• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

পশ্চিম মেদিনীপুরের চাঁদাবিলা সংলগ্ন কুলডিহা গ্রামের বাবুই দড়ির কথা

June 29, 2014 admin Leave a Comment

শমীক সরকার ও অমিত মাহাতো, কুলডিহা, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১১ জুন#

ঘরে বসে চলে বাবুই দড়ি হাতে পাকানো। ছবি শমীক সরকারের তোলা।
ঘরে বসে চলে বাবুই দড়ি হাতে পাকানো। ছবি শমীক সরকারের তোলা।

পশ্চিম মেদিনীপুরের গোপীবল্লভপুর আর নয়াগ্রামের মাঝামাঝি একখানি গ্রাম কুলডিহা। বাসরাস্তার ধারে চাঁদাবিলা — সেখান থেকে ৩ কিমি পায়ে হেঁটে বা অন্য কোনো নিজস্ব যানবাহনে গেলে এই গ্রাম। মাঝখানে একফালি জঙ্গলের মধ্যে দিয়েও যেতে হবে। পুরোটাই মোরাম রাস্তা। সেটাও নতুন করা। তবে বেশ চওড়া। আমি আর অমিত সেখানে গেছিলাম বাবুই চাষের খোঁজ নিতে। এই চাঁদাবিলা এলাকায় পরের পর গ্রামে আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস বাবুই চাষ, বাবুই দড়ি পাকানো আর বিক্রি।\par
এখানকার ডিহি বা গ্রাম এলাকাগুলো সব জঙ্গল কেটে বানানো। এখনও দেখা যায়, জঙ্গল কেটে সাফ করে বাবুই ঘাস লাগানো হয়েছে। কদিন পরেই হয়তো সেখানে আমন ধানও লাগানো হবে। ওই একটা ফসলই এখানে হয়, অন্তত এই কুলডিহার জমিগুলিতে। বাকি সময় জমি ফাঁকাই পড়ে থাকে, যদি না কেউ বাবুই লাগিয়ে রাখে। বাবুই ঘাস লাগানোর পর কোনো খরচ নেই। বীজতলা কিনতে পাওয়া যায় হাটে, তারপর সেগুলো লাগিয়ে দিলেই হল। এক থেকে দু-বছর লাগে বাবুই ঘাস কাটবার মতো জায়গায় আসতে। কাটার পর কেজি প্রতি তিরিশ টাকা করে হাটে বিক্রি হয় ঘাস, কেউ আবার বাড়ি বয়ে এসেও নিয়ে যায়।

জঙ্গল সংলগ্ন বাবুই ঘাসের জমি। ছবি শমীক সরকারের তোলা।
জঙ্গল সংলগ্ন বাবুই ঘাসের জমি। ছবি শমীক সরকারের তোলা। ১০ জুন ২০১৪

ওই ঘাস থেকে দড়ি পাকানো হয় বাড়িতে। বাড়ির সবাই, মেয়েরা কি ছেলেরা — হাত লাগায় এই বাবুই দড়ি পাকানোয়। একবার হাত দিয়ে পাকানোর পর একটু রোদে শুকোতে দিতে হয়। পরদিন সকাল সকাল শুরু হয় দড়ি মেশিনে আরও পাকানো আর টানটান করা। মাঠের মধ্যে এক হাত তফাতে দুটো খুঁটি পুঁতে, এই রকম জোড়া খুঁটি দশ-বারো হাত অন্তর অন্তর রেখে, তার মধ্যে দিয়ে দড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। খুঁটিগুলোর পেছনে সাইকেলের চাকার মতো মেশিনে জুড়ে দিয়ে ফের একবার পাকানো হয় আগের দিন হাতে পাকানো দড়িটা, এবার পাক দেয় হাতে ঘোরানো মেশিন। তারপর সেই বাবুই দড়ি কোনো বড়ো গাছের আনুভূমিক শাখার ওপর দিয়ে টানা হয় — দড়ি থেকে আঁশ ছাড়ানোর জন্য। আঁশ ছাড়ানো দড়ি এবার বিক্রির জন্য প্রস্তুত। সেগুলোকে গোছা করা হয়, এক গোছার ওজন হয় এক কেজির মতো। তারপর সেই দড়ি নিয়ে যাওয়া হয় সোজা ৫-১০ কিলোমিটার দূরের বাবুই-এর হাটে, যা সপ্তাহে প্রতি মঙ্গলবার বসে নিবুই-তে। নিবুই কুলডিহা থেকে ৫-৬ কিলোমিটার দূরের এলাকা। মূলত হাট বসার দিন তিন চার আগে থেকেই গ্রামের প্রায় প্রত্যেক ঘরে বাবুই ঘাসের দড়ি তৈরির ধুম লাগে। তবে বৃষ্টির দিন হলে হাটে বাবুই ঘাস বা দড়ির সরবরাহ কমে যায়।

বাবুই দড়ি পাক দেওয়ার চাকা। ছবি শমীক সরকারের তোলা।
বাবুই দড়ি পাক দেওয়ার চাকা। ছবি শমীক সরকারের তোলা। ১০ জুন ২০১৪।

বাবুই দড়ির দামের রকমফের আছে। গুণমানের ওপর দড়ির দাম। মোটা দড়িগুলোর দাম ৫০ থেকে ৫৭ টাকা কেজি। সরু দড়ির দাম কেজিতে ৭০ টাকা অবধি উঠে যায়, জানালেন বাবুই দড়ি ব্যবসায়ী কালিচরণ গিরি (৭০)। কুলডিহা থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরের গঞ্জ এলাকা খড়কিয়াতে বুধবারের সাপ্তাহিক হাটে তিনি প্রতি সপ্তাহে বসেন। তিনি ব্যবসায়ী, বাবুই দড়ি কেনেন হাট ঘুরে, বাড়ি বাড়ি ঘুরে, কখনও বা বাবুই ঘাস সাপ্লাই দেন বাড়ি বাড়ি — তা থেকে দড়ি তৈরি হলে কিনে নেন। কখনও হাটেই সকালে পাইকারি কিনে দুপুরে খুচরো বিক্রি করে দেন। এবারে বাবুই ব্যবসা ভালো হয়নি তার। সাপ্লাই কম। দুর্গাপুজো থেকে এখনও অবধি ‘ মাত্র’ সাড়ে চার কুইন্টাল বাবুই দড়ি সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন কালিচরণ। বর্ষা আসছে — দড়ি রোদে শুকোনো মুশকিল, তাই বাবুই-এর কেনা বেচার মরশুম শেষ হয়ে আসছে। ফলে দড়ির এখন খুব দাম।

বাবুই দড়ি টান দেওয়ার খুঁটি। ছবি শমীক সরকারের তোলা।
বাবুই দড়ি টান দেওয়ার খুঁটি। ছবি শমীক সরকারের তোলা। ১০ জুন ২০১৪

বাবুই দড়ি এখানে হাট থেকে অনেক ব্যবসায়ী কিনে নিয়ে যায় — ওড়িশার দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলে এই দড়ির চাহিদা আছে। তিন থেকে চার বছর টিঁকে যায় এই দড়ি। আবার বাবুই দড়ি বেশ মোলায়েম। সরু দড়ি পানের বরজে কাজে লাগে। দড়ি থেকে তৈরি হয় খাটিয়া থেকে শুরু করে ব্যাগ প্রভৃতি শৌখিন জিনিস। শোনা যায়, বাবুই দড়ি মার্কিন মুলুকেও চলে যায়, দড়ির প্রতিমা নির্মাণের কাজে লাগে।

খড়িকা হাটে বিক্রি হচ্ছে বাবুই ঘাসের বোঝা। ছবি শমীক সরকারের তোলা। ১১ জুন ২০১৪
খড়িকা হাটে বিক্রি হচ্ছে বাবুই ঘাসের বোঝা। ছবি শমীক সরকারের তোলা। ১১ জুন ২০১৪

আমরা যার বাড়ি উঠেছিলাম কুলডিহাতে, সেই ঝুমুর শিল্পী অমূল্য মাহাতো জানালেন, বাড়িতে তৈরি করলে দশ কেজি বাবুই ঘাস থেকে আট সাড়ে আট কেজির বেশি দড়ি হয় না। কিন্তু যারা সুবর্ণরেখা নদীর ধারে বালিতে এই কাজ করে, তাদের দড়ির মধ্যে বালির কণা ঢুকে গিয়ে ওজন বাড়িয়ে দেয়, তাই দশ কেজি বাবুই ঘাস থেকে সাড়ে নয় কেজি অবদি দড়ি বানিয়ে ফেলে তারা।

হাটে বিকোচ্ছে বাবুই দড়ি। ছবি শমীক সরকারের তোলা।
হাটে বিকোচ্ছে বাবুই দড়ি। ছবি শমীক সরকারের তোলা।

কুলডিহা গ্রামটা ছোটো — ৫০ ঘর বসতি। প্রায় অর্ধেক অর্ধেক মাহাতো (কুর্মি) আর সাঁওতাল (আদিবাসী), এক ঘর পাত্র (তাঁতি) আর এক ঘর রানা (কামার)। যত ঘর চোখে পড়ল, সবই মাটির দোতলা। মাহাতো ঘরগুলিতে বাবুই-এর প্রসার চাক্ষুষ করলেও আদিবাসীদের মধ্যে এর প্রসার সম্পর্কে তাদের নিজেদের মুখ থেকে শোনা হল না এবারের মতো।

কৃষি ও গ্রাম আদিবাসী, কুর্মী, কুলডিহা, খড়িকা হাট, চাঁদাবিলা, নয়াগ্রাম, নিগুই হাট, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাবুই ঘাস, বাবুই চাষ, বাবুই দড়ি

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in