• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

পুরনো ভাঙাচোরা কাঁসার বাসন ধর্মদায় এসে বদলে যায় নতুন গেলাসে

July 25, 2020 admin Leave a Comment

পর্ণব। মুড়াগাছা। ২৪ জুলাই, ২০২০। #

আশপাশের গ্রামগুলোতে খবর রটেছিল ভেবোডাঙার ঘাটে নাকি দু’লরি করোনা রোগীর মৃতদেহ ফেলে গেছে রাতের অন্ধকারে। সকালে মুড়াগাছা থেকে ধর্মদা হয়ে যাওয়ার পথে জলতেষ্টায় দাঁড়াতেই হল মরে যাওয়া প্রাচীন গড়্গড়ি নদীর ধারে বুড়িমা মন্দিরের আগে প্রাচীন জনপদটিতে। বেতেল মন্ডলের ভাটিতে বসে আনন্দ সেখ তখন গেলাসের ছাঁচ সারার কাজ করছিলেন। সুযোগ পেয়ে জিগ্যেস করছিলাম কেমন চলছে কাজকর্ম, এই লকডাউনের বাজারে।

নদিয়ার মুড়াগাছা, সাধনপাড়া ও ধর্মদা এই তিন অঞ্চল মিলিয়ে প্রায় হাজারখানেক শিল্পী কাঁসার গ্লাস তৈরির কাজে নিযুক্ত গত তিনশ বছর ধরে। শুধু গ্লাসই তৈরি করেন তাঁরা। যেমন নবদ্বীপের বাটি ও মুরাদাবাদের থালা কাঁসাশিল্পের জগতে সুখ্যাতি অর্জন করে নিয়েছে। তামা আর রাঙ মিশিয়ে তৈরি হয় কাঁসা। পৃথিবীর উৎকৃষ্টতম রাঙ আসে মালয়েশিয়া থেকে। এই আন্তর্জাতিক ব্যবসায় নেহাতই গ্রাম্য শিল্পীদের হাতযশ কতদূরই বা হতে পারে। ফলে, বেঁকে যাওয়া, ভেঙে যাওয়া, কিম্বা অভাবের তাড়নায় বেচে দেওয়া পুরনো কাঁসার বাসন গলিয়ে পুড়িয়ে এই গেলাস তৈরির কাজে যুক্ত হয়ে আছেন গরীব গুর্বো শিল্পীরা। হিন্দু মুসলিম সকলেই আছেন এই কাজে। ফলে সম্প্রীতির পরিবেশও আছে বহাল তবিয়তে। বুড়িমা মন্দিরের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ মুসলিম হলে কী হবে, তারাই দেখাশুনো করেন প্রাচীন মন্দিরের পরিবেশ।

ছয়-সাত রকমের শিল্পীর যৌথ দক্ষতায় একটি কাঁসার গ্লাস তৈরি হয়। প্রথমে আশপাশের জমি থেকে উপযুক্ত মাটি কিনে আনতে হয়। তা দিয়ে তৈরি হয় গ্লাসের প্রাথমিক ছাঁচ। তারপর একসুতো, দু’সুতো ইত্যাদি নানারকম বেধের গ্লাস তৈরির জন্য ছাঁচ ‘সারা’র কাজ চলে। অন্যদিকে মহাজনের কাছ থেকে পাওয়া পুরনো কাঁসার বাসন ভেঙে টুকরো টুকরো ক’রে নারকেলের মালাই সদৃশ মাটির খোলে হাপরের আগুন টেনে গলানো হয়। একে বলে ঢালাই। ছোট ছোট করে কাটা পুরনো বাসনের টুকরোটাকরাকে বলে ভরণ বা টোল। এতে বেশ খানেক খাদ থেকে যায় বলে দাম থাকে কেজি প্রতি ৬২০-৬৩০ টাকা। খাদ ছাড়া অরিজিনাল কাঁসার দাম পড়ে কিলোপ্রতি ১০৫০ টাকা। মহাজন এক কেজি একশ গ্রাম কাঁচামাল দিলে এক কেজি পাকা মাল অর্থাৎ কাঁসা পাওয়া যায়। ঢালাই পোড়াই এর কাজে কিছু মরতি তো হবেই, বলছিলেন গড়নদার জাফর সেখ। ছাঁচ কারা, তারপর সারা, তারপর ঢালা, তারপর ছিলা, কোঁদা, পালিশ করা – সব মিস্ত্রিদের টাকা পেমেন্টের দায়িত্ব এই জাফর সেখদের মত গড়নদারদের উপর। তারা নির্ভর করে মহাজনদের উপর। স্বভাবতই মহাজনরা উচ্চবর্ণের ভদ্রলোক। পার্টি নেতা, বড় বড় ব্যবসাদারের সাথে তাদের ওঠাবসা। তারাই যেমন দেশজুড়ে অর্ডার ধরেন, তেমনি তারাই নানা জায়গা থেকে সংগৃহীত পুরনো বাসন পাইকারি হারে কিনে নেন। বড় পুঁজির কারবার তাদের।

বেতেল মন্ডলের কারখানায় কাজের ফাঁকে।

ছাঁচ তৈরি থেকে চূড়ান্ত পালিশ প্রতিক্ষেত্রে শিল্পীদের মজুরি থাকে গ্লাস পিছু তিন টাকা থেকে আট টাকা। প্রতিটি গ্লাসের জন্য জ্বালানি হিসেবে কাঁচা কয়লার খরচ আট টাকা। আশেপাশেই বেশ কয়েকটা কয়লার গোলায় কাঁচা কয়লা বিক্রি হয় সাড়ে তের টাকা কিলো দরে। আর সমগ্র এলাকায় মহাজন আছে সাকুল্যে তিরিশ ঘর। মাটি কেনা থেকে আয়নার মত চকচকে পালিশ অবধি সমস্ত খরচ মেটানোর পর একজন গড়নদার মহাজনের কাছে প্রায় হাফ কেজি ওজনের গ্লাস পিছু দাম ধরেন তিনশ’ থেকে চারশ’ টাকা। আর কাঁচামালটা মহাজন যোগায়। কেজিতে একশ গ্রাম মত মরতির জন্য বেশি দেয় তারা।

জানতে ইচ্ছে হল, তামা আর রাঙ মেশানোর অনুপাত কি তারা জানেন না? শুধু পুরনো কাঁসা ভেঙেই কাজ করতে হয় কেন? জানা গেল, সেসব বড় বড় যন্ত্রপাতির কারবার। কাঁসা তৈরির হিসেব নিকেশ তারা জানলেও পঁয়ষট্টি থেকে সত্তর হাজার টাকা কুইন্টাল দরে বিদেশ থেকে রাঙ কিনে এনে কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি বসিয়ে কাঁসা তৈরি করে নেওয়ার সামর্থ্য তাদের নেই। বরং এই গাঁ গেরামের মানুষজন মিলেমিশে ভাগাভাগি করে যেভাবে কাজ করেন, সেই ভালো। এই যেমন লকডাউনের প্রথমদিকে গড়নদাররা অন্যান্য লেবারদের কিছু কিছু ক’রে টাকা কিম্বা চাল ডাল কিনে দিয়েছিলেন।

কথা বলতে বলতেই একজন মহাজন স্কুটিতে স্থানীয় মেম্বারকে পেছনে চাপিয়ে এসে হাজির। বেশ কিছু গ্লাসের অর্ডার দিয়ে গেলেন একজন গড়নদারকে, যিনি গ্লাসে ঢাকনায় ঠোকাঠুকির শব্দ তুলে এতক্ষণ আসল আর খাদমেশানো কাঁসার তফাৎ বোঝাচ্ছিলেন। ওদিকে বেতেল মন্ডলের ছেলে ফারুক মন্ডল মিনিস্ট্রি অফ টেক্সটাইলের আর্টিসান কার্ড নিয়ে এসে বলছিলেন, দেখেন তো পাঁচবছর হয়ে গেল এই কার্ড বানিয়ে দিয়েছে সরকার। কিন্তু সুযোগ সুবিধে তো কিছুই পাইনা।

নতুন প্রজন্ম এই কাজে আসছে? বেতেল মন্ডল, জাফর সেখ বললেন, আমাদের ঘরের ছেলেরা নাহয় জন্মে থেকে ঘরে কাজ দেখতে দেখতে শিখে ফেলেছে কিন্তু বাইরের ছেলের এই কাজ শিখতে তো কমপক্ষে বছর খানেক লাগবে, অত সময় দেবে কে? এখন তাই মাধ্যমিক পাস দিয়েই ছেলেপিলে বাইরের রাজ্যে কাজে চলে যায়। চটজলদি কাঁচা টাকা হাতে পেয়ে যায়। কে পড়ে থাকবে এই কাজের পেছনে বলুন তো?

ও হ্যাঁ। ভেবোডাঙার ঘাটে পৌঁছে দেখা গেল গঙ্গায় জল বেড়েছে বেশ। ঘাটে দাঁড়ানো টোটোচালকরা বললেন, সব গুল। দিনকয়েক আগে ওপারে পূর্বস্থলী থানার কমলনগর ঘাটে পুলিশে একটা মড়া পোড়াতে এসেছিল। ছোটখাটো একটা ঝামেলাও হয় ওপারে। তাইতে এসব রটেছে।

শিল্প ও বাণিজ্য কাঁসার গ্লাস, ক্ষুদ্র কুটীর শিল্প, ধর্মদা, মুড়াগাছা

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in