সংবাদমন্থন প্রতিবেদন, কোচবিহার, ১৩ সেপ্টেম্বর#
কোচবিহার ‘আর্কাইভ অ্যান্ড ইম্পিরিয়াল লাইব্রেরি’র কর্মীরা কেউ মুদ্রা সংগ্রহ করে, কেউ কোচবিহারের প্রাচীন ইতিহাসের খুঁটিনাটি খোঁজে। নিজেরাই অর্থসাহায্য করে কোচবিহারের প্রাচীন ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে এমন দুষ্প্রাপ্য বস্তুসামগ্রীর প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করে।
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ব্যতিরেকে তারা নিজেদের উৎসাহ ও উদ্যোগের ওপর ভর করেই গত ১০-১২ সেপ্টেম্বর ইউনিভার্সিটি বিটি অ্যান্ড ইভনিং কলেজে আয়োজন করে কোচবিহারের ইতিহাসের ওপর বিশেষ প্রদর্শনীর। প্রদর্শনীর উদবোধক ছিলেন কোচবিহার জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারপতি শ্রী রবীন্দ্রনাথ সামন্ত মহাশয়। এই প্রদর্শনীতে দেখানো হয়েছে কেশব সেন কন্যা ও কোচবিহারের মহারাণী সুনীতি দেবীর সিআইএ-র হস্তলিখিত কিছু দুষ্প্রাপ্য চিঠি। ইতিহাসখ্যাত কোচবিহারের নারায়ণী মুদ্রা, কোচবিহার প্রিন্সলি স্টেটের রেভিনিউ স্ট্যাম্প, টেলিগ্রাম, দলিলাদি, নথিপত্র, সোনা ও রুপার এমব্রয়ডারি করা কোচবিহার প্রিন্সলি স্টেটের রাজদরবারি পোশাক যা তৎকালীন অসাধারণ শৈল্পিক নৈপুণ্যের স্মৃতিচিহ্ন বহন করে। এছাড়াও প্রদর্শনীতে রাখা হয়েছিল মুঘল ও সুরি যুগের কিছু দুষ্প্রাপ্য মুদ্রা, পূর্বতন প্রিন্সলি স্টেটগুলির কিছু রেভিনিউ স্ট্যাম্প, স্বাধীনতা পরবর্তী যুগের বিশেষ কিছু মুদ্রা প্রভৃতি।
কোচবিহারের অনেকেই নিজেদের ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য বস্তু দিয়ে প্রদর্শনীটিকে সার্থক করে তোলার চেষ্টা করেছে। মহারাণী সুনীতি দেবীর চিঠি ও টেলিগ্রাম দিয়েছেন শ্রী আশিস দাস, মুঘল ও সুরি মুদ্রা দিয়েছেন শ্রী বিপ্লব নাথ, রাজবস্ত্র ও রাজাদের বিভিন্ন মেডেল ও রাজপোশাকের বোতাম দিয়েছেন শ্রী অমিয়দেব বক্সী। এছাড়াও কোচবিহারের বহু নাগরিক বিভিন্ন নথি, আলোকচিত্র, বস্ত্র, শিলমোহর দিয়ে সাহায্য করেছে।
প্রদর্শনীতে উপস্থিত নন্দিতা দেবসিংহ বললেন, অসাধারণ অনুভূতি। প্রাচীন কোচবিহারের মুখোমুখি হয়ে পড়েছিলাম কয়েক ঘন্টার জন্য। দিনহাটা থেকে আগত গোপাল চন্দ্র সাহা জানালেন, আমি কোচবিহারের প্রাচীন মুদ্রা, পোশাক- পরিচ্ছদ এবং পুরোনো দলিলপত্র দেখে অভিভূত হলাম। এ ধরনের প্রদর্শনী মাঝে মাঝে হওয়া প্রয়োজন।
সংস্থার সভাপতি ঋষিকল্প পাল জানান, আমাদের উদ্দেশ্য জনমানসে পূর্বতন প্রিন্সলি স্টেট কোচবিহার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা,দুষ্প্রাপ্য পুরাবস্তুগুলি জনগণকে দেখবার সুযোগ করে দেওয়া। ইতিহাস ও পুরাতত্ত্ব চর্চায় ছাত্র ও নাগরিকদের উৎসাহ প্রদান করা, যাতে কোচবিহারের চারদিকে ছিটিয়ে থাকা অমূল্য সম্পদগুলি নাগরিকরা রক্ষা করতে এগিয়ে আসে।
Leave a Reply