• প্রথম পাতা
  • আন্দোলন
  • কৃষি ও গ্রাম
  • খবরে দুনিয়া
  • চলতে চলতে
  • পরিবেশ
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
  • শিল্প ও বাণিজ্য
  • নাবালকথা

সংবাদমন্থন

পাতি লোকের পাতি খবর

  • আমাদের কথা
    • যোগাযোগ
  • পত্রিকার কথা
    • পাক্ষিক কাগজ
    • জানুয়ারি ২০০৯ – এপ্রিল ২০১২
  • মন্থন সাময়িকী
    • মন্থন সাময়িকী নভেম্বর ডিসেম্বর ২০১৪
    • মন্থন সাময়িকী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৪
    • সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলি
    • সাম্প্রতিক পিডিএফ
    • পুরনো সংখ্যাগুলি
  • সংবাদ সংলাপ
  • বিষয়ের আলোচনা

নাটক করতে গিয়ে কুডানকুলামের অদ্ভুত ভালো অভিজ্ঞতা

January 14, 2013 admin Leave a Comment

১৪ জানুয়ারি, সুশান্ত দাস, কলকাতা#

৩১ ডিসেম্বর ইডিন্থাকারাইতে বর্ষবরণ সভামঞ্চে লেখক
৩১ ডিসেম্বর ইডিন্থাকারাইতে বর্ষবরণ সভামঞ্চে লেখক

জীবনে কিছু খারাপ ঘটনা ঘটে ভালোর জন্য। কেন একথা দিয়ে শুরু করলাম তা লেখাটা আর একটু এগোলেই বোঝা যাবে। ৮ ডিসেম্বর সংবাদমন্থনের সম্পাদক জিতেন নন্দী আমায় ফোন করে বললেন, আগামী ৩০ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি ২০১৩ পর্যন্ত কুডানকুলামের ইডিনথাকারাই গ্রামে পরমাণবু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একটা সর্বভারতীয় সমাবেশ হতে চলেছে। তুমি যদি এই বিষয়ের ওপর একটা মুকাভিনয় করো তাহলে খুব ভালো হয়। শুনে প্রথমে একটু ইতস্তত করেছিলাম, কারণ এরকম একটা বিষয় নিয়ে কাজ করার পক্ষে সময়টা বড়োই কম। তাছাড়া কলকাতায় কিছু শো ছিল। কিন্তু কথাটা যখন আমার বন্ধু অঙ্কুরের কাছে বললাম, তখন ও বলল, ‘দ্বিতীয়বার ভাবিস না। চলে যা।’

শুরু হল নাটক নিয়ে ভাবনাচিন্তা। অনেক পরিসংখ্যান, এটা-সেটা নিয়ে আলোচনার পর অঙ্কুর একটা গল্প ঠিক করে। একটা মাছের গল্প। ঠিক হয় এই গল্পটা নিয়েই কাজ হবে। স্ক্রিপ্ট লেখা হয়। শুরু হয় রিহার্সাল এবং একই সঙ্গে চলতে থাকে কস্টিউম কেনা, প্রপ্‌স কেনা। মোটামুটি দুদিনে একটা নাটক তৈরি হল। ২৮ ডিসেম্বর পাড়ি দিলাম ইডিনথাকারাইয়ের উদ্দেশ্যে রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের ট্রেনে।

২৯ ডিসেম্বর সকালবেলা ভুবনেশ্বরে ১২ জন সদস্যের একটি পরিবার ওঠে। তারা চেন্নাই থেকে প্রায় ঘণ্টা দেড়-দুই আগে গুড়ুর স্টেশনে নেমে পড়ে। ঘটনাটা শুরু এখান থেকে। তারা যখন গুড়ুর স্টেশনে নামে তখন রাত প্রায় তিনটে। তাড়াহুড়ো করে নামার সময় তারা আমার জামাকাপড়ের ব্যাগটিও ভুল করে নামিয়ে নেয়। ওতে আমার দুটো নাটকের সমস্ত প্রপ্‌স, কস্টিউম, মেক-আপ কিট রাখা ছিল। ব্যাগটা খোয়া যাওয়ার পর মাথায় আসছিল না কী করব। সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ করি কলকাতায় শান্তনুদার সঙ্গে এবং চেন্নাইয়ের সংগঠক ভার্গবী ও লক্ষ্মীর সঙ্গে। আর একজন ছিলেন, তাঁর নাম সম্ভবত জেনি। যদিও পরে তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ হয়নি। এঁরা প্রত্যেকে আশ্বাস দেন ঘাবড়ানোর কিছু নেই। চেন্নাইয়ে যখন পৌঁছালাম, তখন প্রায় ভোর সাড়ে চারটে-পাঁচটা। শ্রীরাম নামে এক ভদ্রলোক আমায় স্টেশনে নিতে আসেন। তাঁর বাড়িতে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে সকাল ১০টার বাসে পাড়ি দিলাম তিরুনেলভেলির উদ্দেশ্যে। প্রায় সাড়ে নয় ঘণ্টার পথ। এই সাড়ে নয় ঘণ্টার মধ্যে লক্ষ্মী আমায় কয়েকবার ফোন করে খোঁজ নেন আমি ঠিক আছি কিনা এবং নাটকের জিনিসগুলোর ব্যাপারেও জিজ্ঞাসা করেন। শেষে আমায় লেনাকুমার নামে এক ভদ্রলোকের ফোন নাম্বার দেন এবং বলেন যে আমি যেন ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনিই নাটকের খোয়া যাওয়া জিনিসগুলো জোগাড় করতে আমায় সাহায্য করবেন।

যখন তিরুনেলভেলিতে নামলাম, তখন সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা। লেনাকুমার আমায় নিতে এলেন সাতটা পঁয়ত্রিশ নাগাদ। এঁর নাম আমায় বিশেষভাবে নিতে হচ্ছে, কারণ ইনি না থাকলে আমি বোধহয় নাটকটাই করতে পারতাম না। তিনি আমায় প্রথমে একটা লজে নিয়ে গিয়ে আমার প্রয়োজনীয় জিনিসের একটা লিস্ট করেন। তারপর আমায় নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। প্রায় দু-ঘণ্টার মধ্যে তিনি প্রত্যেকটা জিনিস জোগাড় করে দেন। সঙ্গে আর একজন ছিলেন, নাম গনেশন। ওঁরা দুজন আমায় রাতের খাবার খাইয়ে লজে পৌঁছে দেন।

৩১ ডিসেম্বর সকালে স্নান করে খাবার খেয়ে ন-টা নাগাদ যাত্রা শুরু করি। দুটো গাড়িতে। একটা গাড়িতে আমি, তিনজন মহিলা এবং লেনার একজন বন্ধু। উনিই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। অপর গাড়িতে লেনা এবং আরও কয়েকজন ছেলে। ইডিনথাকারাইয়ে পৌঁছালাম বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ। পৌঁছেই শুরু হয়ে গেল বাকি কস্টিউম আর প্রপ্‌স জোগাড় করা। কারণ এগুলো এখানেই পাব জানতাম। গোয়া থেকে থিয়েটার করতে আসা দুটি মেয়ে আন্দ্রিয়া ও স্টেফি আমায় সাহায্য করে ওদের কালো স্ল্যাক্স দিয়ে। পুষ্পরায়ন সাদা ধুতি আর লক্ষ্মী সাদা জামা দেন। লেনা আমায় প্রপ্‌স বানাতে সাহায্য করেন। তারপর দুপুরের খাওয়া সেরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে শুরু হল নাটকের জন্য প্রস্তুতি।

স্টেজ পেলাম রাত এগারোটার কাছাকাছি। ভয় ছিল এখানকার মানুষ কীভাবে কাজটা গ্রহণ করবে। কিন্তু শুরু থেকেই যে হাততালি পেলাম তাতে সত্যিই আমি অভিভুত। সব থেকে বড়ো পাওয়া, মহিলা ও বাচ্চারা নাটক দেখে খুবউ আনন্দ পেয়েছে এবং আমার কাজের প্রতিটা মুহূর্ত তারা বুঝতে পেরেছে। সাধারণত যখনই কোনো পারফরম্যান্স হয়, তখন আশপাশের থেকে কেউ না কেউ কথা বলে বা মোবাইল বেজে ওঠে। কিন্তু অদ্ভুতভাবে আমার পারফরম্যান্সের সময় তেমন কিছু ঘটল না। নাটক চলাকালীন শুনতে পাচ্ছিলাম ঠেউয়ের আওয়াজ। আর শেষে হাজার দেড়েক লোকের হাততালি। বিশ্বাস হচ্ছিল না যে আমি এত কঠিন একটা কাজ করে ফেললাম। আবার ভালোও লাগছিল, কারণ তাদের সামনে তাদেরই জীবনযন্ত্রণার কথা বলা সত্যিই কঠিন কাজ।

পারফরম্যান্সের শেষে ডাঃ বিনায়ক সেন স্টেজে এসে আমায় জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘খুব ভালো হয়েছে’। এস পি উদয়কুমার বললেন, ‘একদম এখানকার জীবন মেলে ধরেছ’। প্রত্যেক সংগঠক যেভাবে আমায় অভিনন্দন জানিয়েছে, এগুলো বিরাট পাওনা।

রাত দেড়টার সময় মোমবাতি জ্বালিয়ে আমরা সকলে গেলাম নতুন বছর উদ্‌যাপন করতে। সারারাত ধরে চলল নাচ-গান। ভোর চারটে নাগাদ লেনার ছেলে শিবি ও রাজারাজন আমায় পাশের একটা বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে বাকি রাতটা কাটিয়ে পরদিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি আবার চেন্নাইয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করি। আমার ফেরার ট্রেন ছিল ৩ তারিখ। সেই মুহূর্ত পর্যন্ত আমি ওদের সাহায্য ও সান্নিধ্য পেয়েছি।

শুরুতেই বলেছিলাম, কিছু খারাপ ঘটনা ঘটে ভালোর জন্য। সত্যি সেদিন রাতে আমার ব্যাগটা খোয়া না গেলে আমার এই কদিনের অভিজ্ঞতা আর এত মানুষের এত আন্তরিকতা ও সম্মান পাওয়া হত না।

সবশেষে বলি, ফেরার পথে তিরুনেলভেলির বাসস্ট্যান্ডে একটা ফোন আসে হরিপুরের দেবাশিস শ্যামলের মোবাইল ফোনে। ফোনটা এসেছিল উড়িষ্যার জাজপুর থেকে, ভদ্রলোকের নাম রাজেশ। তিনি বলেন যে ওঁর আত্মীয়রা ভুলবশত তাদের জিনিসের সঙ্গে আমার ব্যাগটিও নামিয়ে নিয়েছিল। এটাও এক অদ্ভুত ঘটনা। যদিও ব্যাগটা জাজপুর থেকে এখনও ফেরত আনা হয়নি।

সংস্কৃতি কুডানকুলাম পরমাণু প্রকল্প, কুডানকুলামে, নাটক

এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন এই প্রতিবেদনটি প্রিন্ট করুন

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুসন্ধান করুন

সংবাদ মন্থন

  • ছিটমহল
  • মাতৃভূমি লোকাল

খবরের মাসিক সূচী

মেটা

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org

সাম্প্রতিক মন্তব্য

  • TG Roy on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প
  • Subrata Ghosh on স্বনির্ভরতায় উজ্জ্বল ‘শিশু কিশোর বিকাশ মেলা’
  • সুমিত চক্রবর্তী on ‘গুণগত মেশিন একটা মানুষকে মানসিক রোগী বানিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিচ্ছে’
  • তীর্থরাজ ত্রিবেদী on লোককবি গুরুদাস পালের আত্মজীবনী : জীবন ও শিল্প

ফোরাম

  • আড্ডা
  • বিষয়ের আলোচনা
  • সংবাদ সংলাপ
  • সাংগঠনিক আলাপ

লে-আউট সহায়তা

সংবাদমন্থন প্রিন্ট >>
 
নমুনা ল্যাটেক>>

songbadmanthanweb [at the rate] gmail.com · যোগাযোগ · দায়দায়িত্ব · Log in