শ্রীমান চক্রবর্তী, নতিডাঙা, ৮ সেপ্টেম্বর#
নদিয়া জেলার মুর্শিদাবাদ সীমান্ত এলাকা এবং একইসাথে বাংলাদেশ সীমান্তের থেকে ২০-২৫ কিমি দূরের এলাকা নাজিরপুর। এখানকার থানারপাড়া অঞ্চলের অন্তর্গত নতিডাঙ্গা-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার হসপিটাল মোড় থেকে পাড়দিয়াড় বোহালমারি পর্যন্ত ২ কিমি রাস্তার অবস্থা গত প্রায় তিন দশক থেকেই বেহাল। রাস্তাটি এই অঞ্চল থেকে মুর্শিদাবাদ জেলার সাথে সড়কপথে সংযোগ রাখার একমাত্র পথ। গত দু-বার ধরে এই গ্রাম পঞ্চায়েত কংগ্রেস দলটির দখলে। তার আগে এটা ছিল সিপিএম-এর দখলে। সে সময় গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হলেও, গত দেড় দশকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, কয়েক বছর আগে রাস্তার জন্য ৫ লক্ষ টাকা ইট ফেলার জন্য এলেও, তা আর রাস্তায় পড়েনি। তা গেছে প্রধানের কাছে। আর নরম কিছু ইটের টুকরো ফেলা হয়েছে রাস্তায়, যা কোনো কাজেই দেয়নি। বর্তমানে এই অঞ্চলের বিধায়ক শ্রী সমরেন্দ্রনাথ ঘোষ (বামফ্রন্ট) এবং সাংসদ শ্রী মান্নান হোসেন (কংগ্রেস) -এর কাছে দরবার করেও কিছু সুরাহা মেলেনি। এলাকাবাসীদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি ক্রমশই বেড়ে চলেছে। সাইকেল, ভ্যান, পায়ে হাঁটা বা ছোটো মোটরগাড়ি — কোনো কিছু নিয়েই এই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করা যায় না। এলাকাবাসীর আরও অভিযোগ, প্রত্যেকবার ভোটের আগে নেতারা আসেন প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি নিয়ে, আর রাস্তা সারাইয়ের কথা বলে যান। অথচ ভোট ফুরোলেই সবকিছু শেষ। তখন নেতারা টাকার ভাগ নিতে আসেন রাতের অন্ধকারে।
সমগ্র রাস্তাটিতে পদে পদে এক থেকে দেড় ফুটের গর্ত এবং সেগুলি লম্বা বা চওড়ায় ৫-৬ ফুট থেকে ১০-১২ ফুটও আছে। আমি নিজে এই সম্পূর্ণ রাস্তাটি বাইকের পিছনে বসে যেতে গিয়ে দেখেছি, প্রায় প্রাণ হাতে নিয়েই চলতে হয়। বয়স্ক বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েদের অনেকেই এই পথ দিয়েই স্কুলে যাতায়াত করছে প্রাণ হাতে নিয়ে। এলাকার বিভিন্ন স্কুলের মাস্টারমশাইরা সম্প্রতি বেশ কয়েকবার পঞ্চায়েত, বিডিও, এসডিও-র কাছে আবেদন জানিয়েছে, কোনো লাভ হয়নি। নবগঠিত জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে পুজোর আগে রাস্তাটি সরেজমিনে দেখতে আসার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
কৃষ্ণনগর থেকে করিমপুর যাওয়ার রাস্তাটিও ভেঙেচুরে বেহাল
নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর থেকে করিমপুর যাওয়ার প্রধান সড়কপথটিও (এই রাস্তাতেই নাজিরপুর) ভেঙেচুরে বেহাল। হাজার হাজার মানুষের প্রতিদিনের চলাচলের একমাত্র সড়ক পথটির এই বেহাল অবস্থার কারণে প্রায়শই ঘটছে দুর্ঘটনা। তেহট্ট, বড়ো আন্দুলিয়া, বেতাই, নাজিরপুর, করিমপুর পর্যন্ত সমগ্র রাস্তাটিতেই গর্ত বা রাস্তার ওপরের চাকলা উঠে গেছে। এই সড়কপথে বাসগুলিতে যেতে যাত্রীদের নাকাল হতে হচ্ছে। সাইকেল আরোহীরাও দুর্ঘটনায় পড়ছে খানা-খন্দ পাশ কাটাতে। এত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটির বেহাল অবস্থা সত্ত্বেও প্রশাসনের কোনো হেলদোল নেই।
Leave a Reply