বাবলি, কলকাতা, ১১ জুন#
আমার নাম বাবলি। আমি থাকতাম ঢাকুরিয়া বাবুবাগান রেলকলোনিতে। আমি দশ ভাই বোনদের মধ্যে ছোটো। আমার বাবা আমার যখন দু-বছর বয়স তখন আমাদের ছেড়ে চলে যায়। আমার মা আমাদের মানুষ করে অনেক কষ্ট করে। তারপর আমি যখন বড়ো হলাম, তখন আমার বয়স তেরো বছর। তখন আমার মা মারা যায় যায়। তারপর থেকে আমি কারোর কাছে ভালোবাসা পাইনি। কেন না, তখন দাদার বিয়ে হয়ে গেছে। দাদা বউদিরা কেউ আমাকে ভালো বাসতো না। আমার খুব কষ্ট হতো। আদ্ধেক দিন আমি খেতে পেতাম না। তারপর আমি আমাদের পাশে একটা বাড়ির কাজ করতাম। তারপর আমি আমার নিজের জামা কাপড় কিনে পড়তাম।
এই দেখতে দেখতে আমার পাঁচ বছর কেটে গেল। তখন আমি একজনকে ভালোবাসলাম। তার নাম রাজু। তাকে আমি দু-বছর ভালোবাসলাম। তারপর আমি ওকে আমার সব কথা বললাম। বলার পর ও আমাকে বলে, আমি তোমাকে বিয়ে করবো। আমি তখন ওকে বললাম যে তোমার মা-বাবা সব আছে। তুমি তোমার মা-বাবাকে গিয়ে আমার কথা বলো। ওরা তোমাকে কি বলে তুমি শোনো। ওর মা বাবা রাজি হলো না। কেন না ও বাড়ির বড়ো ছেলে বলে ওর মা বাবা বললো, তুই আমাদের বড়ো ছেলে, আমরা তোকে দেখে শুনে বিয়ে দেব। ও রাজি হলো না। ও বললো, আমি যদি বিয়ে করি, তাহলে ওই মেয়ে বিয়ে করবো কেন না ওর কেউ নেই। তাই আমি ওকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করব না। এই বলে সে আমায় বললো যে আমরা কালীঘাটে গিয়ে বিয়ে করবো। তখন আমাদের সব ঠিক হলো। ও তখন একটা বাড়ি ভাড়া করলো যে আমরা বিয়ে করে ওই খানে থাকবো। তার পরদিন আমাদের বিয়ে। ওর ভাই-রা সব ওর বন্ধুর মতো। ওর ভাইরা ওকে বললো, কখন যাবি বিয়ে করতে। ও বললো, আমি সন্ধ্যের সময় যাবো। তোরা কি যাবি? ওরা বললো, হ্যাঁ যাবো। দাদার বিয়ে বলে কথা। মা বাবা যায়নি বলে আমরা কি যাব না? এদিকে তো নেই আমার তো কেউ নেই, আমার সাথে ধারে শুধু আমার দুই বন্ধু ছিল, যাদের নাম ছিল ঝর্ণা আর সোমা। এইদিকে আমাদের সব ঠিক হলো। কিন্তু হঠাৎ ওর মা ওকে বলে, কি রে তুই নাকি বিয়ে করতে যাবি? ও বললো, হ্যাঁ তুমি তো আমাদের বিয়েতে রাজি হওনি। তাই আমরা বিয়ে করতে যাচ্ছি। তখন ওর মা বলে, শোন, আমি কি বলি, তোদের কালীঘাটে বিয়ে করতে হবে না। আমি তোর মাসি বাড়ি গিয়ে তোদের বিয়ে দেব, কেন না, তুই আমাদের বড়ো ছেলে, তাই এর জন্য আমরা রাজি হইনি। তারপর আমাদের মাসি বাড়িতে গিয়ে আমাদের বিয়ে হয়।
বিয়ের কয়েক মাস আমাদের খুব ভালো কাটছিল। তারপর থেকে ওর মা আমার সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করতে লাগলো। তাতে আমি খারাপ ভাবতাম না। আমি ভাবতাম যে আমার মা বলছে। কিন্তু ওরা সেটা ভাবতো না। ওর মা বোন ভাই কেউ আমাকে ভালোবাসতো না। তারপর দিনের পর দিন এইভাবে কেটে যায়। তারপর এক বছর পর আমার একটা মেয়ে হলো। তারপর আমাকে সবাই ভালোবাসতে লাগলো। এইভাবে আমার দিন কাটতে লাগলো। আমি তাতে খুব খুশি হলাম। এইভাবে আমার চোদ্দ বছর কেটে গেল। আমি বেশ ভালো ছিলাম। কিন্তু এখন আমার শ্বাশুড়ি আমার ননদ কেউ আমায় দেখতে পারে না। কেউ আমার সাথে কথা বলে না। আমার স্বামী বলেছে, কেউ না বলুক আমি তোমাকে ভালোবাসি। কারোর ভালোবাসতে হবে না। আমরা আমাদের মতো সুখে আছি।
Leave a Reply