২৪ সেপ্টেম্বর, সুধাংশু মণ্ডল#
আমি দশ দিন আগে বাড়ি গিয়েছিলাম। রামগঙ্গা নদী পেরিয়ে পাথরপ্রতিমা ব্লকের কামদেবপুরে আমাদের ঘর। পাশেই শিবাই নদী। আমাদের চারপাশে আরও অনেকগুলো নদী আছে। এখানে কাজ থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি যেতে হল চাষের জন্য। আমরা দুই ভাই। চাষের কাজটা আমাকেই দেখতে হয়। সামান্য জমি, আর কিছুটা বন্ধক নিয়ে আমনের চাষ করি। এবছর ধান ভালোই হয়েছে। তবে আর একটা বৃষ্টি দরকার। এখন না হলেও কালিপুজোর আগেও যদি হয় তো চলে যাবে। নাহলে পাম্পসেট ভাড়া নিয়ে জলের ব্যবস্থা করতে হবে। বিঘেতে ১২ বস্তা মতো ধান হচ্ছে এখন। হাই-ইল্ডিং বীজ কিনেছি। সার, বিষ সব নিয়ে বিঘেতে হাজার তিনেক টাকা খরচ। আমাদের ধান যা হয়, খোরাকিতেই লেগে যায়। যারা বেচে, পাঁচশো টাকা বস্তা, আমাদের ওখানে ৫৬ কেজির বস্তা। এছাড়া এই বর্ষার সময় নিজেদের খাওয়ার মতো ঢেঁড়শ, বেগুন, ঝিঙে, পেঁপে, চিচিঙ্গার মতো কিছু সবজি হয়। আলুও হয়েছে। আমাদের মাটির ঘর, চৌকির তলায় রেখে দিলে অনেকদিন চলে যায়। জৈব সারটা একটু বেশি দিই, নাহলে পচে যাওয়ার ভয় থাকে। আমাদের ঘরে গরু-ছাগল এখনও কিছু আছে। যা চাষ হয় তাতে সারা বছর চলে না। মাঘ ফাল্গুন চৈত্র বৈশাখ এই চার মাস সবজি কিনে খেতে হয়। ওইসময় রোদের তাপ এত বেড়ে যায়, মাটিতে নোনা এসে যায়, ফলন হয় না। নোনার জন্য আমরা বোরো ধানের চাষটাও করি না। ওইসময় জমি পড়ে থাকে, কিছুই লাগানো যায় না।
সবজির মধ্যে পটল একদমই হয় না। পেঁয়াজ সামান্য কিছু হয়। আলু পেঁয়াজ আর বাইরে থেকে আসা সবজির দাম খুব চড়া, কলকাতার মতোই। তবে স্থানীয় কাঁচা সবজির দাম এখন বেশ সস্তা।
আমাদের গ্রামে দুর্গাপুজো একটাই হয়। ঘরের পাশেই একটা লক্ষ্মীপুজো হয়। এখন আর বাড়ি যাব না। সেই লক্ষ্মীপুজোর সময় যাব। গ্রামে সবচেয়ে বেশি হয় মনসা পুজো, প্রায় প্রত্যেকটা গাঁটে গাঁটে একটা করে পুজো হয়। ইদানীং একটা নতুন জগদ্ধাত্রী পুজো হচ্ছে।
Leave a Reply