে সিদ্ধান্ত নেয় ১৪৫ টাকা দেওয়া হবে, এবং একই সাথে সমস্ত প্লাস্টিক কারখানার লেবাররা যেটায় আপত্তি করে যে, ১৪৫ টাকার উপর ১৫ টাকা দেবে বললেও তা ই-এস-আই এবং পি-এফ হিসেবে ডেলি কাটা হবে। কারণ এখানে কোনো কাজ স্থায়ী তো নয়ই উপরন্তু টানা একই কোম্পানিতে কাজ থাকে না বলে আজ এ কোম্পানি কাল ও কোম্পানিতে ঘুরে ঘুরে কাজ, সেখানে ওই টাকা কোথাও আটকে রাখার কোনো মানে হয় না (এখানে কাজ করলে যে কন্ট্রাক্টরের আন্ডারে কাজ সে একটা কার্ড দেয় যাতে সামনের দিকে লেবারের নাম আর উপস্থিতির হিসেব ছক কাটা ঘরে টিক মারার ব্যবস্থা থাকে, পিছনে ডেভেলপমেন্ট কমিশনারের অফিসের স্ট্যাম্প সহ একজন অফিশিয়ালের নাম আর কন্ট্রাক্টরের সই থাকে)। বারো তারিখে সমস্ত প্লাস্টিক কারখানার লেবাররা একহয়ে আপত্তি জানায়, কোনো ইউনিয়নের ব্যানার ছাড়াই এমনকি ডিসি অফিসে গিয়ে অফিস স্টাফদের মারার জন্য তৈরি হয়, এবং মেয়েরা শাড়ি তুলে বলে ণ্ণআয় তোদের দিয়ে চোদাই।’ লেবারদের এই চেহারা দেখে অফিসের লোকজন পালায়। চলবে
সংবাদমন্থন প্রতিবেদন, ফলতা, ৩০ মে
Leave a Reply