• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

নার্সের কথা

June 7, 2014 admin Leave a Comment

শুনে লিখেছেন তমাল ভৌমিক, কলকাতা, ২৪ মে#

nurse

‘আমার নাম মলি সিংহ রায়। বাপের বাড়ির পদবি সিংহ। শ্বশুরবাড়ি রায়। আমি এই নার্সিংহোমে আগে ছ-বছর চাকরি করেছি। তারপর বিয়ে করে পাঁচ বছর গ্যাপ। আবার মাস ছয়েক হল কাজে লেগেছি।
‘আমার বাপের বাড়ি বাটানগরে। বেশ বড়ো দোতলা বাড়ি। ওইভাবে খোলামেলা থাকতে অভ্যস্ত। বিয়ে হয়ে এলাম বুড়ো শিবতলায়। দেখেশুনে বিয়ে। বেহালার সেই শ্বশুরবাড়ি খুব পুরোনো, খোপ খোপ ঘর। জয়েন্ট ফ্যামিলি। মাঝখানে উঠোন। শ্যাওলা ভরা বাথরুম। অন্ধকার সব ঘরগুলোয় দিনেও ইলেকট্রিক আলো জ্বালতে হয়। আর জলের খুব কষ্ট। অনেক জল টানতে হত — হাঁপিয়ে উঠতাম। ওই করে করেই তো আমার স্লিপ ডিস্ক হয়ে গেল।
‘বন্ধুদের কারও কারও প্রেম করে বিয়ে হয়েছে। আমার চেহারাটা তেমন কারো পছন্দ হয়নি। তাই দেখে শুনেই বিয়ে। পাত্র সরকারি চাকরি করে। তাই দেখেই বিয়ে। বিয়ের পরে আমায় চাকরি ছেড়ে দিতে বলল। আমার শ্বশুরবাড়িতে চাকরি করা বউ চলবে না। আরও অনেক নিয়ম। আমার বর বাড়ির ছোটো ছেলে। আমি ছোটো বউ। আমাকে সব জায়ের কথা মেনে চলতে হবে। আমার কোনো নিজস্ব মত নেই। এমনকী বরের সঙ্গে সিনেমা গেলেও বলে যেতে হবে। অবশ্য সিনেমাই বা কটা দেখেছি — পাঁচ বছরে তিন-চারটে।
‘আমার বর দারুণ ছেলে। বাড়ির লোক সবার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে। পাড়ার লোক — সবার জন্য হাসপাতালে গিয়ে রাত জাগবে। বিয়ের কয়েকদিন পরেই প্রতিবেশী সন্টিদার বউ এসে বলে গেছে আমাকে আমার বর সম্পর্কে, ‘সন্তুদার মতো ছেলে হয় না।’ শুধু আমার বেলায় আলাদা। কাউকে বললে বিশ্বাস করবে না। আমার যখন স্লিপ ডিস্ক হল, পিজি হাসপাতালে দেখাতে যাব। একা একা। হাসপাতালে দেখানোর কত ঝামেলা জানেন তো। কোমরে খুব যন্ত্রণা করছে। ভয় পাচ্ছি একা যেতে। বরকে বললাম সঙ্গে যেতে। বলল, ‘এইসব ছোটোখাটো ব্যাপারে অফিস কামাই করা যাবে না। তুমি একাই পারবে দ্যাখো।’ সেই থেকে একাই সব করেছি। সমস্ত ট্রিটমেন্ট — যতবার হাসপাতাল, ডাক্তারখানায় যাওয়া — সব একা। প্রায় ছ-মাস ধরে।
উত্তেজনায় সিস্টার মলির চোখের মণি চোখের পাতায় উপর নিচ ডানকোণ বাঁকোণ ছুঁয়ে ঘুরে ঘুরে মাঝখানে স্থির হয়। মলি একটা শ্বাস চেপে সোজা তাকিয়ে চোখ নামিয়ে বলে, ‘ছেড়ে চলে এসেছি। ডিভোর্সের কেস চলছে। বাপের বাড়িতে আছি। ছেলেপুলে তো হয়নি — কোনো অসুবিধা নেই। ভাই কিছু বলে না। শুধু মা বার বার বলে ‘তুই একটু মানিয়ে নিয়ে থাকতে পারলি না।’ কত মানাবো বলুন তো। ভাই কিন্তু বোঝে, বলে ‘ও বাড়ি যাবার কথা উঠলেই তোর মুখ কালি হয়ে যায়। থাক তোকে যেতে হবে না দিদি। তুই এখানেই থাক। আমাদের তো কোনো অসুবিধা নেই।’ পাড়ার লোকেরা অবশ্য একটু ট্যারা চোখে তাকায়। এখনও কেউ কিছু বলেনি, কিন্তু বিয়ে হওয়া মেয়ের বাপের বাড়িতে ফিরে আসা কেউ পছন্দ করে না।
আমি প্রশ্ন করি, ‘আপনি নার্সিংয়ের কাজে এলেন কী করে’?
মলি বলে, ‘আমার মাধ্যমিকের রেজাল্ট খারাপ ছিল না। অবশ্য আমার ভাইয়ের আরও ভালো। ও তো স্টার পেয়ে মাধ্যমিকের পরেই পলিটেকনিকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে ঢুকে গিয়েছিল। তারপর হাইডরোডে কিছুদিন একটা কোম্পানিতে চাকরির পর এখন সেকটর ফাইভে ভালো চাকরি করে। আমি ওর থেকে তিন বছরের বড়ো। আমার উচ্চমাধ্যমিক ভালো হয়নি। বাবা ইন্ডিয়ান অক্সিজেনে কাজ করত। ছাঁটাই হয়ে গেল। আমরা বেশি পয়সা খরচ করে ভালো কোচিং নিতে পারিনি, তাছাড়া আমি পড়াশুনায় সাদামাটাই ছিলাম। প্রথমে ঠাকুরপুকুর বিবেকানন্দ কলেজে ঢুকেছিলাম। পরে শরীর খারাপ হয়ে পড়ল গ্যাস্ট্রিকের জন্য। বাড়ির লোক বলল অতদূরে পড়াতে পাঠাতে পারবে না। পাড়ার কাছে বিড়লাপুর কলেজ — আমার পছন্দ না। তারপর হিস্ট্রি অনার্স পড়ার ইচ্ছা ছিল সেটাও পেলাম না। পাসে পড়লাম। অগত্যা তারপর নার্সিং ট্রেনিংয়ে ঢুকলাম। অন্য কোনো চাকরি জোগাড় করতে পারিনি তাই। না হলে নার্সিং-এর এই কাজ আমার পছন্দ নয়।
‘তাও যদি মাইনে ভালো হত। পাই তো মাসে পাঁচ হাজার টাকা। এখানে ১৭-১৮ বছর কাজ করছে এমন সিস্টারের মাইনেও ৭-৮ হাজার টাকা। নার্সিংহোমের মালিক নিজের পার্টি-পলিটিক্‌স নিয়ে এমনই ব্যস্ত যে দশ মিনিটের জন্যও রোজ নার্সিংহোমে আসতে পারে না। বছরের পর বছর পুরোনো যন্ত্রপাতি দিয়ে সবাই কাজ চালাচ্ছি। একটা ম্যানেজার রাখা আছে ওই বাবুদা — তার মাস মাইনে দশ হাজার টাকা, কিন্তু সে নিয়ে যায় ৪০ হাজার টাকা। কেউ দেখার নেই।’
সাদা স্কার্ট, হাঁটু অবধি সাদা মোজা, মাথায় সাদা স্কার্ফ, সিস্টার মলি প্রেসার মাপার যন্ত্রটা হাতে ঝুলিয়ে চলে যায়। বয়স পঁয়ত্রিশ হবে। মনটা এখনও বেশ সাদা আছে বলে মনে হয়, না হলে সদ্য আলাপ হওয়া আমার মতন একজন পেশেন্টের সঙ্গে এত কথা বলত কি?

শিল্প ও বাণিজ্য নার্স, নার্সিং হোম, মেয়েদের কথা, শ্রমজীবী, শ্রমিক, হাসপাতাল

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in