যতীন বাগচী, কলকাতা, ১০ সেপ্টেম্বর#
২১ আগস্ট ২০১৩ তারিখে বৃষ্টির পর কলকাতা পুরসভা ১৩১ নং ওয়ার্ড জলমুক্ত করে, সেই জল ফেলা হয় পার্শ্ববর্তী এলাকায় যা মহেশতলা পুরসভার ১২নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত। উল্লেখ্য, ওই ১৩১নং ওয়ার্ড কলকাতা পুরসভার মেয়রের নিজের এলাকা। মহেশতলা পুরসভার ওই অঞ্চলের সমস্ত রাস্তায় ও ঘরের মধ্যে জল ঢুকে যায় হঠাৎ, বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়ে এবং হকচকিয়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই টিভিতে মেয়রের ভাষণে কলকাতার জলমুক্ত হওয়ার কাহিনি শুনে বাসিন্দারা বুঝতে পারে, ব্যাপারটা এই। পর্ণশ্রী মেয়রের নিজের এলাকা — যা জলমুক্ত করার জন্য পাম্প করে সেই জল ফেলা হয়েছে মহেশতলায়। প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয় এবং শেষ পর্যন্ত পাম্প বন্ধ করতে বাধ্য হয় কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু মজার বিষয় — শুধু পর্ণশ্রীর ছাড়া জলে নয়, দু-বছর কোনো নিকাশি খাল পরিষ্কার না হওয়ার জন্য এতকাল জল জমেছে মহেশতলায়। ২৮ আগস্ট মাত্র চার ঘণ্টার বৃষ্টিতে আবার এলাকা জলে ডুবে যায়। এবার এলাকার সমস্ত বাসিন্দারা একত্রিত হয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে, বজবজ ট্যাঙ্ক রোড অবরোধ করে এবং কাউন্সিলারের বাড়ি যায়। কাউন্সিলার শ্রীমতী রাণীবালা মণ্ডল তাঁর অসহায় অবস্থা বুঝিয়ে বলেন। বাসিন্দারা বলে, আমাদের সাথে মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্যান শ্রী দুলাল দাসের বাড়িতে যেতে হবে। শ্রীমতী মণ্ডল তাতে রাজি হন। এদিকে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন থেকে রাস্তা অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ এলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয় এবং চেয়াররম্যানের বাড়ি যাওয়া হয়। সেখানে এক ব্যক্তি কিছু অশালীন কথা বলায় সবাই বিরক্ত হয় এবং চেয়ারম্যানের দেহরক্ষী তাকে জোর করে বের করে দেয়। শেষ পর্যন্ত চেয়ারম্যান সব শুনে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু অন্যায়ভাবে এক এলাকা জলমুক্ত করতে অন্য অন্য এলাকা ডুবিয়ে দেওয়ার প্রতিকারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্যান।
উল্লেখ্য, মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্যান শ্রী দুলাল দাস মহাশয় হলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র শ্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের শ্বশুরমশাই।
Leave a Reply