মহব্বৎ হোসেন, আকড়া, ১৪ আগস্ট#
মহেশতলা পুরসভার ৭নং ওয়ার্ডের সবচেয়ে দরিদ্রজনের এলাকা নয়াবস্তি। আকড়া ফটকের কাছে এই বস্তির ছেলে শেখ সুলতান প্রাণ হারাল কিছু দুষ্কৃতিকারীর হাতে। ১৫-১৬ বছরের ছেলেটি রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করত। ৬ আগস্ট সোমবার বিকেল ৫টা নাগাদ ২১নং ইটভাটার পাঁচিলে বসে গল্প করছিল সে তার বন্ধুদের সঙ্গে। হঠাৎ তার নজরে আসে বন্ধু শেখ জিয়ারুলকে মারধোর করছে কয়েকজন লোক। দেখেই সে ছুটে যায় জিয়ারুলকে বাঁচাতে। ইতিমধ্যে জিয়ারুলের টাকাপয়সা কেড়ে নিয়েছে সেই দুষ্কৃতিকারীরা। সুলতান তাদের বাধা দিতেই তারা জিয়ারুলকে ছেড়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে সুলতানের ওপর। বেধড়ক মারের চোটে সুলতান জ্ঞান হারায়। ওরা পালিয়ে যায়। সুলতানের প্রতিবেশী প্রত্যক্ষদর্শী মেহবুব আনসারি এবং আরও কয়েকজন এসে সুলতানকে নিয়ে যায় গার্ডেনরীচ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। সেখানকাররা চিকিৎসকেরা দেখে বলেন, সুলতান মারা গেছে। তাঁরা ওর ডেথ সার্টিফিকেট দেন এবং পোস্টমর্টেম করানোর নির্দেশ দেন। এই ঘটনা জানতে পেরে নয়াবস্তির হাজার খানেক মানুষ রবীন্দ্রনগর থানা ঘেরাও করে। বিক্ষোভের চাপে দুষ্কৃতি শেখ জালাল ও শেখ রাজেশকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু আর এক দাগি আসামী ভাণ্ডারি পলাতক। স্থানীয় লোকেরা বলছে, ভাণ্ডারির সঙ্গে রাজনৈতিক দল আর পুলিশের সঙ্গে ওঠাবসা।
৮ আগস্ট এপিডিআর-এর মহেশতলা-মেটিয়াব্রুজ শাখার কর্মীরা ঘটনার তদন্ত করে এসপি (দক্ষিণ ২৪ পরগনা)-র সঙ্গে দেখা করেন এবং মূল আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। তিনি সব শুনে আইসি (রবীন্দ্রনগর)-কে দোষীদের গ্রেপ্তার করে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, ইটভাটা সংলগ্ন এলাকায় জুয়ার আড্ডা এবং ছিনতাইয়ের অভিযোগ রয়েছে। সেইসবের সঙ্গেই জড়িয়ে থাকে নানা দুষ্কৃতিকারীরা। তারই বলি হল তরতাজা ছেলে শেখ সুলতান। ওর বাবা আগে ভ্যান চালাতেন। এখন বয়সের ভারে সেটাও পারেন না। তাই সুলতানই ছিল সংসারের রোজগারের ভরসা। সুলতান চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই হতদরিদ্র পরিবারটিও ঘোর অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেল।
Leave a Reply