• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের বিরুদ্ধে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সংগঠিত হিংসা ফিরে দেখা : কাউখালী হত্যাকাণ্ড (১৯৮০)

April 14, 2013 admin Leave a Comment

মিঠুন চাকমা, বাংলাদেশ, ২৪ মার্চ#

পার্বত্য চট্টগ্রামে এযাবৎ সংঘটিত ডজনের অধিক গণহত্যার প্রথম গণহত্যাযজ্ঞটি শুরু করা হয়েছিলো রাঙামাটির কাউখালীতে। দিনটি ছিলো ১৯৮০ সালের ২৫ মার্চ। সেনা কর্তারা মিটিঙের নামে বিভিন্ন এলাকা থেকে কাউখালী বাজারে লোকজন জড়ো করেছিলো। যখন সবাই একত্রিত হয়, তখন তারা নির্বিচারে সমবেত লোকজনের উপর ব্রাশফায়ার করে। তারপরে সেনারা সেটলারদের লেলিয়ে দেয় নিরীহ-নিরস্ত্র জুম্ম জনগণের উপর আক্রমন করার জন্য। এই আক্রমণে ৩০০ এর অধিক খুন হয়েছিলো বলে জানা যায়। আহত হয় শত শত ।হাজারের অধিক লোকজন বিভিন্ন এলাকায় এবং এমনকি ভারতে পালিয়ে গিয়ে প্রাণ রক্ষার চেষ্টা করে। হাজার একরের অধিক জায়গা-জমি-বসতভিটে সেটলাররা জুম্ম জনগণের কাছ থেকে কেড়ে নেয়। এখন সেই কাউখালী এলাকা যা একসময় জুম্ম জনগণের ছিলো তাতে সেটলাররা জনপদ গড়ে তুলেছে।

কাউখালী হত্যাযজ্ঞ নিয়ে সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনাল অথবা এন্টি স্লেভারি সোসাইটি তৎকালীন সময়ে একটি রিপোর্ট করেছিলো। সেই রিপোর্ট একবার আমি পড়েছিলাম। এখন তা হারিয়ে ফেলেছি। কাউখালী হত্যাযজ্ঞ নিয়ে তদন্ত করার জন্য সরকারী তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছিলো বলে জানা যায়।কিন্তু সেই রিপোর্ট হয়তো করাই হয়নি অথবা তা আলোর মুখই দেখেনি।

তবে কাউখালী হত্যাযজ্ঞের পর তৎকলীন সময়ে বাংলাদেশের তিনজন সংসদ সদস্য ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। তারা ঘটানস্থল পরিদর্শনের পরে যে মন্তব্য করেন তা Life Is Not Ours বা জীবন আমাদের নয় নামে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন-এর প্রকাশিত ১৯৯১ সালের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে তাঁরা যা বলেন তা নিচে তুলে ধরছি,

১৯৮০ সালের ২৫ মার্চ পার্বত্য চট্টগ্রামের বেতবুনিয়া থানার অন্তর্গত কলমপতি ইউনিয়নের কাউখালী বাজারে সেনাবাহিনীর একটি ইউনিট যে গণহত্যা ও হিংসাত্মক কার্যকলাপ চালিয়েছে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আমরা তার প্রমাণ পেয়েছি। সদ্য আসা বসতিস্থাপনকারীরাও উপজাতীয়দের উপর হত্যা ও লুন্ঠনকাজে যোগ দিয়েছিল। এমনকি ঘটনার একমাস পরেও সমগ্র এলাকা জুড়ে সন্ত্রাসের রাজত্ব চলছে। স্থানীয় প্রশাসন ও উপজাতীয় নেতৃবৃন্দের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও উৎখাত হওয়া হতভাগ্য উপজাতীয়রা তাদের গ্রামের ধ্বংসস্তুপে ফিরে আসতে সাহস করছে না। কারণ বসতিস্থাপনকারীরা ধরপাকড়, হেনস্থা, নরহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুঠতরাজ চালিয়ে যাচ্ছে এবং হুমকি দিচ্ছে।

(সূত্রঃ পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন কর্তৃক ২০০১ সালে ‘জীবন আমাদের নয়’ পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি ও মানবাধিকার-এই শিরোনামে বাংলাভাষায় অনূদিত হয়ে প্রকাশিত চারটি আপডেটের অখন্ড সংকলন থেকে নেয়া। পৃষ্ঠা-২৮)

কাউখালী গণহত্যা নিয়ে রতন বসু ইউপিডিএফএর একযুগ পূর্তি সংকলনে একটি লেখা লিখেছেন।

লেখাটির শীরোনাম হচ্ছে-“কাউখাল হত্যাকান্ড ও আমরাঃ সংগ্রাম ও দালালী”। তার এই লেখা থেকে আমি কিছু উদ্ধৃতি শেয়ার করছি।

একদিন শত শত সেটেলার বাঙালি সেনা-পুলিশের সহযোগিতায় কাউখালী আমাদের পাড়ার দিকে আসতে থাকে। আমাদের বাড়িটা রাস্তার পাশে(অর্থাৎ কাউখালী হাসপাতালের উত্তরপাশে) বাড়ির পাশে একটা বড় বটগাছ ছিল। গরমের দিনে আমাদের পাড়াবাসী ঐ বটগাছের নীচে জড়ো হতো। আর রাস্তার নিচে হেঁটে যাওয়ার সময় লোকজন গাছের নীচে বসে খানিকটা বিশ্রাম নিয়ে আামাদের পাড়ার উত্তর দিকের রাস্তা দিয়ে চলে যেতো। পরে দেখা গেল, সেটেলার বাঙালিরা সেনা জওয়ানদের সহযোগিতায় আমাদের পাড়াবাসীর জায়গা, বাগান-বাগিচা বেদখলে নিয়ে ঘর-বাড়ি নির্মাণ শুরু করে দিয়েছে। পাড়াবাসীরা অসহায়ভাবে তাকিয়ে থাকে। যারা প্রতিবাদ করে তাদেরকে সেটেলাররা সেনাবাহিনীর বয় দেখায়। কাউখালীতে সেটেলাররা আসার পর থেকে আমাদের কারোর কোনো নিরাপত্তা ছিলো না। সেটেলার বাঙালিরা দিনে-রাতে, সময়ে-অসময়ে রাস্তা দিয়ে চলাচল করতো। বটগাছের নীচে এসে চিৎকার করতো। তাদের চিৎকারে অনেকসময় রাতে আমাদের ঘুম ভেঙে যেতো। তারা আমাদের পাড়াবাসীর ক্ষেত থেকে তরিতরকারী, ফলের গাছ থেকে ফল-মূল জোর করে নিয়ে যেতো। অনেকসময় বাড়িতে লোকজন না থাকলে ঘরে ঢুকে বাড়ির জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যেতো। একদিন আমাদের বাইজ্যা বাঁশের বাগান থেকে কয়েকজন সেটেলার বাঙালি জোরপূর্বক বাইজ্যা বাঁশ কেটে নিয়ে যায়।-পৃঃ৯৬

আমার এক দূর সম্পর্কীয় মামা ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ঘটনার দিন সেটেলার বাঙালিরা আমাদের পাড়ায় এসে প্রথমে আমাদের বাড়িটা জ্বালিয়ে দেয়। পরে সেনা জওয়ানদের সহায়তায় সেটেলার বাঙালিরা একে একে সমস্ত ঘর-বাড়ি লুটপাট করে জ্বালিয়ে দেয়। আমদের পাড়ার বৌদ্ধ বিহারটা জ্বালিয়ে দেয় সেটেলার বাঙালিরা। বিহার অধ্যক্ষ তার সাথে থাকার কারণে তিনি সেটেলার বাঙালিদের হামলার হাত থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন। বিহারের ভান্তের সাথে তিনিও সেটেলার বাঙালিদের মুখোমুখি হন এবং ভান্তে হাতের দা দিয়ে প্রতিরোধ করায় দু’জনেই প্রাণে রক্ষা পেয়েছিলেন। জীবন বাঁচাতে গৃহত্যাগী ভিক্ষুকেও সেদিন দা হাতে নিয়ে প্রতিরোধ করতে হয়েছে।-পৃঃ৯৯

এই দু’টি উদ্ধৃতি থেকেই বোঝা যায় গণহত্যার সেই দিনগুলোতে পার্বত্য জুম্ম জনগণ কেমন অস্তিত্বহীনভাবে বেঁচে ছিলেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামে এ যাবৎ যেসকল গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে তার প্রামান্য তথ্য আমাদের কাছে খুবই কম। এবং সংগতকারনেই তা কম হতে বাধ্য। কিন্তু যারা এই হত্যাকান্ডের শিকার এবং যারা এখনো এই হত্যাকান্ড-ধ্বংসযজ্ঞ থেকে কোনোমতে বেঁচেবর্তে রয়েছেন, জায়জমি-সহায়সম্পদ-আত্মীয়স্বজন হারিয়েছেন তাদের সেই স্মৃতির কথা কি আমাদের লিখে রাখার প্রয়োজন নেই? হ্যাঁ, অবশ্যই লিখে রাখা প্রয়োজন। কিন্তু কে এই কাজটি করবে?

অতিরিক্ত মন্তব্যঃ লেখাটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে শেয়ার করার পরে একজন ফেসবুক বন্ধু একটি মন্তব্য করেন। মন্তব্যের বিষয়বস্তু ছিলো, সিএইচটিতে তো অপাহাড়ি বা বাঙালি জনগণের উপরও হামলা-আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। তার জবাবে আমি যা লিখেছি তা এখানে হুবহু উদ্ধৃতি দিচ্ছি,

রাগ করার কোনো কারন নেই। পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন যেমন ঘটেছে তেমনি পাল্টা প্রতিশোধও নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে রাষ্ট্র যখন অপরাধী হয় তা খুবই গুরুতর। ধর্মমত-জাতি নির্বিশেষে রাষ্ট্র হচ্ছে জনগণের রক্ষক। পার্বত্য চট্টগ্রামে রক্ষক ভূমিকা বদল হয়ে সেই গুরুতর অপরাধই সংঘটিত হয়েছে। আমি আমার লেখায় সেই বিবরণই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। রাষ্ট্রের জাতিবিদ্বেষী ভূমিকা বা অন্য ছোটো জাতিসমূহের উপর নিবর্তনমূলক কার্যকলাপ নিয়ে আমি কথা বলার চেষ্টা করেছি। এবং এ প্রসঙ্গে বলে রাখি অপাহাড়ি হত্যার দায়ও এই রাষ্ট্রের রক্ষাকর্তাদেরই বহন করতে হবে। কারণ তাদের প্ররোচনার পাল্টা হিসেবেই এইসব সংঘটিত হয়েছে। রাষ্ট্রের এই নিপীড়ক ভূমিকার বদল ঘটানোর জন্যই আজ আমাদেরকে লড়তে হচ্ছে। এই লড়াইয়ের রূপ জাতিবিদ্বেষী-উগ্রজাত্যাভিমানী হবে না এটাই এখন এই সময়ের প্রত্যাশা। ধন্যবাদ

লেখাটি পড়ে আশাকরি পাঠকগণ পার্বত্য সমস্যা নিয়ে আরো ওয়াকিবহাল এবং সচেতন হবেন।

মানবাধিকার কাউখালী, গনহত্যা, চট্টগ্রাম, পাহাড়ি

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in